দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১২ অক্টোবর : আজ বৃহস্পতিবার সকালে পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ায় রেললাইনের পাশে এক অজ্ঞাতপরিচয় যুবকের মৃতদেহ এবং তার কিছুটা পাশেই এক গৃহবধূকে অচৈতন্য অবস্থায় পড়ে থাকার ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায় । রেলপুলিশ যুবকের মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে । পাশাপাশি বধূকে ভর্তি করা হয়েছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে । পুলিশ জানতে পেরেছে, বধূর নাম রাধিকা মণ্ডল(২৩) । ওই যুবককে, কিভাবে তার মৃত্যু হল,এবিষয়ে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ । বধূর জ্ঞান ফেরার পর ঘটনা প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে বিভ্রান্তিকর উত্তর দিচ্ছেন বলে অভিযোগ । এখন এই ঘটনাকে ঘিরে ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে কাটোয়া জিআরপি ৷
জানা গেছে,রাধিকাদেবীর স্বামীর নাম মিঠুন মণ্ডল । মিঠুন কাটোয়া শহরের একটা ওষুধের দোকানে কাজ করেন । তাদের এক নাবালিকা কন্যাসন্তান রয়েছে । মিঠুন মণ্ডলের পৈতৃক বাড়ি কাটোয়া শহরের ঝুপোকালিতলা এলাকায় হলেও তিনি পরিবার নিয়ে কিছুটা পাশেই মাধবীতলার একটা বাড়িতে ভাড়া থাকেন ।
মিঠুন মণ্ডল জানিয়েছেন,তার স্ত্রী রোগা হওয়ার জন্য আয়ূর্বেদিক ওষুধ আনার কথা বলে বুধবার বিকেল ৫ টা নাগাদ নবদ্বীপের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়ে যান । রাত ন’টা পর্যন্ত রাধিকা বাড়ি না ফিরলে তিনি তার স্ত্রীর মোবাইলে ফোন করেন । তার স্ত্রী জানায় যে সে বাড়ি ফিরছে এবং রাতে খাবারের জন্য দই কিনে রাখার কথা বলে । কিন্তু রাত্রি ১১ পর্যন্ত তার স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় তিনি ফের ফোন করেন । তখন রাধিকা তাকে জানায়,কেউ তাঁকে ছুরি মেরেছে । কোনো এক জায়গায় তিনি জখম অবস্থায় পড়ে আছেন,তবে কোন জায়গা তিনি জানেন না ।
জানা গেছে,এরপর শ্বশুরবাড়িতে ফোন করেন মিঠুন মণ্ডল । তারপর মেয়েকে স্থানীয় এক বাসিন্দার বাড়িতে রেখে রাত ২টো নাগাদ চলে যান কাটোয়া থানায় । পুলিশকে ঘটনার কথা খুলে বলেন তিনি । কিন্তু পুলিশও ওই বধূর কোনো হদিশ করতে পারেনি । এরপর এদিন সকালে কাটোয়া-দাইহাঁটের মাঝে বেড়াগ্রাম এলাকার রেললাইনের পাশে রাধিকা মণ্ডলকে পড়ে থাকতে দেখেন স্থানীয় বাসিন্দারা । তার ঠিক কিছুটা পাশেই পড়েছিল ওই অজ্ঞাত যুবকের রক্তাক্ত নিথর দেহ । খবর পেয়ে রেলপুলিশ দু’জনকে উদ্ধার করে কাটোয়া হাসপাতালে আনে ।
জানা গেছে,রেল পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে রাধিকা মণ্ডল বলেছেন,’ট্রেনে একজন অপরিচিত যুবক আমার সোনার দুল ছিনতাই করতে এসেছিল । তিনি প্রতিরোধ করলে সে ছুরি দিয়ে তাকে আঘাত করে । এরপর ওই যুবক তাকে ট্রেন থেকে ঠেলে ফেলে দেয় ।’ কিন্তু কান থেকে দুল ছিনিয়ে নিলে কোনো কানের লতিতে কোনো ক্ষতচিহ্ন নেই কেন? এই প্রশ্নের উত্তরে বধূ বলেছেন যে তিনি নিজেই দুল খুলে দিয়েছিলে । পাশাপাশি ছিনতায়ের ঘটনা ঘটলে ছিনতাইকারীর কিভাবে মৃত্যু হল এবং তার দেহ বধূর পাশে কিভাবে এলো,তানিয়েও প্রশ্ন উঠছে । পুলিশ জানিয়েছে,ঘটনার তদন্ত চলছে । তবে প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত মৃত যুবকের পরিচয় এখনো জানা যায়নি বলে খবর ।।