প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,১৪ জুলাই : পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষনা হয়ে যাবার পরেও হিংসা অব্যাহত রাজ্যে।বাদ গেলনা পূর্ব বর্ধমানও।
শুক্রবার রাজনৈতিক হিংসার ঘটনায় উত্তপ্ত হয়ে হয়ে উঠলো পূর্ব বর্ধমানের গলসি ১ ব্লকের পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের করকডাল গ্রাম।শাসক দল এবং সিপিএমের কর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে হওয়া সংঘর্ষে জখম হলেন দুই পক্ষের ছয়জন।বাড়িঘর ও দোকানপাটেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।রেহাই পাননি মহিলারাও। জখমদের মধ্যে চার জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক থাকায় তাঁদের বর্ধমান মেডিকেজ কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। উত্তেজনা থাকায় এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।শুরু হয়েছে ধরপাকড়।পঞ্চায়েত ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে চাপা উত্তেজনা থাকলেও আপাত সান্ত ছিল গলসি। তবে
আর সান্ত থাকলো না পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের করকডাল গ্রাম।এদিন বেলায় এই গ্রামে সিপিএম ও কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের ব্যাপক সংঘর্ষ বেঁধে যায়। লাঠি ,বাঁশ নিয়ে একপক্ষ অপর পক্ষের উপরে হামলা চালায় বলে অভিযোগ । মারপিটে
সিপিএমের সাগর মল্লিক, রাফিজুল মল্লিক, মফিজুর মল্লিক, তাজমিরা মল্লিক ও মুক্ত মল্লিক জখম হয়েছেন। একই ঘটনায় পারাজ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূলের সদস্য জাহাঙ্গীর সেখ সহ দুই তৃণমূল কর্মীও জখম হয়েছেন। ছুরি চালিয়ে জাহাঙ্গীরকে জখম করার অভিযোগ উঠেছে সিপিএম কর্মীদের বিরুদ্ধে।এমন ঘটনার জেরে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন করকডাল গ্রামের বাসিন্দারা।খবর পেয়ে গলসি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে ।পুলিশ জখমদের উদ্ধার করে গলসির পুরসা ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যায় । শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় চারজনের সেখান থেকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
এদিনের ঘটনা প্রসঙ্গে গ্রামের বাসিন্দা তথা সিপিএম সমর্থক আনারুল মল্লিক বলেন, ”ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকেই তাঁরা বাড়িছাড়া ছিলেন। বাড়ি ফিরতেই এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের জাহাঙ্গীর সেখের নেতৃত্বে জনা পঞ্চাশেক ব্যক্তি তাঁদের দলীয় কর্মী ও সমর্থকদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হামলা শুরু করে।বাড়ি ঘরে ও বাইকে যথেচ্ছ ভাঙচুর চালায় ।বাড়িতে থাকা সোনাদানা , টাকা পয়সা সহ সবকিছু লুঠপাট করে নেওয়ার পাশাপাশি হামলাকারীরা সিপিএম কর্মী ও সমর্থকদের ব্যাপক মারধর করে বলে অনারুল মল্লিক জানিয়েছেন“। সিপিএমের জেলা সম্পাদক সৈয়দ হোসেন বলেন,’গলসিতে আমাদের পঞ্চায়েত ভোটের প্রার্থী গোলাম মুর্তজা জখম হয়েছে। তার বাড়ি ভাঙচুরের পাশাপাশি লুটপাট চালিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের লোকজন ।’
যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে এলাকার তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আনোয়ার আলী শোখ বলেন,’দলের নির্দেশ মেনে গ্রামের সকল তৃণমূল কর্মী ও সনর্থকরা সান্ত ছিল । কেউ কোন অশান্তি ঝামেলায় যায় নি। এটাকে দুর্বলতা ভেবে নিয়ে সিপিএম আর কংগ্রেস মিলে এদিধ গ্রামে ঝামেলা শুরু করে।ওরাই মারপিট শুরু করে ।’ ছুরি চালিয়ে তৃণমূলের সদস্য জাহাঙ্গীর সেখ কে জখম করেছে বলে আনোয়ার শেখের অভিযোগ । আর রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, ‘সিপিএম সহ বিরোধীরা নির্বাচনে পরাজিত হয়ে এখন এলাকায় অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে। সিপিএমের আক্রমণে আমাদের একজন পঞ্চায়েত সদস্য গুরুতর জখম হয়েছে ।’।