এইদিন ওয়েবডেস্ক,বারুইপুর,১৫ জুলাই : ‘তৃণমূল ব্যালট খায়,এত নিকৃষ্ঠ প্রাণী এরা । কয়লা খেয়েছে, বালি খেয়েছে,গরু খেয়েছে,পাথর খেয়েছে । বড় বড় গাছ কেটে খেয়েছে । ১০০ দিনের টাকা খেয়েছে । আবাস যোজনার টাকা খেয়েছে । এরপরে ব্যালটও খেয়েছে । গননার দিন ভোট লুটের সময় প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া শৌচালয়ের প্যান খুলে নিয়ে গেছে । শৌচালয়ের প্যান তৃণমূল ছাড়া আর কেউ চুরি করতে পারে না ।’ এই ভাষাতেই রাজ্যের শাসকদলকে নিশানা করলেন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী । পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ,উত্তর ২৪ পরগনা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা,হাওড়া ও পূর্ব বর্ধমান এই চার জেলায় বিরোধীদের নিকেশ করার কাজ চলছে ।
আজ শনিবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার বারুইপুরে জেলা বিজেপি কার্যালয়ে আশ্রয় নেওয়া ঘরছাড়া দলীয় কর্মী সমর্থকদের খোঁজ নিতে গিয়েছিলেন শুভেন্দু অধিকারী । তাঁর অভিযোগ,’পঞ্চায়েত ভোটের আগে ও পরে ১১৭ জন ঘরছাড়া । তার মধ্যে বারুইপুর সাংগঠনিক জেলার বারুইপুর পূর্বের নবগ্রাম এলাকা সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে । সোনারপুর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত । এর বাইরে মথুরাপুর সাংগঠনিক জেলার বেশ কিছু এলাকার ২৮ জন এখানে আছেন । তাদের ভোটের আগে বা পরে এলাকা থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, বিরোধী দলের প্রার্থী হওয়া বা প্রচার করার অভিযোগে । এখানে ৮ জন গুরুতর আহত অবস্থায় আছেন । সরকারি হাসপাতালে তাদের স্থান হয়নি । তাদের এখানে রেখে বেসরকারি চিকিৎসকদের সাহায্য নেওয়া হচ্ছে । আগামী কাল বিজেপির মেডিকেল টিম তাদের পরীক্ষা করার পর এইমসে অথবা রেলওয়ে হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থা করছি ।’ তিনি বলেন,’এর বাইরেও শিশুসহ মহিলা ৮ জন আছেন এখানে । জয়নগর সাংগঠনিক জেলাতেও প্রচুর মানুষ ঘরছাড়া । এখানে মোট ৩৯২ জন বিজেপি কর্মী ঘরছাড়া রয়েছেন । তার মধ্যে এখানে প্রায় ৭০ জন আছেন । বাকিরা ভিন্ন ভিন্ন জেলা বা রাজ্যে আত্মীয়দের বাড়িতে পালাতে বাধ্য হয়েছেন । বাসন্তী, ক্যানিং, জয়নগর আর কুলতলিতে কোনো সেফ হাউস তৈরি করার পরিস্থিতি নেই । এই সমস্ত জায়গায় তৃণমূলের পতাকা লাগিয়ে ৬১ টি জমি দখল করা হয়েছে । মূলত তফসিলি জাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের জমি দখল করা হয়েছে । দোকান বন্ধ করেছে ১৫ টা ঘর লুট করেছে ৪০ টা ।’
এরপর তিনি শাসকদলকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন, ‘আগামী মঙ্গলবার ক্যানিং,মগরাহাট প্রভৃতি এলাকায় আমি দাঁড়িয়ে থেকে দোকান খোলাবো । সওকত মোল্লা, জাহাঙ্গির খান আর ভাইপোর যদি বুকের পাটা থাকে তাহলে আমায় আটকে দেখাবে ।’ পাশাপাশি তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার পুলিশ ও বিডিওদের ভূমিকার তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘এই জেলাতে পুলিশ গুণ্ডার ভূমিকায় আর বিডিওরা ভোট চুরি করার কাজে নেতৃত্ব দিয়েছে ।’ তাঁর কথায়, ‘পুলিশ মমতা ব্যানার্জির পোশা লেঠেল । পুলিশের অধিকার ৩৫৫ ধারা প্রয়োগ করে কেড়ে নেওয়া যায় । আমরা সেটার দাবি করছি ।’
পঞ্চায়েত ভোটের সময় রাজ্যে বিভিন্ন দলের কর্মীদের মৃত্যুর বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছলেন যে তৃণমূলের বেশি লোক মারা গেছে । এই বিষয়ে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ‘তৃণমূলকে কেউ মারেনি । সব বোমা বাঁধতে গিয়ে মারা গেছে । তৃণমূলের সঙ্গে পুলিশ আছে,ওদের কে মারতে যাবে ? এবারের পঞ্চায়েত ভোটে পুলিশ নেতৃত্ব দিয়েছে আর বিডিওরা ভোট চুরি করেছে । তৃণমূলের যে ১০-১২ টা মরেছে,বোমা বাঁধতে গিয়ে নিজেদের বোমা ফেটে মরেছে ।’
নওসাদ সিদ্দিকির উদ্দেশ্যে শুভেন্দুর বার্তা,’উনি কি ভাঙড়ে যাওয়ার জন্য দরজাটা খুলবেন? ওনারা তো বলেন বিজেপি সাম্প্রদায়িক । আমি সেই দলেরই একজন বিধায়ক । আমি রাজি আছি যেতে, তবে দরজাটা আপনাদের খুলতে হবে । আমি বিজেপির হয়ে ভোট চাইব না ।’ তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনের সাম্প্রতিক এক মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে শুভেন্দু তাঁকে ‘রাস্তার কুকুর’ বলে অবিহিত করেন ।।