জ্যোতি প্রকাশ মুখার্জ্জী,শিয়ালদহ,০৭ আগস্ট : এই প্রথমবারের জন্য প্রকাশিত হতে চলেছে শারদীয় পত্রিকা। স্বাভাবিক ভাবেই মানসিক চাপের সঙ্গে সঙ্গে একরাশ উৎকণ্ঠা তো থাকবেই। উদ্দেশ্য যেখানে মহৎ ও সংকল্প যেখানে দৃঢ় সেক্ষেত্রে সমস্ত পারিপার্শ্বিক প্রতিকূলতা যে সহজেই দূর করা যায় তার প্রমাণ পাওয়া গেল ‘আত্তীকি’ সাহিত্য পত্রিকা গোষ্ঠীর ক্ষেত্রে।
রবিবার শিয়ালদহের কৃষ্ণপদ ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট হলে এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে শতাধিক কবি-সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে এবং দেড় শতাধিক কবির সৃষ্টি সমৃদ্ধ ‘আত্তীকি’ সাহিত্য পত্রিকা গোষ্ঠীর প্রথম শারদীয় পত্রিকা ‘ত্রিনেত্র’ প্রকাশিত হয়। একইসঙ্গে প্রকাশিত হয় বারোজন অন্তরঙ্গ কবি-বন্ধুর ‘বারো ইয়ারীর কবিতা সংকলন’। বর্ণময় এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কবি অরুণ কুমার চক্রবর্তী, কবি-সহিত্যিক বৈজয়ন্ত রাহা, অশোক কুমার চক্রবর্তী, রথীন্দ্রনাথ রায়, সীতারাম মন্ডল, বিশ্বনাথ চৌধুরী, বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী গৌতম চক্রবর্তী, সমাজসেবী শিবানী মিত্র, অসীম দাস সহ সাহিত্য জগতের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব।
উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে উপস্থিত প্রত্যেক অতিথি ও কবি-সাহিত্যিকদের যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে বরণ করে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে মাটির গান ও মাটির জিনিস তৈরির ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য পুরস্কৃত হন বিশিষ্ট গায়িকা স্নেহা চৌধুরী ও কবি অদিতি সরকার। সম্মান জানানো হয় বিশিষ্ট সমাজসেবী সিস্টার পূর্ণিমা দাসকে।’আত্তীকি’ পত্রিকার সম্পাদিকা লোপামুদ্রা মুখার্জ্জী ও সভাপতি প্রদীপ বসু একজন মেধাবী নার্সের হাতে স্মারক ও তার প্রয়োজনীয় একটি গুরুত্তপূর্ণ পাঠ্য পুস্তক তুলে দেন।
বাহ্যিক সৌহার্দ্য থাকলেও সাধারণত একটা গোষ্ঠী সহজে অপর একটা গোষ্ঠীর প্রশংসা করতে চায়না। কিন্তু এক্ষেত্রে ব্যতিক্রমী ভূমিকায় দেখা গেল ‘আত্তীকি’ গোষ্ঠীকে। সুন্দরভাবে নিজেদের গ্রুপ পরিচালনা করার জন্য ও সমাজ সেবামুলক কাজের জন্যে মানপত্র ও স্মারক দিয়ে সন্মাননা জ্ঞাপন করা হয় ‘টুইঙ্কেল স্টার’-এর প্রধান শিবানী মিত্র ও অস্হি বিশেষজ্ঞ ডা: মহম্মদ সালামুদ্দিনকে।
এর আগে প্রদীপ প্রজ্বলিত করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন অরুণ চক্রবর্তী। তার দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন মঞ্চে উপস্থিত অন্যান্যরা। অনুষ্ঠানে উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট সঙ্গীত শিল্পী মন্দিরা মুখার্জ্জী। মূলত তার আন্তরিক প্রচেষ্টায় এতবড় এই অনুষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়।
অনুষ্ঠানে নবীন কবিরা স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। অন্যদিকে সাহিত্যচর্চার বিষয়ে নবীন প্রতিভাদের সুপরামর্শ দেন প্রবীণরা। এক সময় কবিতা পাঠ ও সাহিত্য বিষয়ে মননশীল আলোচনা অনুষ্ঠানটিকে অন্য উচ্চতায় পৌঁছে দেয়। তিন ঘণ্টা ব্যাপী এই অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন পত্রিকার সম্পাদিকা লোপামুদ্রা মুখার্জী।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত প্রত্যকের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে লোপামুদ্রা দেবী বললেন – এই প্রথমবারের জন্য শারদীয় পত্রিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছি। ফলে আশঙ্কা মিশ্রিত উৎকণ্ঠা তো ছিলই। কিন্তু সবার সহযোগিতায় অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়। তিনি আরও বলেন – মন্দিরা দিদি যদি পাশে না থাকতেন তাহলে যথেষ্ট সমস্যা হতো। তার প্রতি রইল অশেষ শ্রদ্ধা ।।