এইদিন ওয়েবডেস্ক,তেহেরান,২৪ জুলাই : হিজাব আইন অনুসরণ না করায় ২২ বছরের কুর্দি তরুনী মাহাসা আমিনিকে নৈতিকতা পুলিশ পিটিয়ে মারার পর থেকেই ইরানের ইসলামি শাসকের বিরুদ্ধে ক্ষোভের আগুন জ্বলছে । প্রতিবাদী আন্দোলনের উপর লাগাম টানতে রীতিমতো দমনপীড়ন চালিয়ে যাচ্ছে ইরানি শাসক । এযাবৎ রেকর্ড পরিমান আন্দোলনকারীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে । গ্রেফতার হওয়া কয়েক হাজার আন্দোলকারী কারাগারের মধ্যে অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হচ্ছে । শাসকের এই অত্যাচারে অতিষ্ট ইরানিরা ক্রমশ ইসলাম ধর্ম বিমুখ হয়ে পড়ছে বলে খবর । দেশের সিংহভাগ মানুষ মসজিদে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন । বাড়ছে ইসলাম ত্যাগের হিড়িক ।
অসমর্থিত সূত্রের খবর অনুযায়ী, ইরানিদের মধ্যে এখন মাত্র এক তৃতীয়াংশ মানুষ ইসলামের ধর্মীয় রীতিনীতি পালন করছেন । বাকি মানুষ ইসলামকে মোটেই অনুসরণ করে চলছেন না । বর্তমানে সুন্নিদের চেয়ে বেশি জরথুস্ট্রিয়ান রয়েছে ইরানে এবং শিয়াদের সংখ্যা দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে । নাস্তিকতা এবং খ্রিস্টধর্ম উভয়ই বৃদ্ধি পাচ্ছে, কিন্তু ইরানের বর্তমান অবস্থাকে সুপরিকল্পিত ভাবে আড়াল করার চেষ্টা করছে শাসনযন্ত্র ।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী,ইরানিদের স্বধর্ম ত্যাগের প্রবনতা রুখতে ব্যাপক ধরপাকড় চলছে । বিগত সাত দিনে ইরানের পাঁচটি শহর জুড়ে ৫০ জনেরও বেশি খ্রিস্টান ধর্মান্তরিতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে । নতুন প্রতিবেদন আসতে থাকায় সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে । তেহরান, কারাজ, রাশত, ওরুমিয়েহ এবং আলিগৌদারজ শহরে তাদের বাড়িতে বা গির্জায় গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে অন্তত ৫১ জনকে অজানা অভিযোগে আটকে রাখা হয়েছে, অন্যরা জামিনে মুক্তি পেয়েছে ।
সংবাদমাধ্যম আর্টিকেল ১৮-এর অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর মনসুর বোরজি (Mansour Borji) মন্তব্য করেছেন,’খ্রিস্টানদের দেশব্যাপী গ্রেপ্তারের এই আকস্মিক বৃদ্ধির কারণ এই পর্যায়ে স্পষ্ট নয় । যা স্পষ্ট তা হল যে ইরান নাগরিক স্বাধীনতার উপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে এবং খ্রিস্টানদের মতো ঐতিহ্যগতভাবে দুর্বল গোষ্ঠীগুলি শাসকের প্রথম টার্গেট হচ্ছে ।’ তিনি বলেন, ‘সাম্প্রতিক মাসগুলিতে রাস্তা থেকে তথাকথিত ‘নৈতিকতা পুলিশ’ বাহিনীর আপেক্ষিক প্রত্যাহার সম্ভবত সহিংসভাবে দমন করা কয়েক মাস বিক্ষোভের পরে শান্তি পুনরুদ্ধারের একটি প্রচেষ্টা ছিল । তবে নৈতিকতা পুলিশকে পুনঃপ্রবর্তন আক্রমনাত্মক প্রতিবাদকে পুনরুজ্জীবিত করতে পারে,যার প্রতিফলন ইতিমধ্যে রাস্তায় দেখা যাচ্ছে ।’।