আমার মনের সবটুকু সৌন্দর্যের স্পর্শে
আমার দেবী মা সৃষ্টি আমার স্বপ্নে
অপরূপ রূপ দেখে মুগ্ধতা আমার দুনয়নে
একটু একটু করে দিন রাত নিদ্রাহীন চোখে
দেবী মাকে রূপ দিতে লাগলাম মনের কল্পনাতে
অদৃশ্য এক শক্তি সৃষ্টির তুলি রঙেতে
দেবী মা জীবন্ত হয়ে উঠতে লাগলেন।
আমি মাকে চোখের আড়াল করলাম না
মায়ের চরণতলে পড়ে রইলাম দিন রাত
সকলে এলো ঢাক- ঢোল-শঙ্খ বাজিয়ে
মহাসমারোহে দেবী মাকে নিয়ে চলে গেলো।
আমার প্রাণ বেদনায় ভেঙে যেতে লাগলো
অব্যক্ত বেদনায় সারা মন ছেয়ে গেলো
ক্ষুধা, তৃষ্ণা ভুলে মায়ের শূন্য স্থানটির দিকে
অপলকে অশ্রুভরা নয়নে বসে রইলাম।
পাঁচটি দিন সকলে আনন্দে মাতলো
দেবী মাকে মহাধূমধামে পূজা করলো
শেষে দশমীতে নানা বাদ্যি বাজিয়ে
নাচতে নাচতে,আনন্দ করতে করতে
গঙ্গাবক্ষে বা জলাশয়ে বিসর্জন দিলো।
আমি ওই পাঁচ দিন চোখের পাতা বন্ধ করলাম না
আমার অন্তরাত্মা আকুল হলো মায়ের তরে
মায়ের স্পর্শ গন্ধ পাবার জন্য ব্যাকুল হলাম।
যে অপরূপ রূপ দিয়ে একটু একটু করে
মনের মণিকোঠা থেকে সৃষ্টি করলাম
তাকে আজ সকলে জলে ভাসিয়ে দিলো।
মা একটু একটু করে জলে লীন হতে লাগলেন
আমার অশ্রুভরা দুনয়ন মায়ের শূন্য বেদীর দিকে
অপলকে বেদনাহত হয়ে শ্যেন দৃষ্টিতে চেয়ে রইলো।
প্রতি বছর এমনি মনের সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে,
আমি আবার এক মাকে মনপ্রাণ দিয়ে সৃষ্টি করবো,
একটু একটু করে রূপ দেবো সবটুকু ভালোবাসা দিয়ে
আর পরিশেষে মা চলে যাবেন আমার ঘর ছেড়ে
আনন্দ দিয়ে লীন হয়ে যাবেন নদীবক্ষে।
আমার অভুক্ত উদর এতই স্বার্থপর
নিজের হাতে সৃষ্ট মাকে চিরদিনের জন্য
ছেড়ে দিতে হয়
দেবী মা সকলকে আনন্দ দিতে দিতে জলাশয়ে
লীন হয়ে যান
আর আমি দীন দরিদ্র ভাঙ্গা ঘরে, ভাঙ্গা মনে,
আবার স্বপ্ন দেখি দেবী মাকে সৃষ্টির স্বপ্ন।
আবার চোখের জলে ভাসবো
যেদিন অন্যের হাতে অর্পণ করবো
যেদিন দশমীর বিজয়ার ঢাকের ধ্বনিতে ধ্বনিত হবে
ঠাকুর থাকবে কতক্ষন
ঠাকুর যাবে বিসর্জন ।।