প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৭ নভেম্বর : সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের দৌলতে হয়েছিল পরিচয়। সেই পরিচয় পরে প্রেমের রুপ পায় । তবে এ প্রেম,কোন যুবক-যুবতীর মধ্যে গড়ে ওঠা প্রেম নয়। এই প্রেম কাহানি নেপথ্যে রয়েছে দুই সমকামী। তাঁরা তাদের প্রেমকে পরিণয়ের রুপ দিতে বাড়ির লোকজনকে কিছু না জানিয়েই একে অপরের হাত ধরে বেড়িয়ে পড়েছিল ঘর থেকে। বিয়ে করে সুখের একটা সংসার গড়ার ইচ্ছা নিয়ে তাঁরা পৌছে গিয়েছিল এই বাংলা থেকে বহু দূরের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে। কিন্তু দেশের শির্ষ আদালত সমকামী বিয়েকে আইনি বৈধতা দেয় নি। তাই তাঁদের সংসার গড়া আর হয়ে ওঠেনি। অভিভাবকচদের অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ তাঁদের দু’জনকেই অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে এই রাজ্যে ফিরিয়ে নিয়ে আসায় আপাত স্বস্তিতে পরিজনরা ।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে,সমকামী প্রেমিক যুগল পূর্ব বর্ধমান জেলার কালনার বাসিন্দা। কালনা থানার অন্তর্গত শিকারপুরে বাড়ি যুবতীর। সামাজিক মাধ্যমের দৌলতে তাঁর সঙ্গে পরিচয় হয় কালনার ওমরপুর এলাকার এক তরুণীর । প্রথমে বন্ধুত্ব পরে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সময় গড়ানোর সাথে সাথে তাঁরা বিয়ের ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেন।কিন্তু তাঁদের সম্পর্ক যে বাড়ির লোকজন মেনে নেবে না, সেটা তাঁদের বুঝতে অসুবিধা হয় নি।তাই বাড়ির লোকজনকে কিছু না জানিয়েই তিন মাস আগে যুগল এ রাজ্য ছেড়ে ভিন রাজ্যে পাড়ি দেয়। তা জানতে পেরে দু’জনের পরিবার কালনা থানায় অভিযোগ দায়ারে করেন।পুলিশ তদন্তে নেমে খোঁজখবর চালিয়ে পৌছে যায় অন্ধ্রপ্রদেশ । সেখান থেকে দু’জনকে উদ্ধার করে নিয়ে এসে পুলিশ সোমবার পেশ করে কালনা আদালতে। আদালতের অনুমতি ক্রমে দু’জনে বাড়িতে নিয়ে গিয়েছেন পরিবারের লোকজন।
যুবতীর মা (শঙ্করী মণ্ডল ) এদিন বলেন, দু’জনেই যেহেতু মেয়ে তাই আমি ওদের মেলামেশা নিয়ে খারাপ কিছু ভাবিনি।তবে দু’জনেই বলতো ওরা নাকি একে অপরকে ভালো বাসে। রোজই দু’জন একে অপরের সঙ্গে দেখা করতো ।এখান ওখানে ঘুরে বেড়াতো। তবে ওরা সমকামী কি না তা আমি জানি না। ওরা দু‘জনে মিলে যে পালাবে সেটাও ভাবতে পরিনি । কি কারণে বাড়ির লোককে কিছু না জানিয়ে তিন মাস আগে ওরা দু’জনে বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে ছিল সেটাও আমার বোধগম্য হচ্ছে না । আমারা দুই পরিবার একসাথে থানায় নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ জানাই।পুলিশ অন্ধ্রপ্রদেশ থেকে দু’জনকে উদ্দার করে নিয়ে এসেছে বলে
যুবতীর মা এদিন জানান।
আর যুবতী (লতিফা খাতুন)বলেন,’আমি কলেজের পাঠ শেষ করেছি।দু’বছর আগে সামাজিক মাধ্যম দ্বারা আমাদের দু’জনের পরিচয় হয়। তারপর আমাদের দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু’জনেই তো মহিলা ,তাহলে প্রেমের সম্পর্ক কি করে গড়ে ওঠলো ? উত্তরে যুবতী জানায়,ও মহিলা ঠিকই তবে বয়স কম হলেও ওর মধ্যে ছেলেদের মত একটা ’ফিলিংস’ আছে। তাই আমরা দু’জনে বিয়ে করেছি। এ বিয়ে পরিবার মানবে না বলে দু’জনে অন্দ্রপ্রদেশ চলে গিয়ে ছিলেন বলে যুবতী জানিয়েছেন ।।