প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৯ জুলাই : পঞ্চায়েত ভোটের দিন বুথে ঢুকে গণ্ডগোল পাকানো ও বোমাবাজির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ১৪ জনকে তৃণমূল কর্মীকে গ্রেপ্তার করলো পুলিশ। পূর্ব বর্ধমানের রায়না থানার পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু করে তাদের গ্রেপ্তার করে । এই ঘটনায় রাজনৈতিক মলেও ব্যাপক চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে ।
পুলিশ জানিয়েছে,ধৃতদের নাম বিশ্বজিৎ সাহা, সোনু প্রসাদ, অনি দাশগুপ্ত, সুমন কপালি, রোহিত সরকার, শেখ চাঁদ, অর্ঘ্য সরকার, সোমনাথ অধিকারী, রোহিত শর্মা, শেখ সাহেব, বিকাশ বিশ্বাস, শেখ আজাহার, শেখ নুরুল নবী ও নুরুল ইসলাম মণ্ডল। খণ্ডঘোষ থানার বেড়ুগ্রামে নুরুল ইসলামের বাড়ি।একই থানা এলাকার তেলুয়ায় নুরুলের বাড়ি। রায়না থানার বেলসর গ্রামে আজাহারের বাড়ি। বাকিদের বাড়ি বর্ধমান শহরের বিধানপল্লি, মেহেদিবাগান, বড়নীলপুর, বাদশাহী রোড মাঠপাড়া, হটুদেওয়ান পিরতলা ও ধোকড়া শহিদ এলাকায়। ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান, ১২টি লাঠি, লোহার রড ও ফাটা বোমার অংশ ও দু’টি মারুতি গাড়ি পুলিশ বাজেয়াপ্ত করেছে।
শনিবার ভোট গ্রহন কেন্দ্রে হওয়া ঘটনার বিষয়ে রায়না থানার অফিসার চন্দনকান্তি পাল অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ ধৃতদের রবিবার বর্ধমান সিজেএম আদালতে পেশ করে । বিচার বিভাগীয় হেফাজতে পাঠিয়ে মঙ্গলবার ধৃতদের ফের আদালতে পেশের নির্দেশ দেন ভারপ্রাপ্ত সিজেএম।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার দিন সকাল ৮টা নাগাদ রায়না থানার রামবাটি গ্রামে মথুরাপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৩৯ নম্বর বুথে সিপিএমের কর্মী-সমর্থকদের উপর হামলা চালায় তৃণমূল। সিপিএমের লোকজনকে মারধর করা হয়। দলটি দু’টি মারুতি গাড়িতে চেপে গিয়েছিল। তারা বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। মারধরে সিপিএমের শেখ আজাদ, রনি ও শেখ গফ্ফর জখম হন। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ১৪ জনকে সেখান থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, দু’টি গাড়িতে চেপে তৃণমূলের লোকজন বুথ দখল করতে এসেছিল। এলাকাবাসী পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলে। চারপাশ থেকে দলটিকে ঘিরে ফেলে। বেগতিক বুঝে তারা বোমাবাজি করে। ভোট লুট করতে যাওয়া লোকজনকে মারধর করা হয়। তাদের গাড়ি দু’টিতেও ভাঙচুর চালানো হয়। আদালত থেকে সংশোধনাগারে যাওয়ার পথে গাড়িতে ওঠার সময় ধৃত এক যুবক বলে, এক বিধায়ক ও রায়নার নেতার কথায় ভোট লুট করতে গিয়েছিলাম। চারপাশ থেকে আমাদের হাজার দু’য়েক লোক ঘিরে ফেলেছিল। আমাদের মারধর করা হয়। পুলিশ সময়মতো না পৌঁছালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতো। নেতাদের কথায় ভোট লুট করতে গিয়ে চরম শিক্ষা হল।।

