এইদিন ওয়েবডেস্ক,আউশগ্রাম(পূর্ব বর্ধমান),০১ আগস্ট : স্ত্রী ও দুই ছেলেমেয়ে থাকা সত্ত্বেও গ্রামেরই এক বিধবা মহিলাকে বিয়ে করেছেন স্বামী । কিন্তু দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়ি ঢোকানোয় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল প্রথম স্ত্রী । তার জেরে প্রথম স্ত্রীকে বেদম মারধরের অভিযোগ উঠল স্বামীর বিরুদ্ধে । পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থানার বসন্তপুর গ্রামের ঘটনা । আক্রান্ত বধূ সামসুরন্নেহার বেগমকে প্রথমে বননবগ্রাম হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয় । কিন্তু তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে । এদিকে এই ঘটনার পর আক্রান্ত বধূর শ্বশুরবাড়ির সামনে এসে তুমুল বিক্ষোভ প্রদর্শন শুরু করে গ্রামবাসীরা । পরে বধূর মেয়ে আসমিনা পারভিন (১৯) এই ঘটনায় তার বাবা আলি হোসেন মণ্ডল,দাদু, ঠাকুমা ও বাবার এক মাসিসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন । অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ৫ জনকেই আটক করেছে ।
জানা গেছে,বসন্তপুর গ্রামের গ্রামের বাসিন্দা পেশায় গাড়িচালক হোসেন মণ্ডলের সঙ্গে প্রায় ২০ বছর আগে বিয়ে হয়েছিল সামসুন্নাহার বেগমের । মেয়ে আসমিনা পারভিন ছাড়াও তাদের একটি ১৪ বছরের ছেলে রয়েছে । তা সত্ত্বেও প্রতিবেশী বিধবা মহিলা পুসকি মিঞার সঙ্গে পরকীয় সম্পর্ক গড়ে ওঠে হোসেন মণ্ডলের । বছর ছয়েক আগে তিনি পুসকিকে বিয়ে করেন ৷ কিন্তু প্রথম স্ত্রী সামসুরন্নেহার বেগমের বাধায় তিনি দ্বিতীয় স্ত্রীকে বাড়িতে আনতে পারছিলেন না । এনিয়ে হোসেন ও সামসুরন্নেহারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই ঝামেলা চলছিল ।
আক্রান্ত বধূর মেয়ে আসমিনা বলেন,’আজ মঙ্গলবার সকালের দিকে বাবা ও মায়ের মধ্যে তুমুল ঝগড়াঝাটি হচ্ছিল । সেই সময় মায়ের আর্ত চিৎকার শুনে আমি বাড়ির দু’তলায় ছুটে যাই । গিয়ে দেখি মাকে একটা লাঠি দিয়ে ব্যাপক মারছেন বাবা । আমি বাঁচাতে গেলে আমকেও লাঠি দিয়ে পেটায় এবং লাথি মেরে আমাকে দিয়ে সিঁড়ি থেকে ফেলে দেয় । তারপর আমি বাড়ির বাইরে এসে লোকজন ডাকাডাকি করি।’
জানা গেছে,আসমিনা পারভিনের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ছুটে এসে সামসুরন্নেহার বেগমকে বাঁচায় । পরে মা ও মেয়েকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায় । এদিকে ইতিমধ্যে সামসুরন্নেহারের বাবার বাড়ির লোকজন খবর পেয়ে বসন্তপুর গ্রামে চলে আসে । গ্রামে ঘটনার কথা চাওড় হয়ে গেলে আলি হোসেনের বাড়ির সামনে প্রচুর লোকজন জড়ো হয়ে যায় । শুরু হয় বিক্ষোভ । পরে খবর পেয়ে পুলিশ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় । আক্রান্ত বধূর মেয়ে আসমিনা পারভিনের অভিযোগ,’পুসকি মিঞা নামে ওই মহিলাকে বাড়িতে নিয়ে আসার বিষয়ে আমার দাদু, ঠাকুমা ও বাবার এক মাসি মদত দিত । আমার মাকে ওরা কার্যত কোনঠাসা করে রেখে দিয়েছিল ।’ পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে ।।