প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০২ নভেম্বর : এ যেন অনেকটা ভুতুড়ে কাণ্ডের মত ব্যাপার। কৃষি দফতরে চাকরির জন্য আবেদন করার সাত বছর বাদে ডাকযোগে চাকরির পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড পেলেন কর্মপ্রার্থী আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর সেই অ্যাডমিট কার্ড হাতে পেয়েই চোখ কপালে ওঠা অবস্থা হয়েযায় আশীষের। রাজ্যের কৃষি দফতর,না কি ডাক বিভাগ ,কাদের ব্যর্থতায় এমন অদ্ভুত কাণ্ডটি ঘটলো তার কিছুই বুঝে উঠতে পারছেন না ওই কর্মপ্রার্থী। যদিও এই ঘটনার পিছনেও দুর্নীতি দেখছেন বিরোধীরা ।
বর্ধমান শহরের নারকেল ডাঙা এলাকার বাসিন্দা
আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় । তিনি ২০১৬ সালে কৃষি দফতরে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করেন। ২০১৬ সালের ১৮ মার্চ ’কর্মক্ষেত্র পত্রিকায়’ একটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয় ।সেই বিজ্ঞপ্তিতে রাজ্য কৃষি দফতরে ’কৃষি প্রযুক্তি সহায়ক’ পদে ৮১৮ জনকে নিয়োগ করা হবে বলে উল্লেখ থাকে। ওই পদে আবেদন করার জন্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি রাখা হয়েছিল ছিল উচ্চ মাধ্যমিক পাশ। বিজ্ঞপ্তি নম্বর ছিল ০৪/WBSSC/২০১৬। বেতনক্রম ৫৪০০-২৫২০০ টাকা বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ ছিল ।তা দেখে কর্মপ্রার্থী আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৬ সালেই ওই পদে আবেদন করেন ।
বৃহস্পতিবার আশীষবাবু বলেন,আমি ওই বিজ্ঞপ্তি দেখে আবেদন করার পর থেকে পেরিয়ে গিয়েছে প্রায় সাত বছর। কিন্ত এতদিন ওই চাকরির পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড বা আনুসাঙ্গিক কিছু আমার কাছে আসেনি। কিন্তু হঠাৎই পয়লা নভেম্বর (০১.১১.২৩ )তারিখে দুপুর একটা নাগাদ ডাকযোগে কৃষি দপ্তরের সেই পরীক্ষার একটি অ্যাডমিট কার্ড আমি হাতে পাই।আশীষ বাবু আরো বলেন,অ্যাডমিট কার্ড হাতে পেয়ে প্রথমে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়ি। কিন্তু খাম খুলে অ্যাডমিট কার্ডটি ভালকরে পড়তেই আমি হতবাক হয়ে যাই ।
কেন হতবাক হয়ে গেলেন? এই প্রশ্নের উত্তরে আশীষ বাবু বলেন,“ওই চাকরির পরীক্ষা হয়েগেছে প্রায় সাত বছর আগে ২০১৬ সালের ১৮ই ডিসেম্বর
। অথচ সেই পরীক্ষার অ্যাডমিট কার্ড আমি পেলেম প্রায় সাত বছর বাদে । সেই কারণেই অ্যাডমিট কার্ড হতো পেয়ে হতবাক হয়ে যন বলে আশীষ বাবু মন্তব্য করেন“। শুধু তাই নয়,আশীষ বাবু এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করেছেন। কার ভুলে তাকে এই খেসারত দিতে হলো তা প্রকাশ্যে আসুক,সেটাই চাইছেন আশীষ বন্দ্যোপাধ্যায় । এমনকি তিনি বিষয়টি নিয়ে আইনি পদক্ষেপ গ্রহন করার কথাও ভাবছে বলে জানিয়েছেন।
এ দিকে এই ঘটনা নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্কও চরমে উঠেছে। ঘটনা নিয়ে বিরোধী দলগুলি একযোগে শাসকদল ও রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে।জেলা বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র তাঁর অভিযোগে বলেন,“রাজ্যে শিক্ষা ও পুরসভায় সহ একাধিক যায়গায় নিযোগে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে । এ ক্ষেত্রেও হয়তো তেমনটাই হয়েছে। যাঁরা ওই পদে চাকরি পাবার যোগ্য ছিল তাদের নাম ইচ্ছাকৃত ভাবে বাদ দিতে দলের লোক কে চাকরি পাইয়ে দিতে এমন কৌশল নেওয়া হয়েছিল কি না তার তদন্ত মৃত্যুঞ্জয় বাবু দাবি করেছেন । যদিও শাসকদলের সাফাই, এটা ডাকযোগে এসেছে। যদি কোন গলদ থাকে তাহলে সেখানেই হয়েছে।রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন,“আগে দেখতে হবে দোষ কার।এতো এসেছে ডাক যোগে।তাই ডাক বিভাগেরই ভুল নাকি সেই বিষয়টি দেখতে হবে ।।