এইদিন ওয়েবডেস্ক,করাচি,১৬ জুলাই : পাকিস্তানের করাচির সোলজার বাজার এলাকার একটি শতাব্দী প্রাচীন হিন্দু মন্দির বুলডোজার দিয়ে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল স্থানীয় জমি মাফিয়ারা । মাফিয়াদের সহযোগিতা করার জন্য উপস্থিত ছিল পুলিশের একটি মোবাইল ভ্যান । শনিবার গভীর রাতে মন্দিরটি ভেঙে ফেলার আগে গোটা এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয় । এই ঘটনায় তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে পাকিস্তানের হিন্দুদের মধ্যে ।
পাকিস্তানি সংবাদপত্র ডনের প্রতিবেদনে জানা গেছে, করাচির সোলজার বাজার থানার খুব কাছে মুখ চৈথরাম রোডে (Mukhi Chohitram) ছিল দেড় শতাব্দী অধিক প্রাচীন মারি মাতা মন্দিরটি (Mari Mata Temple) । মন্দিরটি মাদ্রাসি হিন্দু সম্প্রদায়ের । কাছাকাছি আরও দুটি খুব পুরানো মন্দির রয়েছে । তার মধ্যে একটি হল মন্দিরের শ্রী রাম নাথ মিশ্র মহারাজের মন্দির এবং অপরটি শ্রী পঞ্চমুখী হনুমান মন্দির ।
জানা গেছে, মারি মাতা মন্দিরটি প্রায় ৪০০ থেকে ৫০০ বর্গ গজ জায়গা জুড়ে বিস্তৃত ছিল এবং ওই জায়গার উপর দীর্ঘদিন ধরে নজর ছিল ইমরান হাশমি (Imran Hashmi) এবং রেখা ওরফে নাগিন বাই (Rekha AKA Nagin Bai) নামে দুই স্থানীয় জমি মাফিয়ার । তারা ‘নাভাইদ’ নামধারী এক ব্যক্তির নামে জাল দলিল করে ৭০ মিলিয়ন টাকায় একজনকে মন্দিরের জায়গাটি বিক্রি করে দেয় । ক্রেতা ওই মন্দিরের জায়গায় বাণিজ্যিক ভবন নির্মানের পরিকল্পনা করেছে । এমনকি ওই ব্যক্তি স্থানীয় প্রশাসনের কাছে ভবন নির্মানের অনুমোদনও পেয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন মন্দির কর্তৃপক্ষ ।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মন্দিরের কমিটির এক কর্মকর্তা ডন নিউজকে বলেছেন,’মন্দিরটি করাচির মাদ্রাসি হিন্দু সম্প্রদায়ের ব্যবস্থাপনার অধীনে ছিল । বলা হচ্ছিল যে মন্দিরটি খুব পুরানো এবং কাঠামো বিপজ্জনক অবস্থায় রয়েছে । তাই অনিচ্ছা সত্ত্বেও সাময়িকভাবে দেবদেবীর প্রতিমা মন্দির থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল । আমরা মন্দির সংস্কারের প্রস্তুতিও নিচ্ছিলাম । কিন্তু আমাদের সেই সুযোগ না দিয়ে শনিবার রাতে গোটা এলাকা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করে অন্ধকারের মধ্যে বুলডোজার চালিয়ে মন্দিরটি ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে ।’ সেই সময় সেখানে পুলিশের একটি মোবাইল ভ্যানকে সেখানে দেখা গেছে বলে তিনি জানান ।
জানা গেছে,মন্দিরের বাইরের দেয়াল এবং প্রধান ফটক অক্ষত রেখে পুরো ভিতরের কাঠামো ভেঙে ফেলা হয়েছে । পাকিস্তান-হিন্দু কাউন্সিল মন্দিরের জায়গা বেদখল রুখতে মুখ্যমন্ত্রী সৈয়দ মুরাদ আলি শাহ এবং সিন্ধু পুলিশের ইন্সপেক্টর জেনারেলের কাছে জরুরি ভিত্তিতে বিষয়টি দেখার জন্য আবেদন করেছে ।।