অনিদ্রার চোখে কালের সব ঘুম নেমে এল !
তবু একটা দীর্ঘরাত তোমাদের শান্তির ঘুম আমি হতে পারিনি।
যেমন ঘুমোয় মানুষহীন নির্জন দেশ
সেই মাটির ছাই-ভস্মে পরিত্যক্ত শ্মশান বা গভীর অরণ্য।
যে ঘুম পাখিহীন শাখার শুধু একলার
যে ঘুম শাপলা বিলের ভেতর শুধু শালুকের তবু একলার
হে আমার পৃথিবী আমি তোমার তেমন সুখ হতে পারিনি ।
এ ঘুম হতে পারতো পতিতার লজ্জাহীন আঁচল …
ভিখারি মায়ের মলিন শূন্য দুখানি হাত …
আরও আছে কত নির্ঘুম চোখ !
হাসপাতালের সাদা চাদরে যন্ত্রণা মাখা শুকনো রক্তের দাগ ,
শুধু অপেক্ষা একটা দীর্ঘ ঘুমের ।
এই আলো ভরা পৃথিবীর অন্ধকার ছায়ায় , যারা জেগে আছে ঘুমবে বলে …
সে ঘুম কেন হতে পারলাম না ?
অকারণ দীর্ঘ পথ চলা শরীর নিয়ে .. মন নিয়ে ..
তবু দেশান্তর হলাম কই ?
পায়রার দালান, পিচের রাস্তা, গঙ্গার ঘাট সব ফেলে
লোকালয় থেকে এই এত দূরে নির্জনে পরে আছি …
তবু গাছ হলাম কই ?
যখন মধ্য রাত তারাদের পৃথিবী ভীষণ চুপ !
বহুদূর থেকে কান্না ভেসে আসে
ক্লান্ত গণিকার পরিশ্রমী শরীর একা পরে আছে …
বিধবার স্বপ্ন ভাঙা রাতের শব্দ আমাকে বধির করে দেয় …
আমি দুঃখিনী মায়ের একটা দীর্ঘ ঘুমের রাত হতে পারিনি !
পাহাড়ি ধুতরার বন যখন পেরিয়ে এলাম ,
আমার হাতে গরলের পাত্র …
চোখে এখনো কি ভীষণ প্রেম !
এ বিষ আমি কাউকে দিতে পারিনি ।
সবটা গিলে নিলাম , চেটে নিলাম শেষ তলানিটুকু …
অনিদ্রার চোখে কালের সব ঘুম নেমে এলো !
তবু একটা দীর্ঘ রাত তোমাদের শান্তির ঘুম আমি হতে পারিনি ।।