প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১২ সেপ্টেম্বর : নদীয়ার পর এবার পূর্ব বর্ধমান ।সেপটিক ট্যাংকের ভিতরে নেমে সেন্টারিংয়ের পাটা খুলতে গিয়ে মৃত্যু হল তিন জনের।জখম হয়েছেন আরও দুই জন।এই ঘটনার জেরে মঙ্গলবার বিকালে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে পূর্ব বর্ধমানের রায়না ২ ব্লকের বড়বৈনান গ্রামে।খবর পেয়ে মাধবডিহি থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। মৃতদেহ গুলি পুলিশ উদ্ধার করে। গুরুতর জখম এক জনকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে।মৃত্যুর কারন খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,মৃতরা হলেন
জয়দেব মাল (৩২) আকাশ সাঁতরা (১৮) ও সুন্দরম মালিক (২০)। জয়দেব বাঁকুড়া জেলার কালা পাথর এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে । অপর মৃত আকাশ ও সুন্দরমের বাড়ি বড়বৈনান গ্রামে বলে এলাকাবাসী জানিয়েছে। জখমরা হলেন জগন্নাথ মালিক ও অরুপ মালিক। মাধবডিহি হাসপাতালে জগন্নাথের চিকিৎসা চললেও শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় অরুপ মালিককে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে ।
এলকাবাসীর কথায় জানা গিয়েছে, মাস খানেক আগে বড় বৈনান গ্রামের বাসিন্দা জয়ন্ত মালিকের বাড়িতে সেপটিক ট্যাঙ্ক তৈরি করে রাজ মিস্ত্রিরা।
এদিন দুপুরে সেপটিক ট্যাঙ্কের ঢালাইয়ের পাটা খুলতে আসে শ্রমিকরা। তারা সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে নামে । তাদের সাথেই সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে নামে আমেদাবাদ থেকে হোটেল ম্যানেজমেন্ট পাশ করা জয়দেব মালিকের ছেলে
সুন্দরম । বেশ কিছুটা সময় পেরিয়ে যাবার পরেও
কেউ সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে উঠছে না দেখে পড়শি আকাশ সাঁতরা সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে নামে । তারা কোন সাড়া মেলে না । সণ্দেহ হওয়ায় পড়া প্রতিবেশীরা সেখানে জড়ো হয়ে ডাকা ডাকি শুরু করে । কিন্তু কারুর সাড়া না মেলায় সবাই চিন্তায় পড়ে যান ।
দিলীপ মালিক নামে এলাকার এক বাসিন্দা বলেন, বাঁশ ও মোটা দড়ির সাহায্যে তারা কয়েকজন মিলে সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতর থেকে একে একে পাঁচ জনকে বাইরে বের করে আনেন । তাডের সবাইকে মাধবডিহি ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পাঠানো হয় । সেখানে চিকিৎসক তিনজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। অরুপ নামে একজনের শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় তাকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয় । এসডিপিও (বর্ধমান দক্ষিণ) সুপ্রভাত চক্রবর্তী বলেন,“সম্ভবত বিষাক্ত গ্যাসের কারণেই সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরে দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে আসলে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে“। মাধবডিহি থানার পুলিশ অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরে এপ্রিল মাসের ২৫ তারিখে নদীয়ার ভীমপুরে একই রকম মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে । সেখানেও নবনির্মিত সেপটিক ট্যাঙ্কের ভিতরের ঢালাইয়ের তক্তা পাটা খুলতে নেমে তিন শ্রমিকের মৃত্যু হয় । এর কয়েকমাস কাটতে না কাটতে গত ৩০ আগষ্ট একই রকম ঘটনায় এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়। জখম হয় আরে এক শ্রমিক ।।