এইদিন ওয়েবডেস্ক,লখনউ,২১ জুলাই : চার সন্তানকে নিয়ে অবৈধভাবে ভারতে আসা সীমা হায়দারকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে বলে সূত্রের খবর । যদিও সীমা হায়দার মামলায় উত্তরপ্রদেশ পুলিশের এডিজি আইনশৃঙ্খলা প্রশান্ত কুমার বলেছেন, ‘এটিএস এবং এনআইএ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে । এটা দুই দেশের মধ্যেকার বিষয়। ফেরত পাঠানো হবে কিনা তা সংশ্লিষ্ট এজেন্সি খতিয়ে দেখবে ।’ তিনি আরও বলেন,’এটি নিরাপত্তার ত্রুটির ঘটনা নয় । নেপালের সীমান্ত খোলা। কারো মুখে লেখা নেই যে সে পাকিস্তানি ।’
সীমা হায়দারকে বিগত ২ দিন ধরে জেরা করেছে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের অ্যান্টি টেরোরিজম স্কোয়াড (এটিএস) । জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ শুক্রবার সংবাদ মাধ্যমে সাক্ষাৎকার দেন সীমা । তিনি বলেন,’আমার জীবন শচীনের জন্য। আমি পাকিস্তানে যাব না। আমি একটাই অপরাধ করেছি, নেপাল থেকে অবৈধভাবে ভারতে এসেছি । আমার চার সন্তানের ৬ টি পাসপোর্টের মধ্যে একটি পাসপোর্ট বাতিল করা হয়েছে । আমার মনে চোর থাকলে সেগুলি আমি ফেলে দিতে পারতাম । আমি কোনো জাল পাসপোর্ট করিনি । জীবনে যা ঘটেছিল, আমার ছোটবেলা থেকে এখন পর্যন্ত সব তথ্য আমি এটিএসকে দিয়েছি ।’
সীমা বলেন,’আমি গত এক বছর ধরে হিন্দু ধর্ম পালন করছি । আমি দুটি করোবাচৌথ উদযাপন করেছি। সেখানে আমার বন্ধু সোনম ছিল। দুই বছর আগের ভিডিও বের করুন। তখনও আমি সিঁথিতে সিঁদুর লাগাতাম । কারণ আমি শচীনকে আমার স্বামী মনে করতাম। পাকিস্তানে থাকার সময় থেকেই আমার স্বামীর সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্ক ছিল না কিন্তু যদি আমি পাকিস্তানে থাকতাম তবে সেখানে আমি বেঁচে থাকতাম না ।’
এটিএস সূত্রে খবর, তদন্তকারী দলের জেরার সময় মোটেও নার্ভাস ছিলেন না সীমা । তিনি দুই সন্তানকে সঙ্গে এনেছিলেন, জিজ্ঞাসাবাদের সময় দুই শিশুকে আলাদা ঘরে রাখা হয়েছিল । তবে জিজ্ঞাসাবাদ চলাকালীন একবারের জন্যও সন্তানদের কথা জিজ্ঞেস করেননি সীমা । জানা যাচ্ছে যে সীমাকে জেরা করে সন্তুষ্ট নয় এটিএস । সীমা হায়দারকে জিজ্ঞাসাবাদের ভিডিও জাতীয় তদন্ত সংস্থার (এনআইএ) কাছে পাঠানো হয়েছে । এখন বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে এনআইএ ।
দৈনিক ভাস্করের রিপোর্ট অনুযায়ী,পুলিশ এর আগে সীমা হায়দারের বিরুদ্ধে ফরেনার্স অ্যাক্ট-১৪ ও ১২০-বি ধারা জারি করেছিল। এসব ধারায় পাঁচ বছর পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে। যে কারণে আদালত থেকে সহজেই জামিন পেয়ে যান সীমা ও শচীন। তবে এখন তাদের বিরুদ্ধে ৪৩০,৪৬৮ এবং ৪৭১ ধারা বাড়ানো হতে পারে। এতে সাত বছরের কারাদণ্ড হতে পারে উভয়ের । আর যদি সীমা হায়দারকে কারাদণ্ড না দিয়ে নির্বাসন করা হয় তাহলে সেই প্রক্রিয়া চলতে ১৫ থেকে ৬০ দিন সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা । সীমাকে নির্বাসনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ।।