এইদিন ওয়েবডেস্ক,শ্রীনগর,৩০ নভেম্বর : জম্মু ও কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এনআইটি) -এর এক হিন্দু পড়ুয়া সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের প্রধান অভিভাবক শেখ হাসান ইউসুফের আমেরিকা প্রবাসী ছেলে মোসাব হাসান ইউসুফ ইসলামি সন্ত্রাসবাদ ও কট্টরপন্থার ঘোর বিরোধী । সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসের ওই প্রকার কর্মকাণ্ডে বীতশ্রদ্ধ হয়ে তিনি আমেরিকায় গিয়ে খ্রিস্টান ধর্মও গ্রহণ করেছেন । ইসলামের নবীর আদর্শ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি ইতিমধ্যে প্রকাশ্যে বহু মতামতও প্রকাশ করতে দেখা গেছে । তার এমনই একটি ভিডিও হোয়াটস অ্যাপ স্ট্যাটাস এবং ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করেছিলেন শ্রীনগরের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (এনআইটি) এক হিন্দু পড়ুয়া । তার জেরে ইসলামি কট্টরপন্থী ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রদের দল কলেজে মিছিল বের করে ‘সর তন সে জুদা’,’নাড়ায়-এ-তকদির’, ‘লাব্বাইক ইয়া রাসুল আল্লাহ’ এবং ‘রাজ করেগা গুলাম-এ-মুস্তফা’ প্রভৃতি শ্লোগান তুলেছে বলে অভিযোগ । এদিকে কট্টরপন্থীদের চাপে পড়ে ওই কলেজের ওই হিন্দু ছাত্রকে ইনস্টিটিউট থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে আসন্ন সেমিস্টারের জন্য অযোগ্য ঘোষণা করা হয়েছে । পুলিশ অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে এফআইআর নথিভুক্ত করেছে। এই পুরো ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর ২০২৩)।
সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে অভিযুক্ত হিন্দু পড়ুয়া এবং তার মুসলিম গার্লফ্রেন্ড সম্পর্কেও লেখা হয়েছে । স্থানীয় ধর্মান্ধ মুসলিম জনতা প্রশ্ন তুলেছে যে, হিন্দু ছেলের গার্লফ্রেন্ড মুসলমান কেন ? অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশের কাছে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছিলেন এই সমস্ত বিক্ষোভকারীরা। সোশ্যাল মিডিয়াতেও শুরু হয়েছে ‘এনআইটি চলো’-এর ট্রেন্ড।
জম্মু-কাশ্মীরের মুসলিম ছাত্রদের এই প্রকার কট্টরপন্থী মানসিকতা,কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন সাংবাদিক স্বাতী গোয়েল শর্মা । তিনি অভিযুক্ত হিন্দু পড়ুয়ার সাথে তার প্রেমিকার মুখ আড়াল করা ছবি পোস্ট করে লিখেছেন,’ কাশ্মীরের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যয়নরত মহারাষ্ট্রের একজন হিন্দু ছাত্র কানহাইয়া লাল এবং কমলেশ তিওয়ারিকে হত্যার মত একই হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে । ছাত্রটি শুধুমাত্র হামাস সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর নেতার ছেলের ইসলাম এবং প্রতিষ্ঠাতা সম্পর্কে তার মনের কথা বলার একটি ভিডিও শেয়ার করেছিল । সেজন্য সর তান সে জুদা স্লোগান উঠছে রাস্তায় তার বিরুদ্ধে ; সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়ে গেছে। নিরাপত্তা প্রদানের পরিবর্তে, শ্রীনগর পুলিশ তাকে ঘৃণামূলক আইনের অধীনে মামলা করেছে এবং তাকে গ্রেফতার করতে চাইছে। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক হত্যাকাণ্ডের পরও তার শিরশ্ছেদের জন্য যারা ডাকছে তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেই । রাজ্য জঙ্গিদের লালনপালন করছে এবং প্রত্যেকেই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। আমাদের সকলের উচিত এই ছেলেটিকে সমর্থন করা। এখন না হলে কখনই না ।’।