দেখতে দেখতে আজ আমার বয়স
৭৭ বছর হয়ে গেল।
মা যখন সন্তান প্রসব করে
যন্ত্রনায় কুঁকড়ে যায়
চারদিকে ভেসে যায় শোণিত ধারায়।
আমার ভূমিষ্ঠ হওয়ার অনেক আগে থেকেই
ভারতমাতা তাজা রক্তে সিক্ত হয়েছিল।
তবেই তো আমার জন্ম !
যখন আমি শৈশবে ছিলাম
তখন আমার আশেপাশে
ছিল শান্ত পরিবেশ।
ঝলমলে এক সকাল
সদা হাস্যোজ্জ্বল মানুষের মুখ
ছিল সৌভাতৃত্বের বন্ধন।
ছিল না হিংসা, বিবাদ, মারামারি ।
আমার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে দেখছি
আস্তে আস্তে যেন সব পাল্টে যেতে থাকল।
যখন আমি যুবতী, তখন আমার চারপাশের মানুষ গুলো আমাকে নিয়ে কত উন্মাদনা।
সাড়ম্বরে পালিত হত আমার জন্মদিন।
কত মানুষের মুখে উচ্চারিত হত সেই মহামন্ত্র ধ্বনি।
এখন আমাকে বার্ধক্য গ্রাস করেছে ।
আমি চলশক্তি হীন হয়ে পড়ছি।
কমে আসছে আমার কদর।
আর সেইভাবে পালিত হয় না জন্মদিন।
সেই মহামন্ত্র ধ্বনি আর সেই ভাবে উচ্চারিত হয় না।
আমাকে নিয়ে চলছে যথেচ্ছাচার।
স্বার্থপর, আত্মকেন্দ্রিক মানুষেরা
আমার “আমিত্ব” পদদলিত করে রেখেছে।
বয়স হলে সবাই তাকে
বাতিলের দলে ফেলে দেয়।
আমিও তাই !
দুঃখ নেই আমার।
জন্ম যখন হয়েছে আমার,
মৃত্যু অবধারিত !
চলে তো যেতেই হবে,
কিন্তু কি দেখে গেলাম আমি!
আর কি এনেছিলাম একদিন!
আরও একটা নতুন “আমি” র হোক জন্ম ।
সব জঞ্জাল সাফ করে দিয়ে
নিয়ে আসুক নতুন ভোর।
কোনো স্বেচ্ছাচারিতার জন্ম
যেন না হয় !
হে বিধাতা !
জন্ম নিক আমার মত আর এক “স্বাধীনতা” ।