এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেল আবিব,০৬ ডিসেম্বর : বিশ্বজুড়ে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষরা সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসকে যতই ‘স্বাধীনতা সংগ্রামী’র তকমা দিক না কেন,কিন্তু বর্বরতায় কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী সংগঠন ইসলামি স্টেটকেও ছাপিয়ে গেছে ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি । তার প্রমান ক্রমশ প্রকাশ্যে আসছে । গত ৭ অক্টোবরের নৃশংস হামলার তদন্তে নিয়োজিত ইসরায়েলি তদন্তকারীরা প্রমাণ পেয়েছেন যে হামাস এবং ইসলামিক জিহাদ আক্রমণকারীদের হাতে শুধু মহিলারাই নয়,বরঞ্চ পুরুষরাও যৌন সহিংসতা ও ধর্ষণের শিকার হয়েছেন ।
ইসরায়েলের সারভাইভারস অফ সেক্সুয়াল ভায়োলেন্স অ্যাডভোকেসি গ্রুপের একজন মুখপাত্র ইয়ায়েল শেরার বিবিসি রেডিও-৪ কে বলেছেন, হামলার মধ্যে উভয় লিঙ্গের বিরুদ্ধে যৌন সহিংসতার শারীরিক প্রমাণের পাশাপাশি প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ রয়েছে । দক্ষিণ ইসরায়েলের সঙ্গীতানুষ্ঠানে হামাসের দ্বারা যৌন সহিংসতা এবং ধর্ষণের শিকার কিছু মানুষ জীবিত বেঁচে আছে…শুধু মহিলা নয়…উভয় লিঙ্গের। এটি শুধুমাত্র মহিলাদের ক্ষেত্রেই ঘটেনি, এটি পুরুষদের ক্ষেত্রেও ঘটেছিল ।’ তিনি আরো বলেন,’যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের অনেকের লাশ বিকৃত করা হয়েছে… সন্ত্রাসীদের দ্বারা মৃতদেহের অসম্মান(ধর্ষণ)করার বিষয়টির প্রমাণ পাওয়া গেছে ।’
ইয়োনি সাদন(৩৯) নামে এক ইসরায়েলি, যিনি মৃতদেহের নীচে লুকিয়ে নোভা সঙ্গীত উৎসবে হামলা থেকে বেঁচে গিয়েছিলেন, এই সপ্তাহান্তে তিনি ক্যাম্পগ্রাউন্ডে মহিলাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত যৌন সহিংসতার একটি হতাশাজনক বিবরণ দিয়েছেন ৷
একটি ভয়ঙ্কর চিত্র তিনি বর্ণনা করেছেন যে মুহুর্তটি হল এক মহিলার শিরচ্ছেদ করে চুল ধরে মাথাটি রাস্তার উপরব ঘোরানো হয়েছিল, নগ্ন হতে অস্বীকার করার জন্য তাকে শিরশ্ছেদ করার পরে…।
ঘণ্টাখানেক পর শিফট ম্যানেজার বাইরে উঁকি দিলেন। আমি একজন দেবদূতের চেহারার এই সুন্দরী মহিলাকে দেখেছি এবং আট-দশজন সন্ত্রাসী তাকে মারধর ও ধর্ষণ করছে । মহিলাটি চিৎকার করে বলছিল, ‘এটি বন্ধ করুন’ এবং তাকে তার দুর্দশা থেকে বের করে আনতে তাকে হত্যা করার জন্য সন্ত্রাসীদের কাছে অনুরোধ করেছিলেন ।
তখন হামাসের সন্ত্রাসীরা হাসতে হাসতে তার মাথায় গুলি করে মেরে ফেলে ।’
চার সন্তানের অবিভাবক ইয়োনির জন্য ভয়াবহতা শেষ হয়নি কারণ, ঝোপের মধ্যে লুকিয়ে তিনি আরও দুই হামাস সন্ত্রাসীকে একজন মহিলাকে ধরতে দেখেছিলেন। ইয়োনি বলেন ‘মহিলার বাবা পাল্টা লড়াই করছিল এবং সন্ত্রাসীদের তাকে অপহরণ করতে দেয়নি । সন্ত্রাসীরা তাকে মাটিতে ফেলে দেয় এবং সন্ত্রাসীদের মধ্যে একজন একটি বেলচা নিয়ে তার শিরশ্ছেদ করে এবং তার মাথা মাটিতে গড়িয়ে পড়ে। আমি সেই মাথাটাও দেখছি ।’
মৃতদেহের অবশিষ্টাংশ সংগ্রহকারী জাকার একটি বিশেষ ইউনিটের কমান্ডার হাইম আউটমেজগিন বলেছেন,‘আমরা উৎসবের স্থান এবং কিবুতজিম থেকে দশ দিনে এক হাজার লাশ সংগ্রহ করেছি। আমাদের চেয়ে বেশি কেউ দেখেনি ।’ তিনি আরও বলেন,’এটা পরিষ্কার যে তারা যতটা সম্ভব আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করছিল — খুন করা, জীবন্ত পুড়িয়ে ফেলা, ধর্ষণ করা… মনে হচ্ছে তাদের মিশন ছিল যতটা সম্ভব ধর্ষণ করা ।’
লাহাভ ৪৪৩ ফৌজদারি তদন্ত ইউনিটের প্রধান ডেভিড কাটজ তদন্তাধীন মামলার সংখ্যার সুনির্দিষ্ট পরিসংখ্যান দেননি, তবে বলেছেন যে তদন্ত শেষ করতে ‘ছয় থেকে আট মাস’ সময় লাগতে পারে ।।