এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০৫ নভেম্বর : ২০১৪ সালে মাঝামাঝি সময় কেরালা হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশনটি দাখিল করেছিলেন কোচির থাম্পুর সভাপতি রাজেন্দ্র প্রসাদ (ন্যাশনাল ট্রাস্ট ফর ট্রাইবাল এডুকেশন, ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রিসার্চ) এবং অন্য এক ব্যক্তি । তাঁদের অভিযোগ ছিল যে ২০১২ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড ও উত্তরপ্রদেশ থেকে প্রায় ৬০,০০০ দুঃস্থ পরিবারের শিশুদের অপহরণ করে কেরালায় অনাথ আশ্রমে রেখে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত ও খৎনা করার ঘটনা ঘটেছে । মাদ্রাসায় রেখে শিশুদের দিয়ে কলমা পড়ানো হয় বলে অভিযোগ তোলেন তারা ৷ এই ঘটনার তদন্তের জন্য সিবিআই তদন্তের দাবি তোলেন পিটিশনটি দাখিলকারী দুই ব্যক্তি । কিন্তু সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে কেরালার তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার ।
কেরালা হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭০ ধারার অধীনে পালাক্কাদ পুলিশ দ্বারা মামলা নথিভুক্ত করা সহ শিশু পাচারের মামলাগুলির সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেয় ।
তৎকালীন প্রধান বিচারপতি অশোক ভূষণ ও বিচারপতি এ.এম. শফিক, শিশু পাচারের মামলায় সিবিআই তদন্তের জন্য একটি জনস্বার্থের রিট আবেদনের অনুমতি দেওয়ার সময়, রাজ্যের পুলিশ প্রধানকে নির্দেশ দিয়েছিলেন যে সমস্ত মামলার বিশদ সিবিআইকে ন্যস্ত করা হয়েছে তা নিশ্চিত করতে ।
এরপর হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে দ্বারস্থ হয় কেরালার বামফ্রন্ট সরকার । কিন্তু সুপ্রিম কোর্টের একটি সামাজিক বিচার বেঞ্চের বিচারপতি ইউ.ইউ. ললিত এবং বিচারপতি এম.বি. লোকুর বিহার,ঝাড়খণ্ড সহ ৫ রাজ্যের শিশুদের পাচারের বিষয়ে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার কেরালা হাইকোর্টের সিদ্ধান্তকে স্থগিত করতে অস্বীকার করে । আদালত ‘কেরালায় শিশুদের পাচার একটি বিশাল সমস্যা’ বলে পর্যবেক্ষণ করে । যদিও মামলাটি এখনো সিবিআইয়ের তদন্তাধীন ।
কেরালা হাইকোর্টে ওঠা ৯ বছর আগের শিশু পাচার মামলায় (Kerala High Court CBI Probe in Child Trafficking case)বিষয়বস্তুটি নিজের সোশ্যাল মিডিয়া চ্যানেলে বিস্তারিত বর্ণনা করে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় । তিনি বলেন,’ভারতে ধর্মান্তরকরণের একটা বিরাট চক্র কাজ করছে । সম্প্রতি এনসিপিসিআর প্রকাশ করে যে এক শিশুকে অপহরণের পর মুজফফর নগরে এনে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত করা হয়েছে । কেরালায় এমন যত অনাথ আশ্রম রয়েছে যার অধিকাংশ শিশু পশ্চিমবঙ্গ, বিহার, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড ও উত্তরপ্রদেশ, এই ৫ রাজ্য থেকে আনা হয়েছে ।’
তিনি কেন্দ্রীয় গৃহমন্ত্রী অমিত শাহের কাছে দাবি তোলেন,’কেরালার ওই সমস্ত অনাথ আশ্রমের অর্থায়নের তদন্ত হোক । বাজেয়াপ্ত করা হোক লাইসেন্স । অপহরণকারী,ধর্মান্তরণকারী, তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে ন্যাশানাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট(এনএসএ),ইউএপিএ,আইপসির ১২১ ধারা (আজীবন কারাদণ্ড অথবা মৃত্যুদণ্ড)লাগানো হোক,দেশদ্রোহের ধারা লাগানো হোক, গ্যাংস্টার অ্যাক্ট লাগানো হোক এবং ঘটনায় যুক্ত সকলের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার দাবি তুলেছেন সুপ্রিম কোর্টের ওই আইনজীবী ।’
আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় বলেন,’ধর্মান্তরকরণের জন্য ৯ রাজ্যে হিন্দু খতম হয়ে গেছে । ২০০ জেলার জনবিন্যাস বদলে গেছে,৩০০ তহশিলের জনবিন্যাস বদলে গেছে । এরপরেও ধর্মান্তরিত করার খেলা বন্ধ না হলে আগামী দিনে বিরাট সমস্যার মুখে পড়তে হবে ।’ তিনি আরও বলেন,’মুঘলরা এসেছিল ভারতে ইসলাম ছড়ানোর জন্য । ব্রিটিশরা এসেছিল ধর্মান্তরিত করার জন্য,ব্যবসা বা লুট করার জন্য নয় । আজকেও জিহাদি ও খ্রিস্টানরা ধর্মান্তরিত করার খেলা সমানে চালিয়ে যাচ্ছে । পুরো উত্তরপূর্ব কনভার্ট হয়ে গেছে,এখন ওই ৫ রাজ্যে কনভার্ট করার খেলা চলছে । এমনকি পাঞ্জাব, হরিয়ানা, গুজরাট,মহারাষ্ট্র, রাজস্থানেও একই খেলা চলছে ।কংগ্রেস, ডিএমকে, আম আদমি পার্টি,নীতিশ কুমার, মমতা ব্যানার্জি কারোর শাসনেই এই ধর্মান্তরিত করার খেলা বন্ধ হচ্ছে না ।’
তিনি বলেন,’এটি তখনই বন্ধ হবে যখন ৫ ধারা লাগানো হবে : প্রথমত-এনএসএ, দ্বিতীয়ত-ইউএপিএ তৃতীয়-সিডিশন, চতুর্থত-রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার ধারা এবং পঞ্চমত গ্যাংস্টার অ্যাক্ট । অন্যথায় এই প্রকার ধর্মান্তরকরণ চলতে থাকবে এবং আগামী ২০-৩০ বছরের মধ্যে ভারতের জনবিন্যাসের আমূল পরিবর্তন হয়ে যাবে ।’ পাশাপাশি তিনি ধর্মান্তরকরণে যুক্তদের নারকো পলিগ্রাম ব্রেন ম্যাপিং টেস্ট করার দাবি তুলে বলেন, ‘তাহলেই এই চক্রে কোন নেতা আছে,কোন আধিকারিক আছে,কোন সাংবাদিক এই চক্রে আছে,কোন সামাজিক কর্মকর্তা আছে, কোথা থেকে এদের অর্থায়ন হচ্ছে সব জানা যাবে ।’ কেরালা হাইকোর্টের শিশু পাচার মামলাটি নিয়ে এখনো পর্যন্ত সিবিআইয়ের তরফে কোনো সাড়াশব্দ না থাকায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় ।।