এইদিন ওয়েবডেস্ক,নয়াদিল্লি,০১ নভেম্বর : ভারতের দাঙ্গার ইতিহাসে আজ পয়লা নভেম্বর অন্যতম একটা কালো দিন । গাজায় হামাস সন্ত্রাসীদের দমনের জন্য ইসরায়েলি অভিযানের বিরুদ্ধে সরব হওয়া সোনিয়া গাঁধি,রাহুল গাঁধি,প্রিয়াঙ্কা গাঁধি ভাদ্রার দল ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস এই দিনেই দিল্লিতে শিখ নরসংহার চালিয়েছিল । ১৯৮৪ সালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গাঁধিকে তার দুই দেহরক্ষী গুলি করে মারার পর শুরু হয় শিখ নরসংহার । শুধু দিল্লী না, গোটা দেশ জুড়ে শিখদের বিরুদ্ধে নরসংহার শুরু হয়ে যায় । শুধুমাত্র দিল্লীতে ২ হাজার ৭৩৩ জনের জীবন গেছে । সব মিলিয়ে তিন হাজারের অধিক শিককে প্রাণ হারাতে হয় । দিল্লির তিলক বিহার এলাকাটি পরিচিত হয় “বিধবা কলোনি” নামে । প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কমল নাথ, এইচকেএল ভগত, কংগ্রেস নেতা জগদীশ টাইটলার, কংগ্রেস সাংসদ সজ্জন কুমার, ললিত মাকেন, ধরম দাস শাস্ত্রী শিখ বিরোধী দাঙ্গার মূল আসামি । সেই সময় মৃত ইন্দিরা গাঁধির জ্যেষ্ঠপুত্র রাজীব গাঁধিকে ন্যাক্কারজনক বয়ান দিতে শোনা যায় । রাজীব গাঁধির কথায়, ‘বড় গাছ ভেঙে পড়লে আশপাশের এলাকা কেঁপে উঠবেই ।’
ইন্দিরা গাঁধির মৃত্যুর পর তাঁর ছেলে রাজীব হন প্রধানমন্ত্রী । আর তারপর যথারীতি শিখ নরসংহার মামলা ধামাচাপা পড়ে যায় । এমনকি দুরদর্শনে পর্যন্ত শিখদের গণহত্যার কোন কভারেজ দেখানো হয়নি । মামলার শিট গঠন করতে লেগে যায় দীর্ঘ ২৯ টা বছর ।
নরেন্দ্র মোদী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রালয় দ্বারা নিযুক্ত বিচারক জি পি মাথুর সমিতির সুপারিশের পর ২০১৫ সালের ১২ ই ফেব্রুয়ারী এসআইটি গঠন করা হয়েছিল। তিন সদস্যের এসআইটি এখনো পর্যন্ত শিখ বিরোধী দাঙ্গায় ৬৫০ মামলার মধ্যে ৮০ টি মামলাকে ফের খোলা হয় ।
দিল্লি ক্যান্টনমেন্টে একই শিখ পরিবারের সদস্য কেহর সিং, গুরপ্রীত সিং, রঘুবেন্দ্র সিং, নরেন্দ্র পাল সিং এবং কুলদীপ সিং হত্যার সাথে সম্পর্কিত শিখ বিরোধী দাঙ্গা মামলায় কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমার এবং অন্য চারজনের সাজা ঘোষণা করা হয়েছিল।
শিখবিরোধী দাঙ্গায় দোষী যশপাল সিংকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দেয় দিল্লির পাটিয়ালা আদালত।যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয় এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত নরেশ শেরাওয়াতকে। শিখ সম্প্রদায়ের দুই সদস্যকে হত্যায় দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন তাঁরা । শিখবিরোধী দাঙ্গার সময়ে হরদেব সিং ও অবতার সিংকে খুনে দোষী সাব্যস্ত করা হয় যশপাল সিং ও নরেশ শেরাওয়াতকে । ২০১৫ সালে শিখবিরোধী দাঙ্গার তদন্তে সিট গঠনের পর এটাই প্রথম সাজা ঘোষণা । যদিও চলতি বছরে এই মামলায় মোট ৫ জন অভিযুক্তের মধ্যে ছিলেন দুজনের ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয় । বাকি ৩ জনকে গত সেপ্টেম্বরে দিল্লির রাউস অ্যাভিনিউ আদালত মামলা থেকে অব্যাহতি দেয় । সজ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল তিনি একটি গুরুদ্বারে আগুন লাগিয়েছিলেন ।
এর আগে কংগ্রেস সরকারের জমানায় ১৯৯৪ সালে প্রমাণের অভাবে তদন্ত বন্ধ করে দিয়েছিল দিল্লি পুলিশ । কিন্তু শিখ নরসংহারে অন্যতম আসামি কমল নাথ আজও মধ্যপ্রদেশে কংগ্রেসের হয়ে সক্রিয় রাজনীতি করে যাচ্ছেন । শাসন ক্ষমতায় থাকার সময় যে কংগ্রেস দল নিজের দেশের নাগরিকদের নরসংহার চালিয়েছিল, আজ তারাই ফিলিস্থিনের স্বাধীনতার নামে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামাসকে সমর্থন জুগিয়ে যাচ্ছে ।।