এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেরালা,৩০ অক্টোবর : কেরালার কোচির কালামাসেরিতে যিহোবার সাক্ষিদের সভায় বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে তিনজনে দাঁড়িয়েছে । তার মধ্যে লিবিনা নামে ১২ বছর বয়সী এক কিশোরী রবিবার রাতে মারা যায় । তার শরীরের ৯০ শতাংশের বেশি পুড়ে গিয়েছিল । রবিবার সকালে ইরিংগোল ভাট্টপাদি লিওনা পলাস নামে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয় । বিস্ফোরণের দিন ঘটনাস্থালেই মারা যায় এক মহিলা । দগ্ধ ১৭ জন এখনও বিভিন্ন হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন ।
এদিকে ডমিনিক মার্টিন নামে এক ব্যক্তি ফেসবুক লাইভে এসে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছেন । এরপর পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণও করেন তিনি । ফেসবুক লাইভে তিনি দাবি করেন যে যিহোবা’স উইটনেসের প্রার্থনা সভার আয়োজনকারী সংগঠনটি দেশবিরোধী শিক্ষা দেয় । ভিডিওতে তিনি বলেছেন যে তিনি গত 16 বছর ধরে যিহোবার সাক্ষী সম্প্রদায়ের সাথে যুক্ত আছেন । কিন্তু কখনোই এর সক্রিয় সদস্য ছিলেন না ।ছয় বছর আগে আমি অনুভব করেছিলেন যে এই সংস্থাটি ভুল পথে চলেছে। তাদের শিক্ষা দেশবিরোধী। আমি তাদের কয়েকবার সংশোধন করার জন্য বলেছিলাম । কিন্তু তারা আমার কথা শুনতে রাজি ছিল না ।’
তিনি আরও বলেন,’কোন ধর্মে বিশ্বাস রাখতে ক্ষতি নেই। কিন্তু এই লোকেরা বলে যে বাকি বিশ্বের মানুষ ধ্বংস হয়ে যাবে এবং শুধুমাত্র তারাই জীবিত থাকবে । যে গোষ্ঠী ৮৫০ কোটি মানুষের জন্য এমন কথা ভাবছে, তাদের কী করা উচিত ?’
প্রসঙ্গত,যিহোবার সাক্ষী সম্প্রদায় খ্রিস্টান ধর্মের একটি শাখা । কিন্তু তাদের বিশ্বাস খ্রিস্টানদের থেকে একেবারেই আলাদা। তারা যীশু খ্রীষ্ট এবং তাঁর শিক্ষায় বিশ্বাস করে, কিন্তু তাঁর কাছে প্রার্থনা করে না । তারা বাইবেলের প্রকৃত অর্থ গ্রহণ করার দাবি করে । এই সম্প্রদায়ের লোকজন প্রকৃতির পূজা করে না কোনো প্রাণীর ছবিও তোলে না । তাদের প্রার্থনা প্রধানত একসাথে বাইবেল পড়া এবং একসাথে গান করার মাধ্যমে করা হয় । যিহোবার সাক্ষী সম্প্রদায়েদের জমায়েতকে ‘কিংডম’ হল বলা হয় । এমনি দেশের জাতীয় সঙ্গীত গাইতেই এরা রাজি নয় । একারণে ১৯৮৫ সালে, কেরালার যিহোবার সাক্ষী সম্প্রদায়ের তিনজন শিশুকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল । যদিও পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তাদের স্কুলে ফিরিয়ে নেওয়া হয় ।
ফেসবুক লাইভে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করা লাইভ মার্টিন বলেন,’এই দেশে বসবাস করেও এই লোকেরা দেশের মানুষকে পতিত বলে অপমান করে। তারা অন্য লোকদের অন্যের সাথে করমর্দন না করতে এবং খাবার না খাওয়ার জন্য প্রচার করে । আমার কাছে এটি একটি ভুল আদর্শ । আপনি যদি বিপজ্জনক ধারনা ছড়ানো গোষ্ঠীগুলিকে বন্ধ না করেন তবে আমার মতো আরও লোকের জন্ম হবে।’
মার্টিনের স্ত্রী জানান, বিস্ফোরণের দিন ভোর পাঁচটায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তার স্বামী । তিনি কোথায় যাচ্ছেন তা জানাননি। তার ফোন থেকে প্রার্থনা সভায় বিস্ফোরণের ভিডিওও পাওয়া গেছে। ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করার পর বোমা তৈরির জন্য অনলাইন এবং স্থানীয় দোকান থেকে সামগ্রী কিনে তিনি বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন বলে পুলিশকে জানিয়েছেন ডমিনিক মার্টিন । পুলিশ তাকে বিস্ফোরণের মূল আসামি হিসেবে বিবেচনা করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ।।