এইদিন ওয়েবডেস্ক,ঢাকা,২২ অক্টোবর : ভারতের পাশাপাশি বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর ইসলামি জিহাদিদের হামলার অন্যতম অস্ত্র হল ‘লাভ জিহাদ’ । মনে করা হয় যে, সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে দেশকে হিন্দু শুন্য করতে এবং মুসলিম জনসংখ্যা বৃদ্ধির লক্ষ্যে হিন্দু মেয়েদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ধর্মান্তরিত করে মুসলিম জিহাদি যুবকরা । একটি সংগঠিত আন্তর্জাতিক চক্র ভারতে লাভ জিহাদের জন্য রীতিমতো অর্থায়ন পর্যন্ত করে বলে অভিযোগ ওঠে । একই লক্ষ্যে বাংলাদেশকে হিন্দু শুণ্য করতে ‘লাভ জিহাদ’-এর নামে ইসলামি জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছে সেদেশের কট্টরপন্থী মুসলিমদের একটা বড়সড় চক্র । হিন্দুদের কাছে যা একটা মূর্তিমান সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে ।
এবার দেশের হিন্দু মেয়েদের লাভ জিহাদের বিরুদ্ধে সচেতন করতে প্রচারে নেমে পড়েছে বাংলাদেশের একটা হিন্দু সংগঠন । পাশাপাশি বিভিন্ন ব্যক্তিদের দ্বারা সোশ্যাল মিডিয়ায় এনিয়ে ব্যাপক প্রচার করা হচ্ছে । মহাসপ্তমীর দিন বাংলাদেশের মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গল শহরের বিভিন্ন পূজা মন্ডপে বিলি করা হল ‘লাভ জিহাদ’ সচেতনতামূলক পোস্টার । বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু ছাত্র মহাজোটের সহ-সভাপতি শ্রী পল্লব আচার্য্য এই বিশেষ উদ্যাগে নিয়েছেন । তিনি বলেছেন,’লাভ জিহাদ হল একটা সুপরিকল্পিত ষড়যন্ত্র । এই ষড়যন্ত্র থেকে হিন্দু মেয়েদের বাঁচাতে আমরা এই বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছি ।’ অল্প বয়সী হিন্দু মেয়েদের ‘লাভ জিহাদ’ সম্পর্কে সচেতন করার প্রচেষ্টা ভবিষ্যতেও চালিয়ে যাবেন বলে তিনি জানিয়েছেন ।
পাশাপাশি দুর্গোৎসবের মুহুর্তে সোশ্যাল মিডিয়াতেও ‘লাভ জিহাদ’ সচেতনতামূলক প্রচার শুরু হয়ে গেছে । দীপঙ্কর দে নামে এক ‘এক্স’ ব্যবহারকারী লিখেছেন সাবধান, পূজো প্যান্ডেলে মুসলিম ছেলেরা ঘোরাঘুরি করে,ওরা না ভক্তি দিতে যায় না ঠাকুর দেখতে যায়, ওরা যায় হিন্দু মেয়েদের ফাঁদে ফেলতে ।’ তার এই পোস্টের প্রতিক্রিয়ায় জনৈক অভ্রনীল হিন্দু নামে এক ‘এক্স’ ব্যবহারকারী লিখেছেন,’গতকালকে ২ টোকে কিলাইছি বন্ধুরা মিলে। কিন্তু শত শত এমন। কিভাবে কি করব চিন্তায় আছি। প্রতিটা পূজো কমিটির উচিত সতর্কতা প্রচার করা। সবাই একজোটে করলে প্রশাসনও কিছুই করতে পারবেনা ।’ নিরুপম বসাক লিখেছেন,’অধিকাংশ হিন্দু মেয়েরাও জেনে বুঝে মুসলিম ছেলেদের উপর ঢলে পড়ে।এক কাঠি কোনো দিন বাজে না,আবার এক হাতে তালি বাজে না।আদান প্রদান হলো প্রকৃতির নিয়ম।হয়ত মুসলিম ছেলেরা খুব ভালো ফ্যাশান-প্যাশানের নৌকা বাইতে পারে ।’ পৃত্থিশ বলে এই ব্যবহারকারী লিখেছেন, ‘এদের জন্যই কি ভিএইচপি,বজরং দলের ছেলেরা এত কষ্ট করে মরছে ? তাও আবার গুজরাটের মত হিন্দুবাদী রাজ্যে । এদের জন্যই অনেক ভিএইচপি, বজরং দলের কর্মী খুন পর্যন্ত হয়েছে । আবারও হবে নিশ্চয়….।’
প্রসঙ্গত,ভারতে কেরল,কর্ণাটক,পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ,গুজরাট, রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশসহ একাধিক রাজ্যে ‘লাভ জিহাদ’ প্রসঙ্গটি বারবার উঠে আসে । ২০১০ সালে কেরলের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভিএস অচ্যুতানন্দন প্রথম ‘লাভ জিহাদ’ এর প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন । এরপর মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে তা ধীরে ধীরে প্রসার লাভ করে । ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে কেরল হাইকোর্টে লাভ জিহাদে অভিযুক্ত দুজনের মামলা চলার সময় জানানো হয় যে বিগত ৪ বছরে ৩০০০-৪০০০ এই প্রকার ধর্মান্তরিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। কর্ণাটক সরকার ২০১০ সালে জানায় যে রাজ্যের বড় অংশ জুড়ে প্রচুর হিন্দু মহিলা ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে ।
অন্যদিকে বাংলাদেশের হিন্দু মেয়েদের প্রেমের জালে ফাঁসিয়ে ধর্মান্তরিত করার ষড়যন্ত্র আজও সমানে চলে যাচ্ছে । পাশাপাশি চলছে অপহরণ ও ধর্মান্তরিত করার পর মুসলিম যুবককে বিয়ে করতে বাধ্য করার প্রবনতা । তবে এক্ষেত্রে বাংলাদেশে হিন্দু থেকে মুসলিম ধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার সঠিক পরিসংখ্যান পাওয়া যায়নি । অন্য এক কট্টর ইসলামি রাষ্ট্র পাকিস্তানে হিন্দু খ্রিস্টান মেয়েদের অপহরণ ও জোর করে ধর্মান্তরিত করার ষড়যন্ত্র নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে । অতি সম্প্রতি পাকিস্তানে তিন হিন্দু নাবালিকা বোন পারমেশ, রোশনি এবং চাঁদনিকে সাদিকাবাদ থেকে অপহরণ করা হয় এবং জাভেদ আহমদ কাদরি দ্বারা সুফি দরগা, ভরচুন্ডিতে জোরপূর্বক ইসলামে ধর্মান্তরিত করা হয় বলে অভিযোগ ।।