গৌরনাথ চক্রবর্তী,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),১৭ এপ্রিল : “প্রধানমন্ত্রী যখন শীতলকুচি নিয়ে অডিও টেপের কথা বলেন, তার মানে এটা প্রমান হয়ে যায় উনি এতে উৎসাহ দিয়েছেন । একজন মুখ্যমন্ত্রীর ফোন ট্যাপ করতে লজ্জা করে না? আর যদি ট্যাপ না করে থাকেন,তাহলে যাচাই না করে সমর্থন দিলেন কী করে ? আমি এর সিআইডি তদন্তের করাচ্চি।’ শীতলকুচি ঘটনা নিয়ে ভাইর্যাল হওয়া মুখ্যমন্ত্রীর অডিও ক্লিপিংস নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির মন্তব্যের জবাব এই ভাষাতেই দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ।
পাশাপাশি আত্মপক্ষ সমর্থন করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি খারাপ কী বলছি? আমি বলেছি ডেড বডি গুলি রেখে দাও আমি পরের দিন যাবো। ওদিন তো ভোট ছিল। কী করে যাবো? তাই বলেচিলাম রেখে দিতে। এতে কী প্রমাণ হয়? আমি জানতে চাই আপনার কাছে। আপনার কথার উত্তর দিলাম, আপনাকেও জবাব দিতে হবে । তদন্তে কিন্তু আপনাকেও ছাড়বো না ।’
শনিবার কাটোয়া মহকুমা এলাকার কাটোয়া, কেতুগ্রাম ও মঙ্গলকোট আসনে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে কাটোয়ায় নির্বাচনী জনসভা করেন তৃণমূল সুপ্রীমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । কাটোয়া পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ড এলাকায় স্টেডিয়ামে এই জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল । স্টেডিয়াম ছিল ভিড়ে ঠাসা ।
এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দলীয় নেতাদের উদ্দেশ্যে বার্তা দেন, ‘এমন লোক যে এজেন্ট করবেন না যে কী হয়েছে সেটাই বলতে পারবে না। এমন লোককে করবেন যে মরে গেলেও বুথ ছাড়বে না। আর বর্ধমানের জন্য বলছি আপনারা খেয়াল রাখবেন ৩০ টা ভোট গোনার পর মেশিন দুবার অন অফ করতে হবে। ভোট হয়ে গেলেই বুথ থেকে চলে আসবেন না। দাঁড়িয়ে থেকে শীল করবেন। পাহারা দেবেন।’
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রীকে নিশানা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘প্রতি ভোটের দিনে এসে প্রধানমন্ত্রী মিথ্যে বলেন। উনি আমার কথার উত্তর দিতে পারবেন না। আমি ওঁর কথা ধরে ধরে উত্তর দিচ্ছি । মিথ্যেবাদি মোদি বলছেন বাংলায় কোনও ফাস্ট ট্রাক কোর্ট নেই মহিলাদের ওপর অত্যাচারের বিচারের জন্য। উনি জানেন না বাংলায় ৮৮ টি ফাস্ট ট্রাক কোর্ট আছে। এর মধ্যে ৪৫ টা মহিলাদের জন্য।’
পাশাপাশি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রীর বার্তা, ‘আপনারা জানেন করোনা আবার বাড়ছে। সাবধানে থাকবেন। আমাদের রাজ্যে এখনও খুব বাড়েনি, বেশি চিন্তা করবেন না। কিন্তু সচেতনতা অবলম্বন করুন।’ সেই সঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে দায়ী করেন বলেন,’গত ৬ মাসে বাংলায় সংক্রমণ কমে গিয়েছিল। যদি ওরা আগে টিকা দেবার ব্যবস্থা করতো তাহলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হত না ।’
পাশাপাশি এলাকায় কি কি উন্নয়নমূলক কাজকর্ম হয়েছে তার খতিয়ান তুলে ধরে মহকুমা এলাকার তিন দলীয় প্রার্থীকে বিপুল ভোটে বিজয়ী করার আহ্বান জানান মুখ্যমন্ত্রী । এদিনের জনসভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কাটোয়া বিধানসভার তৃণমূল কংগ্রেস প্রার্থী রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়,মঙ্গলকোটের প্রার্থী অপূর্ব চৌধুরী ও কেতুগ্রামের প্রার্থী সেখ শাহেনাওয়াজ ।।