জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,বর্ধমান,২২ নভেম্বর : গত কয়েক বছর ধরে ব্যাঙ্কের মধ্যে ভিড় এড়ানোর জন্য এবং গ্রাহকদের সুবিধার্থে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে তাদের অনুমোদিত একাধিক গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে গড়ে তুলেছে। গ্রাহকরাও বাড়ির কাছে ব্যাংক পরিষেবা পেয়ে খুব খুশি। সুবিধার পরিবর্তে এবার মেমারির এরকমই একটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের প্রতারণার শিকার হল প্রায় তিন শতাধিক গ্রাহক।
পূর্ব বর্ধমান জেলার মেমারি থানার রসুলপুরের দলুই বাজার এলাকায় ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের একটি গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র আছে। জানা যাচ্ছে সেখানে নিজেদের জমানো অর্থ তুলতে গেলে নানা অজুহাতে প্রায়শই গ্রাহকদের হয়রানি করা হয়। কখনো বলা হয় লিঙ্ক নেই, কখনো বা আঙুলের ছাপ মিলছে না বলে গ্রাহকদের ফিরিয়ে দেওয়া হত বলে অভিযোগ । বর্তমানে টাকা তোলার সময় লিঙ্ক না থাকাটা স্বাভাবিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই গ্রাহকরাও বিশ্বাস করত। যদিও তাদের মধ্যে এটা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে একটা চাপা ক্ষোভ ছিল। তারই বহিঃপ্রকাশ ঘটে মঙ্গলবার ।
একে লিঙ্ক না থাকার অজুহাতের বিরক্তি এবং টাকা তুলতে এসে পরিষেবা কেন্দ্রটি বন্ধ দেখে গ্রাহকরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা স্থানীয় ইন্ডিয়ান ব্যাঙ্কের শাখা ম্যানেজারকে ঘেরাও করে কয়েকজন গ্রাহক বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। ধীরে ধীরে সেখানে ভিড় বাড়তে থাকে। শীতলা দাস, সুলতা সাঁতরা, সুনয়নী সাঁতরা, মিলনী মন্ডল, দীনবন্ধু অধিকারী, বুনি চালক, রেখা অধিকারী প্রমুখ গ্রাহকদের অভিযোগ তাদের সরলতা ও অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক কিরিটি বৈরাগ্য তাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ স্থানীয় মেমারি থানায় খবর দেয়।
এদিকে ব্যাঙ্কে বিক্ষোভের খবর পেয়ে মেমারি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে আসেন। প্রতারিত গ্রাহকদের সাথে কথা বলেন এবং দ্রুত তদন্তের আশ্বাস দেন। পরে গ্রাহকদের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মেমারি থানার পুলিশ গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রের মালিক কিরিটি বৈরাগ্যকে আজ বুধবার ভোরে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে। নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে বুধবার সকালে বর্ধমান আদালতে পাঠায়। আদালত তদন্তের স্বার্থে অভিযুক্তকে চারদিনের পুলিশ হেফাজতে পাঠানো হয়েছে ।
সংবাদ মাধ্যমের সামনে কিরিটিবাবু নিজের ভুল স্বীকার করে নেন এবং প্রতারিত গ্রাহকদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।।