এইদিন ওয়েবডেস্ক,ইসরায়েল,১০ অক্টোবর : শনিবারের হামলার পর ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ তাদের ভূখণ্ডে প্রায় ১,৫০০ হামাস সন্ত্রাসীর মৃতদেহ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে । খতম সন্ত্রাসবাদীদের তালিকায় রয়েছে হামাসের অর্থনীতি মন্ত্রী জাওয়াদ আবু শামালা এবং হামাসের রাজনৈতিক কার্যালয়ের সদস্য জাকারিয়া আবু মামার । পাশাপাশি ইসরায়েল বলছে, গাজায় তাদের ১৫০ জনেরও বেশি বেসামরিক ও সৈন্যকে অপহরণ করা হয়েছে এবং তাদের পনবন্দি করে রাখা হয়েছে। তাদের কি পরিনত হয়েছে তা অজানা । হামাস সতর্ক করেছে যে বেসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তায় পৌঁছাতে সক্ষম করার জন্য পূর্ব-সতর্কতা ছাড়াই ইসরায়েল প্রতিশোধমূলক বিমান হামলা চালালে প্রতিবারই তারা একজন ইসরায়েলিকে পনবন্দি করে হত্যা করবে । ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ বলছে, গাজা উপত্যকায় এযাবৎ প্রায় ৭৭০ ফিলিস্তিনি মারা গেছে এবং ৪,০০০ জন আহত হয়েছে ।
২৩ লক্ষ জনবসতি বিশিষ্ট গাজা অবরোধ করার কথা ঘোষণা করেছে ইসরায়েল । খাদ্য-বিদ্যুৎ এবং জল বন্ধ করে দিয়েছে কারণ এটি হামাসের মূল ঘাঁটি,সেই কারনে বেছে বেছে হামাসের ঠিকানায় আঘাত করেছে ইসরায়েল । এযাবৎ ১,৮০,০০০
এরও বেশি গাজাবাসীকে গৃহহীন করা হয়েছে, অনেক রাস্তায় বা স্কুলে জড়ো হয়ে আছে, জাতিসংঘ বলেছে,বোমাবর্ষণের কারনে জরুরি কর্মীর জন্য রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী ধ্বংসাত্মক প্রতিশোধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । সেই উদ্দেশ্যে একটি প্রত্যাশিত স্থল হামলার আগে, অনুপ্রবেশের আটকানোর জন্য ইসরায়েলি ট্যাঙ্কগুলি সীমান্তে জড়ো হচ্ছে ।
ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সেস (আইডিএফ) এখন সংরক্ষিত বাহিনীর সংখ্যা বাড়িয়ে ৩,৬০,০০০ করেছে এবং কমপক্ষে ৩৫ টি ব্যাটালিয়ন চারটি বিভাগে সংগঠিত হয়েছে। আইডিএফ বলেছে,ইসরায়েল গাজায় “খুব আক্রমনাত্মকভাবে” প্রতিক্রিয়া জানাবে,যা সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে একটি “গেম চেঞ্জার” প্রমাণিত হবে ।
আইডিএফ-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে যে মার্কিন নিরাপত্তা সহায়তার প্রথম ধাপ ইসরায়েলে যাওয়ার পথে, আরও কিছু আসতে চলেছে। এমএসএনবিসি হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবিকে উদ্ধৃত করে বলেছে যে একটি প্যাকেজ ইস্রায়েলে যাওয়ার পথে, তবে কী অন্তর্ভুক্ত ছিল সে সম্পর্কে আর কোনও বিশদ ভাগ করা হয়নি। এদিকে, ইসরায়েলের বিমান বাহিনী বলেছে যে তারা গাজা উপত্যকায় “সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুর বিরুদ্ধে ব্যাপক আক্রমণ” শুরু করছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে যে হামাসের হামলায় ৯০০ জনেরও বেশি লোক নিহত হয়েছে – যা কর্মকর্তারা ৯/১১ বা পার্ল হারবার এর সাথে তুলনা করেছেন । এই সংখ্যার মধ্যে সসঙ্গীতানুষ্ঠানে আসা প্রায় ২৫০ জনকে হামাসের সন্ত্রাসীরা নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে । পনবন্দিদের মধ্যে কয়েকজনকে গাজার রাস্তা দিয়ে কুচকাওয়াজ করা হয়েছিল ।
মঙ্গলবার ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ৭৫ বছরের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ বিমান হামলা চালায় ।
হামাস সন্ত্রাসীদের “শক্তিশালী প্রতিশোধ” নেওয়ার অঙ্গীকারের মাঝেই এই হামলা চালায় ইসরায়েল ।
হামাসের সশস্ত্র শাখা ইসরায়েলি শহর অ্যাশকেলনে বসবাসকারী লোকদের সতর্ক করেছে যে তাদের স্থানীয় সময় বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলে যেতে হবে – যদিও এই সময়সীমা এখন শেষ হয়ে গেছে।
‘আল কাসাম ব্রিগেডস’ পোশাকি নামে সন্ত্রাসী গোষ্ঠী হামস সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছে যে যুক্তরাজ্যের সময় বিকাল ৩টার মধ্যে ছেড়ে যাওয়ার সতর্কতা ছিল । টেলিগ্রামের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘শত্রুরা আমাদের লোকদের বাস্তুচ্যুত করার অপরাধের প্রতিক্রিয়ায় এবং গাজা উপত্যকার বেশ কয়েকটি এলাকায় তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে, আমরা অধিকৃত শহর অ্যাশকেলনের বাসিন্দাদের পাঁচটার আগে চলে যাওয়ার সময় দিচ্ছি ।’
সময়সীমা শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরে, রকেটগুলি আশকেলনের দিকে ছোড়া হয়। জঙ্গিরা তেল আবিবের বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে আঘাত করার দাবি করেছে, যা ইসরায়েলিরা অস্বীকার করেছে। এদিকে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধে আমেরিকা হস্তক্ষেপ শুরু করে দিয়েছে । ফলে ফিলিস্থিনি সন্ত্রাসী সংগঠনের বিনাশ এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র ।।