ধনঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৮ আগস্ট : লন্ডন বুক অফ্ ওয়াল্ড রেকর্ড তৈরি করে, ২০২৩ এ সম্প্রতি পুনে তে পুরস্কৃত হন পূর্ব বর্ধমানের জেলার মঙ্গলকোটের সুখপুকুরিয়া গ্ৰামের রুদ্র প্রসাদ ঘটক । শিল্পীর কাছে এই বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,গত ৫ ই জুন তিনি “লন্ডন বুক ওফ্ ওয়াল্ড রেকর্ড” তৈরি করার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।সেই মতো “লন্ডন বুক ওফ্ ওয়াল্ড রেকর্ড” টিমের সকল শর্তাবলী মেনে নিয়ে, অতি সাবধানতার সাথে তিনি তার সমান্য দক্ষতা দিয়ে কাজ শুরু করেন। বিষয় ছিলো “স্পিড পেন্টিং” অর্থাৎ সল্প সময়ে একটি নির্দিষ্ট মাপের চিত্র অঙ্কন। ৩’×২’ ক্যানভাসে তিনি একটি রাধা কৃষ্ণের মুখমন্ডল অঙ্কন করেন।কাজটি করতে তার সময় লাগে 3 মিনিট 48 সেকেন্ড । যতটা সম্ভব পরিস্কার আঁকার চেষ্টা করেছিলেন অল্প সময়ের মধ্যে ।তবে যে একেবারে নির্বাচিত হয়ে যাবেন এটা তিনি ভাবেননি । দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর ও বিচারকদের নানা বিচারে অবশেষে গত ৫ ই আগস্ট তাঁকে নির্বাচন করা হয় । তাই তারই কিছু প্রাপ্তি আজকের এই পুরস্কার।
তিনি আরও বলেন,’সবটাই আমার শ্রদ্ধেয় গুরু,আমার অনেক আদরের জ্যেঠু সচ্চিদানন্দ ঘটক,ও আমার ছোটো বড়ো শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসা ও আর্শীবাদ এর ফল।তাই এই সম্মান আমি সবার সাথেই ভাগ করে নিতে চাই।’
ছোটো থেকেই মামার বাড়ির শিল্পী পরিবারেই বেড়ে ওঠা রুদ্র প্রসাদ ঘটকের । দাদু শিল্পী সত্যনারায়ণ মহান্তকে দেখে ও কাছ থেকেই প্রথম পথচলা শুরু হয় তার । তার পর বিশ্বভারতী কলাভবন থেকে পঠন পাঠন শেষ করেন ২০১৮ সালে । পঠন পাঠন শেষের দিকে চলাকালীন শিল্পী আরও একটি ডিপ্লোমা কোর্স করেন ,পুনে এফটিআইআই থেকে চলচিত্র শিল্প নির্দেশনা (Flim Art Direction) নিয়ে । তার পর আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি তাঁকে ।।সম্পূর্ণ ভাবে কর্মজীবন শুরু হয়ে যায়।
প্রথমে বেশ কিছু প্রযেক্টে সহকারী হিসেবে তার পর নিজেই নির্দেশক হিসেবে কাজ শুরু করে ফেলেন মুম্বাইয়ে । তখন পেন্টিংকে সম্পূর্ণ পেশা হিসেবে নিয়ে নেন । তবে শিল্পের মাধ্যমে থাকলেও মাঝে বেশ কিছুটা সময় তিনি পেন্টিং থেকে দূরে চলে যান।তবে তা খুব বেশি দীর্ঘায়িত হয়নি । কোভিড ভাইরাস এর সংক্রমন এড়াতে যখন লকডাউন শুরু হয়,গৃহবন্দী অবস্থায় আবার পেন্টিং টা কে আপন মনে করে সৃষ্টির তাগিতে মেতে যান এবং একের পর এক বিষয়ভিত্তিক ও রিয়েলেস্টিক ছবি সৃষ্টি হতে থাকে তার হাতে, ক্যানভাসে । তাছাড়া নিজেকে বারংবার বিভিন্ন নতুন পরিক্ষার মধ্যে রাখতে তিনি পছন্দ করেন । আঁকার মধ্যেও কিভাবে নতুনত্ব আনা যায়, এটা নিয়ে অধ্যায়ন ও চর্চা শুরু করেন ।অবশেষে সংক্রমণ কিছুটা কম হওয়ার পর এক টানা দেশে বিদেশে অনেক একক চিএ প্রদর্শনী করতে থাকেন রুদ্র প্রসাদ ঘটক, তা থেকে বেশ সারা পান তিনি । চলতি বছরের ২০ জুলাই জাতীয় স্বর্নপদক সহ ভারতীয় কলা সম্মান ও ১০ ডিসেম্বর ভারতীয় কলা রত্ন আর্ট অ্যচিভার পুরষ্কার পান । একই বছরে ইন্টারন্যাশানাল থেকেও স্বর্নপদক সহ একাধিক সম্মান পেয়েছেন রুদ্র প্রসাদ ।
তার পরবর্তী পরিকল্পনা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করায় তিনি হেসে উওর দেন,আগামীতে খুব তাড়াতাড়ি আমার লন্ডনে একটি চিত্র প্রদর্শনী হতে চলেছে।
সবার আর্শিবাদ ও শুভকামনায় নিয়ে এই ভাবেই সৃষ্টি করে যেতে চাই নানান শিল্পকর্ম ।।