এইদিন ওয়েবডেস্ক,কেতুগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০৪ মে : পূর্ব বর্ধমান জেলায় অব্যাহত ভোট পরবর্তী হিংসা । রায়না ও জামালপুরের পর এবার কেতুগ্রামে হিংসার বলি হলেন এক তৃনমুল নেতা । নিহতের নাম শ্রীনিবাস ঘোষ (৫৪) । তাঁর বাড়ি কেতুগ্রাম থানার মালগ্রামে । পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রাম-১ ব্লকের আগরডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত ৯ নম্বর সংসদের সদস্য ছিলেন শ্রীনিবাসবাবু । সোমবার রাতে তাঁকে ঘর থেকে টেনে বের করে পিটিয়ে মারা হয় বলে অভিযোগ । তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে গুরুতর জখম হন আরও দুই তৃণমূল কর্মী । আহতদের মধ্যে চন্দ্রশেখর ঘোষ নামে এক তৃণমূল কর্মীর অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে । এই ঘটনায় বিজেপির দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব । যদিও বিজেপি নেতৃত্বের দাবি কিছু বহিরাগতদের দিয়ে এই ঘটনা ঘটিয়েছে তৃণমূল । উত্তেজনা থাকায় এলাকায় মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ ও র্যাফ বাহিনী ।
রবিবার ভোটের ফল ঘোষণা হতেই পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে হিংসার ঘটনা ঘটে চলেছে । রবিবার রাতে রায়নার সমসপুর ও পরের দিন সোমবার জামালপুরের নবগ্রামে বিজেপি-তৃণমূল সংঘর্ষে উভয় দল দলের মোট ৪ জন নিহত হন । তার জের কাটতে না কাটতেই ফের খুনের ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমান জেলার কেতুগ্রামে ।
আগরডাঙ্গা পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের উপপ্রধান মিঠুন মিঞার অভিযোগ, ‘কয়েক দিন ধরে গ্রামে বোরো ধান কাটার কাজ চলছে । সোমবার রাতে শ্রীনিবাস ঘোষ যখন ধানকাটার কাজের শ্রমিক ঠিক করার জন্য গ্রামের অন্য পাড়ায় যাচ্ছিলেন তখন বিজেপি আশ্রিত দুস্কৃতীরা লাঠিসোঁটা নিয়ে তাঁর উপর চড়াও হয়ে ব্যাপক মারধর করে । সেই সঙ্গে তাঁকে টাঙি দিয়ে কোপানো হয় । তখন আমাদের দলের দুই কর্মী শ্রীনিবাসবাবুকে বাঁচাতে গেলে তাঁদেরও ব্যাপক মারধর করা হয় । এরপর আহত তিন জনকে উদ্ধার করে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে গেলে শ্রীনিবাসবাবুকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা ।’
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শ্রীনিবাসবাবু মালগ্রামের যে সংসদের সদস্য ছিলে ওই এলাকায় ৩০০ এর বেশি ভোটে লিড পেয়েছে বিজেপি । ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই গ্রামে এনিয়ে চাপা উত্তেজনা চলছিল । সোমবার সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তার জের চলে । শেষে সোমবার রাত ৯ টা নাগাদ মালগ্রামে বিজেপি তৃণমূলের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বেধে যায় । মৃত তৃণমূল নেতা শ্রীনিবাস ঘোষের পরিবারের অভিযোগ বিজেপির লোকজন তাঁদের বাড়িতে হামলা চালায় । তারপর তাঁরা শ্রীনিবাসবাবুকে ঘর থেকে বের করে পিটিয়ে মেরে ফেলে বলে অভিযোগ ।
যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কেতুগ্রাম বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী মথুরা ঘোষ । তিনি বলেন,” ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকেই জেলা জুড়ে তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতিদের হামলার শিকার হচ্ছেন আমাদের দলের নেতা,কর্মী ও সমর্থকরা । কেতুগ্রামেও আমাদের দলের কর্মীদের উপর হামলা ও বাড়িতে ভাঙচুর চলছে । হামলার ভয়ে রবিবার রাত থেকেই মালগ্রামে আমাদের দলের কর্মীরা গ্রামছাড়া রয়েছেন । তাই আমাদের দলের কর্মীরা হামলা করেছে বলে যে অভিযোগ তোলা হচ্ছে তা সম্পুর্ন ভিত্তিহীন ।’ তাঁর দাবি,” তৃণমূল বাইরে থেকে লোকজন এনে হামলা চালিয়েছিল । যার জেরেই ওই পঞ্চায়েত সদস্য মারা গিয়েছেন বলে শুনেছি ।’।