তুমি তো আমারও
তবে কেন এই মৃত্যু
আজও মানুষ অন্ধকার নিয়ে নিদ্রাহীন রাতের গুহায় জেগে থাকে !
শ্মশানে যাদের সদ্য দাহ করা হল
তারা আগুনের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেকে পুড়তে দেখছে ।
যারা এখনো মরেনি তারাও চুপচাপ ছায়ার মধ্যে মিশে স্থির হয়ে
বাতাসে গন্ধ শুকছে পোড়া চামড়ার ।
যারা প্রতিদিন মরে দুমুঠো ভাতের খিদে নিয়ে, তেষ্টা নিয়ে, কেউ বা ছেড়ে যাওয়া প্রেমিকের ফেলে যাওয়া প্রেমে ।
ওরা সবাই তাকিয়ে থাকে আকাশের দিকে, চাঁদের দিকে ,
কেউ ভিজে যায় হিমে …
কেউ শুকিয়ে যায় জোৎস্নায় …
কেউ ভাঙা মেঘের মত দুমড়ে-মুচড়ে মিশে যায় মাটিতে ।
পৃথিবীর কোন এক দেশ যখন মানচিত্র থেকে মুছে যাচ্ছে
তখন এই হতবাক হয়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ গুলোই ডুকরে কেঁদে ওঠে
আরও একবার আকাশের দিকে তাকিয়ে খুঁজে নেয় সেই সব মৃত দেহ
যারা একফোঁটা জল না পেয়ে বিদায় নিল অনিচ্ছুক
তাদের সব কথা বল
সেই দাঁড়িয়ে থাকা মানুষগুলো ! চোখের জল মুছে হঠাৎ চিৎকার করে বলে …
হে মানুষ,হে সভ্যতা, তুমি তো আমারও ।
তবে কেন এই মৃত্যু ?
কেন এই মাটির অবোধ শিশুদের মুখে রক্ত ?
যে শব্দ কালির অক্ষরে ছাপা হয়
খবরের কাগজ, টেলিভিশন , আর দাঁড়িয়ে থাকা মানুষদের একলা আকাশের চাঁদ
আরও একবার নীরব সবাই
কোনো উওর নেই ।
শুধু একটি শিশু কোনো এক মৃতদেহের হাত ধরে বলে উঠলো …
আমি আছি আমি থাকবো
একদিন আবার ফিরে আসবো ।
তবু সবাই দাঁড়িয়ে আছে নিরুপায় !
এ যেন চিত্রকরের আঁকা বিশ্বের একটুকরো পোড়া অন্ধকার ছবি ।
কলের পুতুলের মত দাঁড়িয়ে আছে সবাই সবাই মানুষ খুঁজছে ।
আর তারি মাঝে ঘুম ভাঙিয়ে চিৎকার করে ওঠে সেই শিশু …
আমি আছি আমি থাকবো
একদিন আবার ফিরে আসবো ।।