দিব্যেন্দু রায়,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),২৪ আগস্ট : ইমাম-মোয়াজ্জেম ও পূজো কমিটিগুলিকে অনুদান দেওয়ার বিরোধিতা করলেন সিপিএমের রাজ্য নেতা মহম্মদ সেলিম । দলীয় কর্মী খুনের ঘটনার প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থানার অমরপুর অঞ্চলের বিষ্ণুপুর গ্রামে আয়োজিত প্রতিসভায় যোগ দেন সিপিএমের এই বর্ষীয়ান নেতা । সভায় বক্তব্য রাখার সময় তিনি বলেন,’মমতা ইমাম-মোয়াজ্জেম ও পুজো কমিটিকে ডেকে ৫০০ টাকা, ১০০০০ টাকা বাড়ানোর কথা বলছেন । হারামের টাকা? লুটের টাকা ? টাকা দিয়ে কিছু বেইমান কিনতে চাইছেন ।’
প্রসঙ্গত,পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগেরদিন বিষ্ণুপুর গ্রামে ভোটকেন্দ্রের মধ্যেই তৃণমূল সিপিএম সংঘর্ষের ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছিলেন কয়েকজন । ভোটের দিনেই মৃত্যু হয়েছিল বিষ্ণুপুর গ্রামের বাসিন্দা জখম সিপিএম কর্মী রাজিবুল হকের । ওই ঘটনায় এযাবৎ ৩-৪ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ । এদিকে দলীয় কর্মীকে খুনের ঘটনায় রাজ্য পুলিশের তদন্ত প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মহম্মদ সেলিম । তিনি বলেন,’আমাদের বিজ্ঞানীরা, প্রযুক্তিবিদের তৈরি করা যন্ত্রপাতি দিয়ে চাঁদের কোথায় পানি আছে,কোথায় বরফ আছে,কোথায় পাথর আছে, সেসব খবর নিতে পারে । আর এই অপদার্থ পুলিশ কোথায় খুনি বসে আছে সেটার খোঁজ নিতে পারে না ? আজ এমন প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়েছে যে এখানে বসে চাদের খবর নেওয়া যাচ্ছে । আর খুনিরা জেলার কোন মন্ত্রীর বাড়িতে ঢুকছে,কোথায় গিয়ে আগাম জামিন নেওয়ার চেষ্টা করছে,এই পুলিশ জানে না ? সব জানে ।’ পরে তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে বলেন,’রাজিবুলকে যারা খুন করেছে তারা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে৷ দেখা যাচ্ছে, যে খুনি সে ওপরতলার নেতাদের সঙ্গে পার্টি করছে । একই গাড়িতে চেপে যাচ্ছে৷ ব্লকের অফিসার,এসডিপিও থেকে ওপরতলার অফিসাররা,আইসি, সব পকেটে পোরা৷ কারন বালির টাকা । জঙ্গলের লুট আর নদীর লুট বন্ধ করতে হবে । পুলিশ প্রশাসন যদি না করে তাহলে মানুষ করবে। সেজন্য মানুষ কে সংগঠিত হতে হবে ।’ তিনি হুঁশিয়ারি দেন,’পুলিশ অপরাধীকে ধরবে,নাকি মানুষ অপরাধীকে তাড়া করে মারবে, সেটা রাজ্যের পুলিশ ঠিক করুক ।’
পাশাপাশি তিনি পুলিশকে নিশানা করে বলেন,’এখন দেখবেন পুলিশকে দেখলেই মানুষ মারছে, তাড়া করছে । কারন পুলিশের উপর মানুষের রাগ বেড়ে গেছে । যদিও আমরা তা চাই না ।’
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক ব্যানার্জিকে অবিলম্বে গ্রেফতারের দাবিও জানান মহম্মদ সেলিম । তিনি বলেন,’ভাইপো দেখছেন না, বিদেশ চলে গিয়েছিল । গতকাল,পরশু ইডি সব বাড়িতে গিয়ে রেড করেছে । শিক্ষক নিয়োগের দূর্নীতির টাকা কালিঘাটে পিসি আর ভাইপোর খাতায় জমা হয়েছে । সেই টাকা বিদেশী মডেলদের একাউন্ট ভাড়া করে তৃণমূলের সবচেয়ে বড় নেতারা সেখানে টাকা পাচার করেছে । সব হদিশ পাওয়া গেছে । ইডি-সিবি আইকে বলেছি,তোমরা বাংলার পুলিশের মত অপদার্থ হয়ো না । আর মমতা বলছে আমার বাড়িতে আসছে ইডি-সিবি আই ? কেন যাবে না ? ওই ভাইপো আর মমতার ভাই-বউদিরও নাম আছে । গ্রাম বাংলার ছেলে মেয়েদের লুট করা টাকা জমা হয়েছে । এই অপরাধী অভিষেক ব্যানার্জিকে গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি ।’
রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটককেও এদিন নিশানা করেন সেলিম । তিনি বলেন,’মন্ত্রী মলয় ঘটককে ১২ বার ডেকেছে ইডি-সিবি আই, যায়নি । আর এখন হাসপাতালে চলে গেছে । হাসপাতালে গিয়েও পার পাবে না ।’
মহম্মদ সেলিমের বক্তব্য শুনুন 👇
দূর্নীতির পাশাপাশি ভিন রাজ্যে কাজে গিয়ে পরিযায়ী শ্রমিকদের মৃত্যুতে রাজ্যের কর্মসংস্থান নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে সেলিম । রাজ্যের খাতায় পরিযায়ী শ্রমিকের রেকর্ড রাখা এবং ভিন রাজ্যে তাদের নিরাপত্তার দাবি তোলেন তিনি ।।