এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেরালা,২৯ অক্টোবর : গত ২৭ অক্টোবর কেরালার মালাপ্পুরমে সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের সমর্থনে একটা সভা করেছিল মুসলিমরা । ওই সভার নাম দেওয়া হয়েছিল “জায়নবাদী এবং হিন্দুত্ব বর্ণবাদের বিরুদ্ধে যুব প্রতিরক্ষা সমাবেশ”। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের প্রাক্তন প্রধান খালেদ মাশাল ( Khaled Mashal) । তিনি ভার্চুয়ালি বক্তব্যও রাখেন । মাশালের বক্তব্য ছিল মূলত ইহুদি ও হিন্দুদের বিরুদ্ধে মুসলমানদের উসকানি দেওয়ার জন্য। তিনি সমাবেশে হামাসের প্রতি সমর্থন বাড়ানোর কথা বলেন ।
সভাতে শ্লোগান দেওয়া হয় “হিন্দুত্ব ও ইহুদীবাদকে বুলডোজার দিয়ে উপড়ে ফেলুন” । প্রথমত,একটা সন্ত্রাসী সংগঠনের প্রধানের সভায় যোগদান, যারা ইসরায়েলের নাশকতা চালিয়ে ১,৪০০০ জন ইসরায়েলিকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে । দ্বিতীয়ত, একটা হিন্দু অধ্যুষিত রাষ্ট্রে ‘হিন্দুত্বকে বুলডোজার দিয়ে উপড়ে ফেলার’ মত সাম্প্রদায়িক শ্লোগানের পরেও কেরালার সিপিএম সরকার মুখে কুলুপ এঁটে আছে । পাশাপাশি মুসলিম ভোটব্যাঙ্ক হারানোর ভয়ে কংগ্রেসের তরফেও বিষয়টি নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি । ফলে কেরালার দুই বৃহৎ রাজনৈতিক দল সিপিএম ও কংগ্রেসের মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে ।
তবে ঘটনার নিন্দা করেছে বিজেপি । বিজেপির রাজ্য সভাপতি কে সুরেন্দ্রন খালেদের ভার্চুয়াল বক্তৃতার পরিপ্রেক্ষিতে অনুষ্ঠানের আয়োজকদের মানসিকতার তীব্র নিন্দা করেন। তিনি খালেদের অংশগ্রহণের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য রাজ্য পুলিশ প্রধানের কাছে আবেদন জানান । সুরেন্দ্রন ‘এক্স’ হ্যান্ডেলে লিখেছন,’মালাপ্পুরমে সলিডারিটি প্রোগ্রামে হামাস নেতা খালেদ মাশালের ভার্চুয়ালি যোগদান উদ্বেগজনক। মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের পুলিশ কোথায় ? ‘সেভ প্যালেস্টাইন’-এর আড়ালে তারা সন্ত্রাসী সংগঠন হামাস ও তার নেতাদের ‘যোদ্ধা’ বলে মহিমান্বিত করছে। এটা অগ্রহণযোগ্য ।’ সুরেন্দ্রন আরও লেখেন,’আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ কেরালায় পরিস্থিতি এখন এই পর্যায়ে এসেছে। হামাসের সন্ত্রাসী নেতারা কেরালার প্রকাশ্য সভায় অংশ নিচ্ছে । তবে এটা ভার্চুয়াল কারণ তিনি ভিসা পাবেন না। আয়োজকদের উদ্দেশ্য পরিষ্কার ।’
তবে বিজেপিই একমাত্র দল যারা কেরালার মুসলিমদের সংহতি কর্মসূচিতে খালেদ মাশেলের উপস্থিতির বিরুদ্ধে নেমেছে । ক্ষমতাসীন সিপিএম নেতৃত্বাধীন বাম গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এলডিএফ) এবং বিরোধী ইউডিএফ উভয়ই অর্থপূর্ণ নীরবতা পালন করেছে । কারণ তাদের লক্ষ্য শুধু মুসলিম ভোট ব্যাঙ্ক । সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল যে ‘হিন্দুত্বকে বুলডোজার দিয়ে উপড়ে ফেলার’ হুঁশিয়ারির পরেও কেরালার কথিত শিক্ষিত সেকুলার হিন্দু ভোটারও নিজ সম্প্রদায়ের ভবিষ্যৎ পরিনতি সম্পর্কে সম্পূর্ণ উদাসীন ।
উল্লেখ্য,ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী সংগঠন হামাসের প্রাক্তন প্রধান খালেদ মাশাল( Khaled Mashal) ২০০৪ সালে হামাসের বৈধ প্রধান হন। তিনি ২০০৬ সালে অনুষ্ঠিত ফিলিস্তিনি আইনসভা নির্বাচনে হামাসকে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন ।।