এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,০৯ ডিসেম্বর : বাংলাদেশের যুবকের সাথে ফেসবুকে পরিচয় ও প্রেম হয় বর্ধমান জেলার এক তরুনীর । বিয়েও করেন তারা ৷ কিন্তু বিয়ের পর আচমকা উধাও হয়ে যায় প্রেমিক । প্রেমিককে ফিরে পেতে বাংলাদেশে ছুটে যান প্রেমিকা । কিন্তু প্রেমিক লুকিয়ে থাকায় এবং শ্বশুরবাড়ি প্রথমে সম্পর্ক মেনে না নেওয়ায় ফের ভারতে ফিরে আসেন তরুনী । কিন্তু প্রেমিককে ফিরে পেতে ফের তিনি পাড়ি জমান বাংলাদেশে । এবারে সাহায্য নেন বাংলাদেশের প্রশাসনের । শেষ পর্যন্ত প্রশাসনের হস্তক্ষেপে প্রেমিকের বাড়িতে জায়গা করে নিলেন বর্ধমান জেলার অম্বিকা কালনার ‘নাছোড়’ তরুনী রিয়া বালা ।
বাংলাদেশের মিডিয়া রিপোর্টে জানা গেছে, বাংলাদেশের পঞ্চগড় জেলার তেতুলিয়া উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের শিবচন্ডি এলাকার যুবক বিটু রায়ের সঙ্গে কয়েক মাস আগে ফেসবুকে পরিচয় হয়েছিল অম্বিকা কালনার তরুনী রিয়া বালার । ক্রমে দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । চলতি বছরের অক্টোবর মাসে বিটু তার প্রেমিকার সাথে দেখা করতে ভারতে আসেন । জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জে পিসির বাড়িতে প্রেমিকাকে নিয়ে তোলেন বিটু । সেখানেই প্রেমিকা রিয়া বালাকে একটি মন্দিরে নিয়ে গিয়ে বিয়ে করেন তিনি । কিন্তু বিয়ের পর কয়েকদিন রাজগঞ্জে কাটিয়ে তিনি ফের বাংলাদেশে ফিরে যান । তারপর থেকে স্বামীর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় রিয়ার ।
জানা গেছে,পরে ২৯ নভেম্বর স্বামীকে খুঁজতে পঞ্চগড়ে পাড়ি দেন রিয়া ৷ চারদিন স্বামীর বাড়িতে কাটান তিনি । তখন বিটুর পরিবারের লোকজন রিয়াকে মেনে নেয়নি । ফলে হতাশ হয়ে গত ২ ডিসেম্বর ফের অম্বিকা কালনায় ফিরে আসে রিয়া । কিন্তু দিন কয়েক কালনায় কাটিয়ে স্বামীর টানে ফের ৬ ডিসেম্বর তিনি বাংলাদেশে পাড়ি জমান । প্রথমে তিনি বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনে গিয়ে ওঠেন । কিন্তু বিটু বা তার পরিবারের লোকজন ইমিগ্রেশন অফিসে এসে তাকে নিয়ে না গেলে তিনি স্থানীয় প্রশাসনের দ্বারস্থ হন । এদিকে বিটুও কোথায় আত্মগোপন করে থাকেন । কিন্তু বিষয়টি নিয়ে এলাকায় তোলপাড় শুরু করে প্রকাশ্যে আসেন বিটু । শেষে প্রশাসনের হস্তক্ষেপে ৭ ডিসেম্বর পঞ্চগড় রেজিস্ট্রি অফিসে বিটুর সাথে রেজিস্ট্রি ম্যারেজ হয় রিয়ার । উপস্থিত ছিল বিটুর বাড়ির লোকজনও ।
বিটুর বাবা অখিল চন্দ্র রায় সেদেশের সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেন,’প্রশাসন বউমাকে আমাদের হাতে তুলে দিয়েছে । আপনারা সবাই আমার ছেলে বউমার জন্য দোয়া করবেন ।’ তেতুলিয়া থানার ওসি আবু সঈদ চৌধুরী বলেন, ‘ছেলের পক্ষ থেকে তার বাবা ও ভাই এসে মেয়েটিকে স্বীকৃতি দেবে বলে থানায় এসে অঙ্গীকার করেন এবং তারা মেয়েটিকে নিয়ে চলে গেছেন ।’
জানা গেছে,বিটু রায় ঢাকার একটা অফিসে শ্রমিকের কাজ করতেন । সম্প্রতি তিনি সেই কাজ ছেড়ে দেন । বর্তমানে তিনি বেকার । কিন্তু স্ত্রী চলে আসায় এখন তিনি হন্যে হয়ে কাজ খুঁজছেন । এদিকে শ্বশুরবাড়িতে আসার পর সাংবাদিকের ক্যামেরার সামনে খুব খুশি দেখাচ্ছিল রিয়াকে । বাড়িতে প্রতিদিন প্রচুর লোকজন ছুটে আসছে নববধূকে দেখার জন্য ।
দেবনগড় ইউনিয়নের ইউপি সদস্য একে এম তৈয়েব আবু বলেন,’প্রেম এমনই জিনিস ! প্রেমের টানে মেয়েটা সব কিছু ছেড়ে দিয়ে বাংলাদেশ চলে এল,বিয়ে করল ।’ পাশাপাশি তিনি জানান,’পাশেই আমার বাড়ি । আমি লক্ষ্য রাখবো ।’।