প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,২৫ জুন : রাজ্যে অব্যাহত শুটআউটের ঘটনা।সেই তালিকায় বারে বারে যুক্ত হচ্ছে পূর্ব বর্ধমান জেলার নাম। মাত্র পাঁচ মাস আগে জাতীয় সড়কের ধারে শক্তিগড়ে দুস্কৃতিদের ছোঁড়া গুলিতে খুন হন কয়লা কারবারী রাজু ঝা ।এই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতে ফের শুক্রবার দিনে দুপুরে শক্তিগড়ে শুটআউটের ঘটনার ঘটলো ।এবার দুস্কৃতিদের ছোঁড়া গুলিতে মারাত্মক জখম হলেন স্বর্ণ ব্যবসায়ী সদীপ দাস। পেটে গুলি লাগায় তিনি দোকানেই লুটিয়ে পড়েই। খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যান সিংহ রায় এর নেতৃত্বে শক্তিগড় থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে তদন্তে যায়। রক্তাত অবস্থায় ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে ভর্তি করা হয়েছে বর্ধমানের একটি বেসরকারী হাসপাতালে।দুস্কৃতিদের সন্ধান পেতে পুলিশ সবরকম ভাবে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে,স্বর্ণ ব্যবসায়ী
সদীপ দাসের বাড়ি বর্ধমানের বৈকন্ঠপুরে। জাতীয় সড়কের ধারে শক্তিগড়ের জোতরামে তাঁর দোকান
। অন্যান দিনের মত এদিনও সকালে দোকান খোলেন সদীপ বাবু । বেলা ১১ টা নাগাদ একটি বাইকে চেপে দুই যুবক তার দোকানের সামনে দাঁড়ায়। তাদের পড়নে ছিল কালো প্যান্ট ও সাদা জামা। চোখে ছিল রঙিন চশমা। দুই যুবকে মধ্যে একজন ক্রেতা সেজে সদীপ দাসের সোনার দোকানে ঢোকে।অপরজন দাঁড়িয়ে থাকে দোকানের বাইরে । পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের কথা অনুযায়ী দোকানের ভিতরে ঢোকা যুবক গহনা লুট করতে গেলে দোকান মালিক সদীপ দাস বাধা দেন।দুস্কৃতিকে জাপটে ধরেন।ওই সময়ে দুস্কৃতি যুবক তার সঙ্গে থাকা আগ্নেআস্ত্র বের করে গুলি চালায়। গুলির শব্দ পেয়ে পশাপাশি দোকানে থাকা লোকজন সেখানে গেলে তাদের রিভালবার দেখিয়ে ওই দুই দুস্কৃতি এলাকা থেকে চম্পট দেয়। গুলিবিদ্ধ হয়ে স্বর্ণ ব্যবসায়ী দোকানেই লুটিয়ে পড়েন। একের পর এক শুটআউটের ঘটনায় শক্তিগড়ের ব্যবসায়ী মহলে যঠেষ্টই আতঙ্ক ছড়িয়েছে।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কল্যান সিংহ রায় বলেন,’এদিনের ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এখনই বিস্তারিত কিছু বলা সম্ভব নয়।’
শক্তিগড়ের ব্যবসায়ীরা জানান,মাত্র পাঁচ মাস আগে পয়লা এপ্রিল ভর সন্ধ্যায় শক্তিগড়ে ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে থাকা ল্যাংচার দোকানের সামনে শুট আউটের ঘটনা ঘটেছিল।ওই দিন জনবহুল ওই জায়গাতেই পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে পরপর গুলি চালিয়ে কয়লা কারবারী রাজু ঝাকে খুন করে পালায় দুস্কৃতিরা। এই ঘটনা জানাজানি হতেই রাজ্য জুড়ে তোলপাড় পড়ে যায়। দক্ষ পুলিশ অফিসারদের নিয়ে গঠিত সিট খুনিদের নাগাল পেতে তদন্তে নামে । পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ড ও বিহারের পাশাপাশি প্রতিবেশী জেলার দুর্গাপুরে বিভিন্ন জায়গায় হানাদিয়ে সিটের তদন্তকারীরা বেশ কিছুদিন বাদে রাজু ঝা কে খুনের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। এরপর চলতি মাসের ১৩ তারিখ কেতুগ্রামে শুটআউটের ঘটনা ঘটে। দুস্কৃতিদের ছোঁড়া একের পর এক গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় কেতুগ্রামের রাজুয়া গ্রাম নিবাসী ইটভাটা মালিক মির্জা সাহিদুল ওরফে বটুর শরীর । ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয় । শুটআউটের ঘটনা বেড়ে চলায় চিন্তিত জেলা পুলিশ ।তাই শক্তিগড়ে এদিনের শুটআউটের ঘটনার পর দুস্কৃতিদের নাগাল পেতে তুঙ্গে উঠেছে জেলা পুলিশের তৎপরতা ।।