এইদিন ওয়েবডেস্ক,মস্কো,১৬ আগস্ট : ‘দুর্বল’ ইউক্রেনকে মরন কামড় দিতে কুপিয়াস্ক অঞ্চলে এক লাখের বেশি সেনা এবং প্রচুর পরিমাণে ভারী অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন করেছে রাশিয়া । যেকারণে ইউক্রেন যুদ্ধের গতিপথ যেকোনো সময়ে বদলে যেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে । এদিকে দক্ষিণ প্রান্তে রাশিয়ার প্রতিরক্ষাব্যূহ ভেদ করতে সক্ষম হয়নি ইউক্রেন । এই অঞ্চলে কুপিয়াস্ক, লাইমেন ও বাখমুতে ইউক্রেনীয় বাহিনী যে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে, তাতে করে মনে হচ্ছে পুরো যুদ্ধ একটা নিষ্পত্তির দিকে যেতে পারে । এদিকে রাশিয়ার এই পরিকল্পনা দেখে বাইডেন প্রশাসন তড়িঘড়ি করে মার্কিন কংগ্রেসের কাছে ইউক্রেনের জন্য ২০ বিলিয়ন ডলার সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।কিন্তু এবার মার্কিন কংগ্রেস বাইডেনের এই প্রস্তাবে খুব সহজে সম্মতি দেবে কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছে । ইউরোপও এই ব্যয়বহুল ও কঠিন যুদ্ধের বিকল্প সমাধান খোঁজার ব্যাপারে বিকল্প রাস্তার সন্ধান শুরু করে দিয়েছে । ফলে বর্তমানে অনেকটাই ব্যাকফুটে রয়েছেন ভলোদিমির জেলেনস্কি ।
যুদ্ধকে প্রলম্বিত করার যুক্তরাষ্ট্রের যে নীতি-কৌশল, তার অর্থ ইউক্রেনের পরাজয়। এ বিষয়ে উদ্বেগ ক্রমশই বাড়ছে। মার্কিন কংগ্রেসে বিরোধীরা যখন সংখ্যাগরিষ্ঠতার খুব কাছাকাছি, সে সময় ইউক্রেন যদি যুদ্ধক্ষেত্রে বড় কোনো বিপর্যয়ের মুখে পড়ে তাহলে তারা দেশটিকে আর্থিকভাবে সহায়তা দেওয়ার চিন্তা থেকে সরে আসতে পারে। একটা বিষয় হলো ওয়াশিংটনের কোনো রাজনীতিবিদের পক্ষে ইউক্রেন যুদ্ধের পক্ষে জনসমর্থন তৈরি করা অসম্ভব।
এদিকে রুশ বাহিনীর অভিযান সম্পর্কে, বিশেষ করে কুপিয়াস্ক অঞ্চলে তাদের গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য পাওয়া খুবই কঠিন। রাশিয়া তাদের অভিযানকে আক্রমণাত্মক অভিযান না বললেও অসমর্থিত সূত্রে জানা যাচ্ছে, ওই অঞ্চলে রাশিয়া এক লাখ কিংবা তার বেশি সেনা এবং প্রচুর পরিমাণে ভারী অস্ত্র ও সাঁজোয়া যান মোতায়েন করেছে।এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো বিএম-২১ মাল্টিপল রকেট লাঞ্চারের বহর ওই এলাকার দিকে নিয়ে যেতে দেখা গেছে। এই খবরও এসেছে যে ইউক্রেনের সেনারা সেখানে যুদ্ধ করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। এই বিদ্রোহ দমন করা হয়েছে বলেও খবর পাওয়া গেছে।
ওয়াগনার গ্রুপের হাতে বাখমুত শহরের পতনের পর জেলেনস্কি আশা করেছিলেন, শহরটির নিয়ন্ত্রণ তিনি আবার ফিরিয়ে নেবেন। কিন্তু এ মুহূর্তে বাখমুত শহরের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর্যায়ে তার বাহিনী নেই। ইউক্রেনীয় সেনা শহরটির উত্তর ও দক্ষিণ অংশের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। সর্বশেষ তথ্য থেকে জানা যাচ্ছে, প্রথম দিকে দুই দিক থেকেই জেলেনস্কির বাহিনী অগ্রসর হলেও এখন তারা পিছিয়ে আসতে বাধ্য হচ্ছে । আর এ কারণে বাখমুত বিজয়ে জেলেনস্কির স্বপ্ন অধরাই থেকে গেছে ।
এদিকে বিশাল কোনো আক্রমণে না গিয়ে বরঞ্চ চেয়ে ধীরে ধীরে ইউক্রেনকে শক্তিহীন করতে চাইছে রাশিয়া । পাশাপাশি পশ্চিমি দেশগুলির মধ্যে বিভাজনের প্রক্রিয়া চালিয়ে যাচ্ছেন ভ্লাদিমির পুতিন । পুতিনের যুদ্ধ পরিকল্পনাকারীরা ভালো করেই জানেন কখন কী করতে হবে। তাঁরা এখন মনে করছেন, বড় আক্রমণ অভিযান শুরু করার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আগামী কয়েকদিন কুপিয়াস্কে রাশিয়ার বড়সড় অভিযান প্রকাশ্যে আসতে পারে ।।