প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৪ সেপ্টেম্বর : বাড়ির ছেলে মেয়েদের শহরের ইংরেজি মাধ্যম স্কুলে পড়ানোর প্রবণতা বেড়েছে অভিভাবকদের । তা বলে গ্রামীণ এলাকার সরকারী স্কুলের পড়ুয়ারা উপযুক্ত শিক্ষা না পেয়ে স্কুল বিমুখ হয়ে পড়বে এটাও বোধহয় কোন শিক্ষকের কাছে কাম্য নয়।এই বোধ থেকেই গ্রামীণ এলাকার ছেলে মেয়েদের স্কুলমুখী করে তাদের শিক্ষার আলোকে আনার কাজ আন্তরিক ভাবে করে যাচ্ছেন পূর্ব বর্ধমানের রায়না ২ ব্লকের বেলাড় ভুরকুন্ডা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক ডক্টর সুব্রত নায়েক।তাঁকেই এবছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসের দিন রাজ্য সরকার প্রদান করবে শিক্ষক রত্ন সন্মান। এই ঘোষণায় যারপরনাই খুশি ভুরকুন্ডা হাইস্কুলের পড়ুয়া, অভিভাবক ও সহ-শিক্ষরা।
এক আধ বছর নয়,দীর্ঘ ২৯ বছর ধরে শিক্ষকতা করে আসছেন হুগলীর আমামবাগ মহকুমার গোঘাট এলাকার বাসিন্দা সুব্রত নায়েক । প্রথমে তিনি দু’বছর সেন্ট্রাল গভর্নমেন্টের একটি স্কুলে শিক্ষকত করেন। পর তিনি হুগলীর ত্রিরল স্কুলে ১৫ বছর ধরে শিক্ষকতা করেন। পরবর্তীতে প্রায় ১৫ বছর ধরে তিনি রায়নার বেলার ভুরকুন্ডা হাই স্কুলে শিক্ষকতা করছেন। বর্তমানে তিনি এই বিদ্যালয়েরই প্রধান শিক্ষক।স্কুলের প্রায় তিন শতাধীক পড়ুয়ার পঠন পাঠন, সুবিধা ,অসুবিধা সবেরই তিনিই পরিত্রাতা।
প্রধান শিক্ষক সুব্রত নায়েক সোমবার বলেন, আমি প্রধান শিক্ষক বলে কখনও ছাত্র ছাত্রীদের অহমিকা দেখাই নি। বরং উদার ভাবেই সব সময় ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে থাকি। তাদের সমস্যা ও অভাব অভিযোগের বিষয়গুলি শোনার পর সাধ্যমত সমাধানের চেষ্টা করি। সরকারী প্রকল্পের সুবিধা প্রাপ্তি থেকে ছাত্রীরা যাতে বঞ্চিত না হয় সেই বিষয়টি তিনি সবসময় গুরুত্ব দিয়ে দেখেন। এছাড়াও গ্রামীণ এলাকায় থাকা তাঁর স্কুলের পড়াশোনার মান কিভাবে আরো উন্নত করা যায় এবং কেউ যাতে স্কুল ছুট না হয়ে যায় সেই বিষয়টিতে সবথেকে বেশী গুরুত্ব দেন। পরিবারিক অভাব অনটনের কারণে বই খাতার অভাবে কোন পড়ুয়া পড়শোনা ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবলে তিনি এবং সহ-শিক্ষকরা যথাসাধ্য ভাবে তার পাশে দাঁড়ান । কোন পড়ুয়া স্কুলে না আসলে বা পড়াশোনায় পিছিয়ে পড়লে তারও খোঁজ তারা রাখেন বলে সুব্রত বাবু জানান। পাশাপাশি তিনি এও বলেন, খেলাধুলা, সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় পড়ুয়াডের অংশগ্রহন করানো সবেতেই তাঁরা উৎসাহ যোগান ।
প্রধান শিক্ষক সুব্রত নায়েক শিক্ষক রত্ন সন্মান পাচ্ছেন জেনে খুশি পড়ুয়া, সহ- শিক্ষক ও অভিভাবকরা। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাঁর নাম ঘোষনা হওয়ার পরেই আবেগে আপ্লুত গোটা বিদ্যালয়। শুধুমাত্র বিদ্যালয়ের মধ্যেই এই আনন্দের জোয়ার সীমাবদ্ধ নেই। রায়নার বেলার ভুরকুন্ডা এলাকার বাসিন্দারাও প্রধান শিক্ষক সুব্রত নায়েকের শিক্ষক রত্ন সন্মান প্রাপ্তিতে খুবই খুশি।।