বসে আছি গ্রামের বাঁকা রাস্তায়। বাঁশের মাচা। আলো অন্ধকারময় গ্রামের মায়াবী রূপ আমাকে অবশ করে দেয় সেই কিশোর কাল থেকে। কচি ধান শিশু আলতো বাতাসে মাথা দোলাচ্ছে। ঝিরি ঝিরি ইলশেগুঁড়ি এই মাত্র হলো। গাছের পাতা টকটকে সবুজ। ভেজা ভেজা যুবতীর মতো গায়ের বর্ণ। জোনাকি ইতিউতি। ঝিঁঝি ডাকছে।
পুলিশ অফিসারের চাকরি। কোলকাতার বুকে। চারিদিকে নেগেটিভিটি। চারিদিকে বিশ্বাস ও অবিশ্বাসের মাঝখানে বসে গদ্যময়তা। তবুও সে গদ্যে এক ভীষণ পুরুষালি নাগরিক জীবনের আকর্ষণ। কিন্তু যখন ফিরে আসি গ্রামের বাঁকা রাস্তায়, অবশ হয়ে যাই বাঁশের মাচায় বসে মেঘের রূপ দেখে। বৃষ্টি ভেজা মেঘ বৈরাগী বাউল। মোহময় কোলকাতা তার মায়াবী আলোয় সম্মোহন করে দেয় মফস্বলি ছেলেদের। কোলকাতা আমিও তোমাতে সম্মোহিত। তোমাতে সম্মোহিত হয়ে ঘুমে হাঁটা আমি – পথ চিনে ফিরে আসি বাঁকা রাস্থায়, গাছ আর ফড়িং এর ঘরে। আমি ফিরে আসি অনুর্বর জলাতে ফুটে থাকা সাদা সাদা শাপলা ফুলের বাড়িতে। খেজুর গাছের গায়ে রাক্ষসের শিং গুলো ভালোবেসে।
বাঁকা রাস্তায় বসে আছি। মানুষের বাড়িগুলো কিছুটা দূরে। হাল কল্মিলতা গুলোর গায়ে গঙ্গা ফড়িং বসে। নীচে কচি ধান শিশু আধ গলা জলে। শোলমাছ ঘাই খেয়ে প্রেমিকাকে ডাকে। চাঁদ আজ সিঁদুর পরেছে। রঙ ভেজা শিউলি ও কামিনীর গন্ধ আসছে নাকে। এ গন্ধ শরীর থেকে সমস্ত অপবিত্রতা দূর করে আমাকে বৈরাগী করে দেয় স্নিগ্ধ চোখের জলে ।।