এইদিন ওয়েবডেস্ক,কোচি,২৯ অক্টোবর : শুক্রবার ২৭ অক্টোবর কেরালার মালাপ্পুরমে সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের সমর্থনে আয়োজিত সভায় ভার্চুয়ালি বক্তব্যও রাখেন সভার প্রধান অতিথি হামাসের প্রাক্তন প্রধান খালেদ মাশাল ( Khaled Mashal) । মাশাল মূলত ইহুদি ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের মাঝে উসকানিমূলক বক্তব্য দেন । তার ঠিক কয়েক ঘন্টার মধ্যেই কেরালার কোচির কালামাসেরি এলাকার খ্রিস্টানদের একটি কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত যিহোবার প্রার্থনা সভায় সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে । একের পরে এক বেশ কয়েকটি বোমা বিস্ফোরণ হয় বলে খবর । বিস্ফোরণে একজন মহিলার মৃত্যু হয়েছে এবং আহত হয়েছে অন্তত ৩৫ জন । আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে । তাদের মধ্যে দু’জনের অবস্থা গুরুতর । সম্মেলনে দুই হাজারের বেশি মানুষ অংশ নিয়েছিল বলে জানা গেছে ।
খ্রিস্টানদের ওই ধর্মীয় সম্মেলন শুক্রবার শুরু হয়, আজ বিকেল সাড়ে ৪ টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, প্রার্থনা শুরু হওয়ার পর কনভেনশন সেন্টারের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রচণ্ড শব্দে বিস্ফোরণ হয় এবং আগুনের সূত্রপাত হয় । যে কনভেনশন সেন্টারে বিস্ফোরণটি হয়েছিল সেটি কালামাসেরি মেডিকেল কলেজের কাছে অবস্থিত। প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন যে সবাই যখন চোখ বন্ধ করে প্রার্থনা করছিল তখন বিস্ফোরণটি ঘটে এবং তারা মনে করেছিল এটি একটি বোমা বিস্ফোরণ। একের পর এক বেশ কয়েকটি বিস্ফোরণ ঘটে বলে জানিয়েছেন তিনি ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আগুনের শিখা ও ধোঁয়া হলের ওপরে উঠেছিল এবং লোকজন প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করছিল। শুক্রবার থেকে শুরু হওয়া সম্মেলনে যোগ দিতে যারা এসেছিলেন তারা বলেছেন যে একজন ব্যক্তি কোনও পরিচয়পত্র ছাড়াই এসেছিলেন এবং তাকে মানসিক প্রতিবন্ধী বলে মনে করে সভাস্থল থেকে বের করে দেওয়া হয় । প্রাথমিকভাবে পুলিশের সন্দেহ নাশকতার জন্য কৌটো বোমা ব্যবহার করা হয়েছিল ।
পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, কালামাসেরিতে বিস্ফোরণটি পরিকল্পিত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। একই সাথে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা সন্ত্রাসী হামলার দিকে ইঙ্গিত করে। এডিজিপি এমআর অজিত কুমার শীঘ্রই ঘটনাস্থলে গেছেন । সন্ত্রাসবিরোধী স্কোয়াডকেও কালামাসেরিতে পাঠানো হয়েছে । পুলিশ প্রধান জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের পর রাজ্যজুড়ে উচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এনআইএ-র কোচি ইউনিটকে বিস্ফোরণের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ।
এদিকে এই ঘটনার জন্য সন্ত্রাসবাদ নিয়ে কেরালা বামফ্রন্ট সরকারের নরম নীতিকে দায়ি করেছেন অনেকে । একদিকে যেখানে ইসরায়েলে হামাসের হামলাকে সন্ত্রাসী হামলা হিসাবে দেখা হচ্ছে, অন্যদিকে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং বামপন্থীদের ফিলিস্থিনের অধিকার রক্ষার নামে বিক্ষোভ সমাবেশে যোগ দিয়ে হামাসের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে প্রচ্ছন্ন সমর্থন করছে বলে অভিযোগ । একই অভিযোগে অভিযুক্ত কংগ্রেসও । দিন দুয়েক আগে প্রকাশ্য সমাবেশে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ বন্ধে জাতিসংঘের ভোটাভুটিতে ভারতের অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কংগ্রেসের নেত্রী প্রিয়াঙ্কা গাঁধি ভাদ্রা । ইসরায়েলে হামাসের নাশকতার সমালোচনা না করে হামাসের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে কার্যত তিনি সমর্থন করেন বলে অভিযোগ ।।