জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,দুর্গাপুর(পশ্চিম বর্ধমান),০৪ সেপ্টেম্বর : বিবাহ, অন্নপ্রাশন, উপনয়ন, শ্রাদ্ধ সহ যেকোনো সামাজিক অনুষ্ঠানে সবসময় অতিরিক্ত খাদ্যসামগ্রী থাকবেই। কারণ অনেক সময় দেখা যায় সমস্ত নিমন্ত্রিত অতিথিরা আসেননি। পাশাপাশি নিমন্ত্রণের বাইরেও অতিরিক্ত অতিথি এসে যাওয়ার আশঙ্কায় বাড়তি খাবার প্রস্তুত করে রাখতে হয়। এই অতিরিক্ত খাবার নিয়েই সমস্যায় পড়তে হয় গৃহকর্তাদের। দুস্থদের মধ্যে বিলিয়ে দিতে কুণ্ঠা হয়। যদি ওরা কিছু মনে করে! তাছাড়া কিভাবেই বা বিতরণ করা হবে! এই সমস্যায় পড়েন দুর্গাপুরের বাসিন্দা প্রণব সরকার।
গত ২ সেপ্টেম্বর ছিল প্রণববাবুর মায়ের পারলৌকিক কাজ । হিন্দু শাস্ত্রের নিয়ম অনুযায়ী পারলৌকিক কাজে আত্মীয় স্বজনের সঙ্গে কয়েকজন প্রতিবেশীকে আমন্ত্রণ জানান হয়। তারপরও বেশ কিছু খাবার অতিরিক্ত থেকে যায়। এই অতিরিক্ত খাবার নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েন প্রণববাবু। খাবার নষ্ট করতে মন চায়না। সন্ধ্যার সময় ফোন মারফত খবরটি গিয়ে পৌঁছায় স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত ও জাগো নারী’-র সভাপতি ডাঃ উদয়ন চৌধুরীর কানে। তার নির্দেশে সংস্থার স্বেচ্ছাসেবক বুবুন, সানু, সৌরভ, চিন্টু, মন, ছোটন, বান্টি, মিলনরা রাতের বেলায় পৌঁছে যায় প্রণব বাবুর বাড়িতে এবং তার সক্রিয় সহযোগিতায় অতিরিক্ত খাবার সংগ্রহ করে।
এরপর তারা ফিরে আসে দুর্গাপুর স্টেশন চত্ত্বরে।সেখানে থাকা পথশিশু ও ভিক্ষুকদের পাতে তুলে দেয় সেই খাবার। পেটপুরে খেতে পেয়ে তাদের চোখেমুখে দেখা যায় খুশির ঝিলিক।
‘উত্তিষ্ঠিত জাগ্রত ও জাগো নারী’ সংস্থার কর্ণধার ও স্বেচ্ছাসেবকদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে প্রণব বাবু বললেন – আমার পক্ষে দুর্গাপুর এলাকার সমস্ত দুস্থদের নিমন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। অথচ অতিরিক্ত খাবার ফেলে দিতে মন চাইনি। ফলে সমস্যায় পড়ে যাই। যোগাযোগ করি সংস্থাটির সঙ্গে। যেভাবে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয় তাতে আমি ওদের কাছে কৃতজ্ঞ।
প্রণব বাবুকে ধন্যবাদ জানিয়ে ডাঃ চৌধুরী বললেন, একদিনের জন্য হলেও কিছু অসহায় মানুষ তো পেটপুরে খেতে পেলেন। সেটাই বা কম কিসের? পাশাপাশি তিনি এলাকাবাসীর কাছে আবেদন করেন অনুষ্ঠান বাড়ির অতিরিক্ত খাবার নষ্ট না করে তাদের সাথে যোগাযোগ করলে তারা দায়িত্ব নিয়ে সেগুলি সংগ্রহ করবে এবং অসহায় মানুষদের মধ্যে বিলিয়ে দেবে।।