দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৮ সেপ্টেম্বর : কাটোয়ার অগ্রদ্বীপের বাসিন্দা টুটুল বিশ্বাস (৪৩) নামে ব্যবসায়ী এক ব্যবসায়ীকে নৃশংসভাবে খুনের ঘটনায় ২ জন ঘাতককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । ধৃতরা হল অগ্রদ্বীপের বাবলাডাঙ্গা গ্রামের খাসপাড়ার বাসিন্দা দিলীপ চৌধুরী (২৬) এবং তার মাসতুতো দাদা মুন্না চৌধুরী (২৭)। জানা গেছে,পুলিশের জেরায় ধৃতরা খুনের কথা কবুল করেছে । তাদের জেরা করে পুলিশ জানতে পেরেছে যে নিহত টুটুল বিশ্বাসের সুদের কারবারের সঙ্গে যুক্ত ছিল দিলীপ ও মুন্নাসহ আরও ৪ জন । তানিয়ে টুটুলবাবুর সঙ্গে ওই চারজনের বিবাদ চলছিল । তার জেরে ঘটনার দিন টুটুলবাবুকে ফোনে ভাগিরথীর তীরে একটা ফাঁকা জায়গায় ডেকে তাকে ধারালো রামদা দিয়ে নৃশংসভাবে কুপিয়ে কুপিয়ে খুন করে চারজন । পরে প্রমান লোপাটের জন্য দেহটির সঙ্গে পাথর বোঝাই বস্তা বেঁধে ভাগিরথীর জলে ফেলে দেয় । আজ সোমবার ধৃতদের কাটোয়া মহকুমা আদালতে তোলা হলে পাঁচদিনের জন্য পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক । পুলিশ জানিয়েছে, বাকি দুই ঘাতকের সন্ধান চলছে ।
গত মঙ্গলবার রাতে মোবাইলে একটা ফোন আসার পর বাড়ি থেকে বেড়িয়ে যান মৃত টুটুল বিশ্বাস । তারপর থেকে তার কোনো সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না । পরের দিন সকালে খোঁজাখুঁজি করতে গিয়ে বাড়ি থেকে বেশকিছুটা দুরে ভাগীরথী নদীর তীরবর্তী এলাকায় ধানজমির পাশে রক্তের দাগ দেখতে পায় পরিবারের লোকজন ও গ্রামবাসীরা । কিছুটা পাশেই পড়ে থাকতে দেখা যায় টুটুলবাবুর মোটরসাইকেলটি । পরে খবর পেয়ে কাটোয়া থানার পুলিশ এলে ফের খোঁজাখুঁজি শুরু হয় । অবশেষে ভাগীরথী নদীর বাঁকের কাছে কোমরসমান জল থেকে টুটুলবাবুর ক্ষতবিক্ষত দেহটি উদ্ধার হয় । এই ঘটনায় নিহতের স্ত্রী সবিতা বিশ্বাস কাটোয়া থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেন।
জানা গেছে,ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মৃত টুটুল বিশ্বাস বেআইনিভাবে সুদে টাকা ধার দিতেন । আর তার খরিদ্দার জোটানোর দায়িত্ব পালন করত দিলীপ চৌধুরী, তার মাসতুতো দাদা মুন্না চৌধুরীসহ চারজন । অবশ্য টাকা আদায়ের দায়িত্ব চারজনেই পালন করত । তবে টুটুলবাবু যে সুদে টাকা ধার দিতেন তার থেকে বেশি সুদ নিত ওই চারজন । এভাবে তারা মোটা টাকা মুনাফা কামাতো । এদিকে এই অবৈধ কারবার করতে গিয়ে চার সঙ্গীর কাছে বেশ কয়েকলক্ষ টাকা পাওনা ছিলেন টুটুল বিশ্বাস । প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান সেই টাকা আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যেই এই খুন । পুলিশ ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে ।।