জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২২ নভেম্বর : শত্রুকে বাঁচিয়ে রাখার কোনো প্রয়োজন নাই – এই মন্ত্রে বিশ্বাসী মানুষ অবিবেচকের মত অবলা প্রাণীদের, বিশেষ করে বিষধর সাপ, মেরে ফেলছে। এক্ষেত্রে শিক্ষিত বা অশিক্ষিতের মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখা যায়না। যেকারনে বহু প্রজাতির সাপ এখন লুপ্তপ্রায় হয়ে গেছে । অথচ প্রকৃতির ভারসাম্য বজায় রাখার জন্য ছোট-বড় প্রতিটি জীবের বেঁচে থাকার অধিকার আছে। বনদপ্তরের প্রচেষ্টার ফলে মানুষের মধ্যে পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ছে। তারই নমুনা পাওয়া গেল আউশগ্রাম-২ সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক দপ্তরের কর্মীদের মধ্যে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যা প্রায় ৭ টা নাগাদ সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীরা একটি শাঁখামুটি সাপ দেখতে পান। আপাত নিরীহ বিষাক্ত সাপটি দেখে সঙ্গে সঙ্গে তারা ধারাপাড়ার বনদপ্তরে খবর দেন। সেখান থেকে খবর দেওয়া হয় আউশগ্রাম বনদপ্তরে। সাপটির কোনোরকম ক্ষতি না করে তারা নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে সাপটির অবস্থান পর্যবেক্ষণ করতে থাকে। খবর পেয়েই আউশগ্রাম বনদপ্তর থেকে দু’জন ‘স্নেক ক্যাচার’ সেখানে হাজির হন এবং সাপটিকে উদ্ধার করে আউশগ্রামের গভীর জঙ্গলে ছেড়ে দেন। হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন দপ্তরের কর্মীরা।
আউশগ্রাম বনদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক হেমাংশুবাবু বললেন, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আমাদের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে সাপটিকে উদ্ধার করে। তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করেন।
দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার দত্তপুকুরের ‘প্রকৃতিকন্যা’ অদিতি গায়েন বললেন – সবার বাঁচার অধিকার আছে। সাপ একটা ভীরু প্রাণী। তার ক্ষতি না করলে সে আমাদের কোনো ক্ষতি করেনা। বিশেষ করে শাঁখামুটি সাপ সচারচর আর দেখতেই পাওয়া যায় না । এখনো মানুষ সচেতন না হলে ওই প্রজাতির সাপ প্রকৃতি থেকে অচিরেই বিলুপ্ত হয়ে যাবে ।
প্রসঙ্গত স্নাতক স্তরের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী অদিতি ইতিমধ্যে একাধিক সাপ ও বন্যপ্রাণী উদ্ধার করেছে। পাশাপাশি স্থানীয় এলাকার বাসিন্দাদের সাপ সম্পর্কে সচেতনও করেছেন ।।