দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৮ আগস্ট : পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়ার গাজিপুর অঞ্চলের খাসপুর গ্রামে শতাব্দী প্রাচীন মনসা দেবীর পূজো শুরু হল আজ শুক্রবার থেকে । কাটোয়া থানার খাসপুর, দেয়াসিন, গড়াগাছি ,কুলগাছি সহ প্রায় আটটি গ্রামে মেতে উঠেছে এই পূজো ঘিরে । প্রতি বছর শ্রাবণ মাসেন সংক্রান্তি তিথিতে খাসপুর গ্রামে দেবী মনসার পূজো হয়ে আসছে । গ্রামের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে ব্রহ্মানী নদী । নদীর তীরে একটি প্রাচীন বটগাছের নীচে সাড়ে তিনশো বছরের বেশি সময় আগে থেকে এই পূজো হয়ে আসছে ।
এই পূজোর সূচনার পিছনে একটা কাহিনী প্রচলিত আছে । উল্লেখ্য, দেবাদিদেব মহাদেবের মানসকন্যা দেবী মনসার অপর নামই ব্রহ্মানী । কথিত আছে, প্রতি বছর নিয়ম করে বর্ষাকালে প্লাবিত হত গোটা এলাকা । পাশাপাশি বাড়ত সাপের উপদ্রব । আর বর্ষার সময় বন্যার কবল ও সাপের প্রাদুর্ভাব থেকে বাঁচতে সাড়ে তিনশো বছরের বেশি সময় আগে ব্রহ্মানী বা মনসা দেবীর আরাধনা শুরু করেছিলেন গ্রামবাসীরা ।
এদিন গ্রামের পুরুষ ও মহিলা ভক্তরা নানান রঙে চিত্রিত মাটির কলসি মাথায় নিয়ে ব্রহ্মানী নদী থেকে পূজোর জল আনতে যান । বর্নাঢ্য শোভাযাত্রা সহকারে বট গাছের তলায় দেবীর স্থানে ঘট নিয়ে আসেন তাঁরা । কৃষিকাজে ব্যবহৃত মই-এ পুজোর ডালি সাজিয়ে পুজো দিতে আসেন পুন্যার্থীরা। তারপর মাটির তৈরী সাপ জড়ানো ওই ঘটে শুরু হয় পূজো । পুজোর সময় বেহুলা-লখিন্দরের জীবন কাহিনীর উপর রচিত ঝাপান গান পরিবেশিত হয় । চারদিন ধরে চলবে এই পূজো । এলাকার গ্রামগুলির অনেকেই ভিন রাজ্যে কাজ করেন। মনসা পুজোর আগে তারা বাড়ি চলে আসেন । এই পূজো ঘিরে অকাল শারোদৎসবে মেতে ওঠে খাসপুর সহ আশপাশের আটটি গ্রাম ।।