এইদিন ওয়েবডেস্ক,দক্ষিণ ২৪ পরগনা,১৯ জুলাই : দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলির বাসিন্দা বিজেপি সমর্থক সন্ধ্যারানী সর্দারকে মেরে হাত ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠল স্থানীয় তৃণমূল নেতা কাহার লষ্করের বিরুদ্ধে । এমনকি ওই মহিলাকে চিকিৎসা পরিষেবা পর্যন্ত দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহিলাকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কুলতলি থানায় যান । তিনি পুলিশের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করেন ৷ সেই সময় থানায় কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিকের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘জঙ্গলরাজ চলছে নাকি ? সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকায় আপনাদের বেতন হয়,তৃণমূল দেয় না ।’ পরে থানায় বসে থেকে মারধরের ঘটনায় একটা জেনারেল ডাইরি(জিডি) করেন শুভেন্দুবাবু । দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিকের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন,’আপনারা কিছুই করবেন না জানি আমি ওনাকে কাল দিল্লি পাঠাবো,ন্যাশানাল এসটি কমিশন আর মহিলা কমিশনে নিয়ে যাবো । আমি ওকে কলকাতা নিয়ে যাচ্ছি । তোমাদের আইসি অর্ধেন্দুকে কিভাবে জগবন্ধু করতে হয় আমি জানি । মমতা কিভাবে বাঁচায় আমি দেখব । কাহার লষ্করকে কোথায় টেনে নিয়ে যাই দেখাবো ।’
নিজের ফেসবুক পেজে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন, ‘দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কুলতলির দেউলবাড়ি এলাকার মৎসজীবী পরিবারের বিজেপি সমর্থক সন্ধ্যারানী সর্দার যার স্বামী ও এক ছেলে কেরালায় কাজ করেন। অন্য আর এক ছেলে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন। সন্ধ্যারানী দেবী বাড়িতে একাই থাকেন, শুধুমাত্র বিজেপির সমর্থক হওয়ার অপরাধে তৃণমূলের নেতা কাহার লষ্কর ওনার উপর অমানুষিক অত্যাচার করেন, ওনার হাত ভেঙে দেওয়া হয়েছে, কোমরে চোট আছে। থানায় অভিযোগ জানাতে যাওয়ার চেষ্টা করলে ওনাকে ভয় দেখানো হয়, শুধু তাই নয় ওনাকে প্রাথমিক চিকিৎসা টুকুও করতে দেওয়া হয় নি। পুলিশ প্রশাসনের কোনো রকম সহযোগিতা পর্যন্ত উনি পাননি । কুলতলী তে আজ প্রতিটি এলাকায় আমার কাছে এমন অত্যাচারের অভিযোগ করেছেন সেখানকার বাসিন্দারা। এ আমরা কোন সভ্য সমাজে বাস করছি ?’
তিনি আরও লেখেন,’কুলতলী থানায় সন্ধ্যারানী সর্দার কে নিয়ে গিয়েছিলাম। থানায় তৃণমূলের নেতা কাহার লষ্করের নামে অভিযোগ দায়ের করানো হয়েছে। সন্ধ্যারানী সর্দারকে কলকাতায় নিয়ে আসার ব্যবস্থা করেছি, কলকাতায় বেসরকারি হাসপাতালে ওনার চিকিৎসার যাবতীয় ব্যবস্থা করে ওনাকে সুস্থ করে তোলাটাই এখন প্রাথমিক কাজ। সন্ধ্যারানী সর্দার তফসিলি সম্প্রদায়ভুক্ত। উনি সুস্থ হলেই ওনাকে নিয়ে দিল্লিতে তফসিলি কমিশন ও মহিলা কমিশনে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ জানাবো, কারণ এ রাজ্যে মহিলা কমিশন, মানবাধিকার কমিশন সহ যত কমিশন আছে তাদেরকে মমতা ব্যানার্জী অকেজো করে রেখেছেন। তাই এখানে বিচার পাওয়া কার্যত অসম্ভব ।’
অন্য একটা পোস্টে শুভেন্দু অধিকারী লিখেছেন,’পঞ্চায়েত ভোট মিটলেও গ্রামে গ্রামে ভোট পরবর্তী হিংসা অব্যাহত। তৃণমূলের দুষ্কৃতীরা বেছে বেছে বিজেপি প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকদের উপর আক্রমণ করছে, মারধর তো আছেই, সেই সাথে ঘর বাড়ি লুঠ, ভেঙে দেওয়া ও পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। বাধ্য হয়ে প্রাণ বাঁচাতে বিজেপি কর্মীদের হয় বিজেপির দলীয় কার্যালয়ে নতুবা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে আত্মগোপন করতে হচ্ছে। আজ মগরাহাটে বিজেপি কার্যকর্তাদের কাছে তৃণমূলের অত্যাচারের নৃশংসতার বর্ণনা শুনলাম। কিভাবে সাধারণ মানুষের ভোট লুট হয়েছে, ছাপ্পা ও ব্যালট লুট করে, সন্ত্রাস করে শাসক দল ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায় তা আমরা টিভিতে খবরে চাক্ষুষ করেছি। আজ বিজেপি কার্যকর্তাদের কাছে সবিস্তারে সেসব ও শুনলাম। বিজেপি কর্মীদের উপর প্রতিটি অত্যাচারের হিসেব হবে। বিজেপি গণতান্ত্রিক উপায়েই মানুষকে সাথে নিয়ে এই রাজ্যের অত্যাচারী শাসক পিসি ভাইপোর কোম্পানি তোলামূলকে সমূলে উৎখাত করবে। অত্যাচারিত প্রতিটি কার্যকর্তার পাশে আছি ।।

