দিব্যেন্দু রায়,ভাতার(পূর্ব বর্ধমান),১৯ সেপ্টেম্বর : স্বামী-স্ত্রীর খুটিনাটি বিষয় নিয়ে ঝামেলার জেরে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন এক গৃহবধূ । বধূর মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত না করেই মৃতদেহ দাহ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল শ্বশুরবাড়ির লোকজন । এদিকে খবর পেয়ে বধূর বাপের বাড়ি এলাকা থেকে প্রচুর লোকজন চলে এলে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে । আজ মঙ্গলবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার ভাতার থানার কুমারুণ গ্রামে। পরে ঘটনাস্থলে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে । পুলিশ অর্চনা মাজি(৩৩) নামে ওই বধূর মৃতদেহটি থানায় নিয়ে এসেছে । বুধবার ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ । মৃতার স্বামীর দাবি তার স্ত্রী কিছুদিন ধরেই মানসিক রোগে ভুগছিলেন ।
জানা গেছে,বাপেরবাড়ি বর্ধমান শহরের কাঞ্চননগর এলাকায় বাপের বাড়ি অর্চনা মাজির । বছর ১৮ আগে কুমারুণ গ্রামের বাসিন্দা সুজন মাজির সঙ্গে তাঁর দেখাশোনা করে বিয়ে হয় । তাদের দুই কন্যাসন্তান রয়েছে । বর্ধমান শহরের বাঁকুড়া মোড়ে একটি চায়ের দোকান রয়েছে সুজনবাবুদের । স্বামী-স্ত্রী মিলে সেই দোকান চালাতেন । তাদের দুই মেয়ে সুজনবাবুর বাবা-মায়ের কাছে কুমারুণ গ্রামে থাকে ।
পরিবার ও স্থানীয় সূত্রে খবর,সোমবার কুমারুণ গ্রামে মনসাপুজো ছিল । সেই উপলক্ষ্যে সুজনবাবু ও তার স্ত্রী অর্চনাদেবী বাড়ি এসেছিলেন । এদিন সকালে সাংসারিক খুটিনাটি বিষয় নিয়ে দম্পতির মধ্যে অশান্তি হয় । তারই জেরে শ্বশুরবাড়ির একটা ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মঘাতী হন অর্চনাদেবী । কিন্তু আইন অনুযায়ী অস্বাভাবিক মৃত্যুর ক্ষেত্রে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা জরুরি হলেও বধূর শ্বশুরবাড়ির লোকজন তা না করে মৃতদেহ সৎকারের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দেয় । ইতিমধ্যে কাঞ্চননগর থেকে দুটি গাড়িতে চড়ে বেশকিছু লোকজন চলে আসেন কুমারুণ গ্রামে । তারা উত্তেজিত হয়ে বধূর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের মারধর করতে শুরু করে । তার জেরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায় । খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে ভাতার থানার পুলিশবাহিনী । শেষে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় । যদিও এই ঘটনায় এদিন সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো তরফেই থানায় অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ ।।