হ্যাঁ আমিই সেই পঞ্চপান্ডবের সহধর্মিণী
পাঞ্চালি,
যাকে অর্জুন স্বয়ম্বর সভায় লক্ষ্যভেদে জিতে নিয়েছিলেন!
আমি সেই পাঞ্চালি যাকে ভাগ হতে হয়েছিল
পাঁচ পতির মাঝে,
যাকে কৌরব গণ পূর্ন সভা মাঝে বস্ত্র হরণের মত
নীচ কাজেও কুণ্ঠা বোধ করেনি,
যার অপমানে পিতামহ ভীষ্ম
গুরু দ্রোনের মত মহান পুরুষও ছিলেন নিশ্চুপ ।।
পরম সত্যবাদী ধর্মপুত্রও মাথা নিচু করে মেনে নিয়েছিলেন নিরবে।।
হ্যাঁ আমি সেই পাঞ্চালি যাকে বেশ্যা বলতেও কর্ণের ও ঠোঁট কাঁপে নি এক ফোঁটাও।।
যার অপমানে গোটা সভা মেতে উঠেছিল এক
অমানুষিক হাসি কলরবে,,
হ্যাঁ আমিই সেই যাজ্ঞসেনি যার জন্ম জ্বলন্ত যজ্ঞ কুণ্ড থেকে,
আমিই সেই দ্রুপদ কন্যা দ্রৌপদী,
যার জন্য মহাভারত ।।
আজ আমি আবারও ফিরে এসেছি নুতন রূপে
অগাধ প্রশ্নের মুখমুখী হতে।।
আচ্ছা বলতে পারো!
কেনো এই লাঞ্ছনা শুধু আমার বেলায়!
তোমার কেনো নয়?
আমাকেই কেনো ভাগ হতে হবে তোমাদের মাঝে!
কেনো পণ রাখা হবে মিথ্যা পাশা খেলায়!
আমার প্রশ্ন স্বয়ং গোবিন্দের কাছে,
হয়তো তুমি তোমার কৃষ্ণার মান বাঁচিয়েছিলে ,
তবুও তুমি তো চাইলেই পারতে সব কিছু বন্ধ করতে!
কিন্তু তা তুমি করনি।
আমার প্রশ্ন পিতামহের কাছে,
সেদিন কেন তিনি তাঁর কুলোবধুর
অপমান সহ্য করে ছিলেন নিরবে!
আমার প্রশ্ন আমার পাঁচ স্বামীর কাছে
কিসের অধিকারে আমায় তাঁরা পণ রাখে!
তবে আমি কি শুধুই তোমাদের হাতের পুতুল!
কেনো যুগে যুগে আমার মত পাঞ্চালি দের
সব সময় ভোগ্য বস্তু হতে হয় তোমাদের তৈরি
মহান পুরুষতান্ত্রিক সমাজে।
আবার আমারই সারা শরীরে এঁকে দাও কলঙ্কের
আলপনা!
আর নয়…………
আর নয় এই লাঞ্ছনা!
তবে এবার আমি নই কোনো পাঞ্চালি,
নই কোনো দ্রৌপদী।
তোমার অস্ত্রে তোমাকেই পরাজিত করতে,
আমি হবো শিখণ্ডী।।
এক অঙ্গে নারীবাদী ও পুরুষতন্ত্রের রূপ।।
যার চোখে থাকবে অজস্র লাঞ্ছনার আগুন,
যার প্রতিটি কোথায় থাকবে মিথ্যা প্রবঞ্চনায় শিকার হওয়া শাণিত তীরের ফলা।।
যার প্রতি টি অঙ্গ হবে অপমানে অপমানিত হওয়া
তীব্র যন্ত্রণার শক্তি।।