প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৮ মে : কোভিড ভাইরাসের সংক্রমণ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে এবার স্বাস্থ্য দপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করবেন গ্রামীন চিকিৎসকরা । এর জন্যে পূর্ব বর্ধমান জেলায় শুরু হয়েছে গ্রামীন ডাক্তারদের প্রশিক্ষণ দেওয়া। মঙ্গলবার থেকে জেলার জামালপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শুরু হয়েছে দুই দিনের প্রশিক্ষণ শিবির ।এদিন বিএমওএইচ ঋত্বিক ঘোষ সহ অন্য চিকিৎসক ও মেডিকেল অফিসাররা শতাধিক গ্রামীণ চিকিৎসককে প্রশিক্ষণ দেন । প্রশিক্ষণ নিয়েই চিকিৎসকরা কোভিডের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে পড়ার অঙ্গিকার করলেন ।
রাজ্যের অন্যান জেলার পাশাপাশি পূর্ব বর্ধমান জেলাতেও আছড়ে পড়েছে কোভিড সংক্রমণের দ্বিতীয় ঢেউ । প্রতিদিনই জেলায় কোভিড আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে চলেছে । পাল্লা দিয়ে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটছে । গত ১৫ এপ্রিল জেলায় ২০২ জনের করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে । ওই দিন পর্যন্ত জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১৩২২৪। তার পর থেকে পরবর্তী ৩২দিনে অর্থাৎ ১৭ মে পর্যন্ত জেলায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৮৪৪১ জন । স্বাস্থ্য দপ্তরের দেওয়া এই তথ্য থেকেই পরিস্কার হয়ে গিয়েছে গত ৩২দিনে জেলায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৫২১৭ জন।অপর দিকে ১৫ এপ্রিল প্রর্যন্ত জেলায় কোভিডে মৃতের সংখ্যা ছিল ১৮০ জন । ১৭ মে সেই মৃতর সংখ্যা পৌছেচে ২৬১ জনে । অর্থাৎ গত ৩৩ দিনে কোভিডে আক্রান্ত হয়ে জেলায় ৮১ জনের মৃত্যু হয়েছে। স্বাস্থ্য দপ্তরের এই রিপোর্ট-ই ভাবিয়ে তোলে জেলা প্রশাসনকে। তার পরেই জেলার গ্রামীণ এলাকায় কোভিড সংক্রমণ প্রতিরোধ ও সচেতনতা বৃদ্ধিতে গ্রামীণ ডাক্তারদের কাজে লাগানোর ব্যাপারে স্বাস্থ্য দপ্তর উদ্যোগী হয় বলে জানা গিয়েছে ।
কোভিড সংক্রমণ মহামারীর চেহারা নিলেও গ্রামীণ এলাকার মানুষজন এখনও কোভিড সংক্রমণের বিষয়ে সেই ভাবে সচেতন নন।সংক্রমণের লক্ষণ থাকলেও অজ্ঞতার কারণে চিকিৎসা করার ব্যাপারেও অবহেলা করেন গ্রামীণ এলাকার মানুষজন।তাই এবার থেকে গ্রামে গ্রামে কোভিড সচেতনতা বৃদ্ধির কাজে গ্রামীন ডাক্তাররা সামিল হবেন বলে জামালপুর হাসপাতালের বিএমওএইচ ঋত্বিক ঘোষ এদিন জানান । তিনি বলেন ,জামালপুর ব্লকে ৩৮৪ জন গ্রামীন ডাক্তার রয়েছেন । তাঁদের জন্যই দুই দিনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে ।ঋত্বিক বাবু বলেন, “প্রত্যন্ত গ্রামীণ এলাকার মানুষজন গ্রামীন ডাক্তারের কাছে চিকিৎসা করাতে যান ।ওই গ্রামীণ ডাক্তাররা কোনও রোগীর মধ্যে কোভিড সংক্রমণের লক্ষণ দেখলে তার ব্যাপারে হাসপাতালে জানাবেন। হাসপাতালের চিকিৎসকরা ওই ব্যক্তির কোভিড চিকিৎসা বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন ।এ ছাড়াও গ্রামীণ এলাকার মানুষজনকে কোভিড সংক্রমন বিষয়ে গ্রামীন ডাক্তাররা কিভাবে সচেতনত করবেন সেই বিষয়েও প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে ।’
জামালপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মেহেমুদ খাঁন এই বিষয়ে বলেন, করোনার থাবা থেকে বাংলার মানুষকে বাঁচানোই এখন রাজ্য সরকারের প্রধান লক্ষ । সেই কাজে গ্রামীণ ডাক্তারদেরও এবার নিয়োগ করা হল । সকলের প্রচেষ্টাতেই জামালপুর সহ গোটা বাংলা করোনা মুক্ত হবে,এই প্রত্যাশাই তাঁরা রাখছেন ।।