এইদিন ওয়েবডেস্ক,মালদা,২২ জুলাই : শুক্রবার
কলকাতার ধর্মতলায় ২১ জুলাইয়ের সভামঞ্চে মনিপুরে দুই মহিলার উপর মধ্যযুগীয় বর্বরোচিত আচরণের প্রতিবাদ জানিয়ে বিজেপি সরকারকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন,’মনে রাখবেন মেয়েরা আমাদের কাছে দূর্গা-কালী । আপনারা যদি মহিলাদের ইজ্জত নিয়ে খেলা করেন তাহলে আগামী নির্বাচনে মহিলারাই আপনাদের ছুড়ে ফেলে দেবে ।’ কিন্তু খোদ পশ্চিমবঙ্গেই মনিপুরের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হতে দেখা যাচ্ছে ।
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়ায় একটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে । সেই ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে একদল জনতা ঘিরে ধরেছে দুই মহিলাকে । দুই মহিলাকে তারা ব্যাপক জুতোপেটা করছে । ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে মহিলাদের পরনের শাড়ি,ব্লাউজ । খুলে দেওয়া হয়েছে মহিলাদের পরনের শায়া । তারপর দুই নগ্ন মহিলার উপর চলছে বর্বরোচিত নির্যাতন । অত্যাচারিত মহিলারা নিজেদের সম্ভ্রম বাঁচাতে একে অপরকে জড়িয়ে ধরছেন । বাঁচনোর জন্য আর্ত চিৎকার করছেন তাঁরা । কিন্তু প্রচুর মানুষ সেই দৃশ্য দাঁড়িয়ে দেখলেও কেউ তাঁদের বাঁচাতে ছুটে আসেনি । এমনকি ঘটনাস্থলে পুলিশও উপস্থিত ছিল । আর পুলিশের সামনেই চলে দুই মহিলাদের উপর চলে মধ্যযুগীয় বর্বরোচিত আচরণ । যদিও এক্ষেত্রে হামলাকারীরা সকলেই মহিলা । গত ১৯ জুলাই ঘটনার পর এদিন পর্যন্ত একজন হামলাকারী গ্রেফতার হয়নি বলে অভিযোগ ।
ঘটনার বিবরণে জানা গেছে,ঘটনাটি ঘটেছে মালদার বামোনগোলা থানার পাকুয়াহাট এলাকায় । আক্রান্ত দুই মহিলা আদিবাসী সম্প্রদায়ের । ঘটনার দিন পাকুয়াহাটে সাপ্তাহিক হাট বসেছিল । প্রচুর মানুষ হাটে জড়ো হয়েছিলেন । সেই সময় পকেটমার সন্দেহে ওই দুই আদিবাসী মহিলাকে ঘিরে ধরে চলে অমানবিক নির্যাতন ।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র অঙ্কন দত্ত । তিনি বলেন,’পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মনিপুর দেখতে পান,মনিপুর নিয়ে তিনি গলার শিরা ফুলিয়ে প্রতিবাদ করেন । কিন্তু তাঁর রাজ্যেই পুলিশের সামনে এমন ঘটনা ঘটছে,তিনি দেখতেও পান না । প্রতিবাদ করা তো দূরের কথা, তিনি কোনো ব্যবস্থাই নেন না । এটা ওনার দ্বিচারিতা ।’ হাওড়ার পাঁচলায় বিজেপি প্রার্থীকে নগ্ন করে গ্রাম ঘোরানো ঘটনায় রাজ্য পুলিশের ডিজিপির বক্তব্য প্রসঙ্গে তিনি বলেন,’পুলিশ তৃণমূলের দলদাস হিসাবে কাজ করছে । তাই পুলিশ দাবি করতেই পারে যে পাঁচলায় ওই ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি । পাঁচলার নির্যাতিতা মহিলা এ এন আই কে নিজে বলেছেন যে তাঁকে শারিরীকভাবে হেনস্থা করা হয়েছে । থানায় অভিযোগ করলেও নাকি পুলিশ তাঁকে চাপ দিয়েছিল অভিযোগ তুলে নেওয়ার জন্য । আগামী সোমবার আমরা পাঁচলার ঘটনার বিষয়ে আদালতে যাবো এবং পুলিশকে ছাড়া একটা তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানাবো ।’।