জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,দুর্গাপুর(পশ্চিম বর্ধমান), ০২ ডিসেম্বর : দুর্গাপুরের সুপরিচিত চিকিৎসক তথা বিশিষ্ট সমাজসেবী দম্পতি ডাঃ উদয়ন চৌধুরী ও ডাঃ কবিতা চৌধুরীর হাত ধরে নারীদের জন্য গড়ে উঠেছে ‘উত্তিষ্ঠত জাগ্রত জাগো নারী’ নামক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ২০২২ সালের ১০ ই নভেম্বর ডাক্তার দম্পতির একমাত্র কন্যা অনুস্মিতার এগারোতম জন্মদিনে দিনের আলোর মুখ দেখে তাদের নতুন প্রকল্প ‘ছোঁয়া’। উদ্দেশ্য বিভিন্ন বিষয়ে সুপ্ত প্রতিভা থাকা সত্ত্বেও যেসব শিশু আর্থিক কারণে নিজেদের প্রতিভা বিকাশের সুযোগ পায়না তাদের দিকে স্নেহের ছোঁয়া দেওয়া।
ঠিক হয় সংস্থার পক্ষ থেকে এইসব প্রতিভাবান শিশুদের সম্পূর্ণ বিনা খরচে পড়াশোনা, অঙ্কন, নৃত্য, সঙ্গীত ইত্যাদি শেখানোর সঙ্গে সঙ্গে বিনা খরচে শিক্ষা সামগ্রী দেওয়া হবে। লক্ষ্য পূরণের লক্ষ্যে আসানসোল ও দুর্গাপুর মিলিয়ে মোট ৪ টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়।
এলাকাবাসীদের অনুরোধে পয়লা ডিসেম্বর ‘উত্তিষ্ঠত জাগ্রত জাগো নারী’ সংস্থার হাত ধরে দুর্গাপুরের মুচিপাড়ার শিবাজী পার্ক এলাকার ক্লাব ঘরে প্রায় ৪০টি শিশুকে নিয়ে শুরু হলো ‘ছোঁয়া’র নতুন শিক্ষা ইউনিট। বাচ্চাগুলি মূলত প্রথম থেকে নবম শ্রেণির ছাত্রছাত্রী। নতুন শিক্ষা ইউনিটে পড়াশোনার সুযোগ পেয়ে বাচ্চাগুলি যেমন খুশি, তেমনি খুশি তাদের অভিভাবকরা। ‘ওঁরা তো মানুষ নন, দেবতা। তাইতো আমাদের মত গরীব ঘরের ছেলেমেয়েদের কথা উনারা ভাবেন’- এভাবেই ডাক্তার দম্পতি সম্পর্কে নিজেদের মতামত প্রকাশ করলেন অভিভাবকরা।
শিশুদের শিক্ষাদানের জন্য মুচিপাড়ার ক্লাব ঘরটি সংস্থার স্বেচ্ছাসেবকরা নিজেরাই পরিস্কার করে শিশুদের পড়াশোনার উপযুক্ত করে গড়ে তোলে। জানা যাচ্ছে মাসিক একটাকা গুরুদক্ষিণার বিনিময়ে সপ্তাহে প্রতিদিন দুই ঘণ্টা করে উন্নত মানের শিক্ষাদান করা হবে।
অভিভাবকদের উপস্থিতিতে প্রথম দিন প্রচলিত পাঠদানের পরিবর্তে শিশুদের ‘ছোঁয়া’র গুরুত্ব এবং কিভাবে পাঠদান করা হবে সেই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার সঙ্গে সঙ্গে পারস্পরিক পরিচিতিও গড়ে তোলা হয়। শিক্ষক হিসাবে থাকছেন সংস্থার সদস্য তথা কলেজ পড়ুয়া সৌম্যদীপ, রাহুল, রাজীব ও সৌরভ। ছাত্র হিসাবে এরা যথেষ্ট মেধাবী। তরুণদের আগ্রহ দেখে মুগ্ধ দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের তরুণ শিক্ষক কৃশানু ব্যানার্জ্জী। তিনি বললেন,’আমার বিশ্বাস এদের হাত ধরেই সংস্থার উদ্যোগ সফল হবে।’
ক্লাব কর্তৃপক্ষের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে কবিতা দেবী বললেন,’যেভাবে স্থানীয় মানুষ সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাতে গর্বের সঙ্গে বলা যায় সৎ পথে একাকী হাঁটতে শুরু করলেও ‘আমি’ থেকে ‘আমরা’- তে পরিণত হতে বেশি সময় লাগে না। তিনি তরুণ প্রজন্মের শিক্ষকদের আগ্রহের ভূয়সী প্রশংসা করেন।’।