প্রদীপ চট্টোপাধ্যায়,বর্ধমান,০৫ জুলাই : বিজেপি ভাইরাস ।তৃণমূল কংগ্রেস ভাইরাসের ভ্যাকসিন।বিজেপি দলের প্রধানমন্ত্রী বড় ঢপ মারছে আর সেই দলেরই এই রাজ্যের বিরোধী নেতা সুকান্ত ও শুভেন্দু ছোট ঢপ মারছে।এই বিজেপিকে কেন্দ্র থেকে উৎখাত করতে না পারলে বাংলা সহ গোটা দেশের ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলি দিতে হবে । পঞ্চায়েত নির্বাচন উপলক্ষে বুধবার পূর্ব বর্ধমানের কালনায় অনুষ্ঠিত জনসভা থেকে এই ভাষাতেই কেন্দ্রের সরকার ও বিজেপিকে তুলো ধনা করলেন তৃণমূলের সেকেন্ড হ্যান্ড কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় । পাশাপাশি রাজ্যের পাওনা আদায়ের জন্য এদিনের সভাবঞ্চ থেকেই অভিষেক দিল্লি চলো এই ডাকও দিলেন ।
কালনায় পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বাম ও কংগ্রেসকে ধর্তব্যের মধ্যেই রাখেননি। তবে তাঁর নিশানায় আগা গোড়াই ছিল কেন্দ্রের সরকার ও বিজেপি। অভিষেক বলেন, প্রায় দু’আড়াই বছর ধরে প্রধানমন্ত্রী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সহ এই রাজ্যের বিজেপি নেতারা মিলে বাংলার পাওনা ন্যায্য টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। পূর্ব বর্ধমান জেলায় ১৭ লক্ষ ৮২ হাজার জন মানুষের একশ দিনের কাজের টাকা ওরা আটকে রেখেছে।৮ জুলাই পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন এর জবাব বাংলার মানুষকে দিতে হবে। সমস্ত গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এবং জেলা পরিষদ আসনে জয়ী করতে হবে তৃণমূলের প্রার্থীদের। ২০২১ এর বিধানসভা নির্বাচনে বাংলার মানুষ তৃণমূলকে জিতিয়েছিল বলেই লক্ষীর ভান্ডার, কন্যাশ্রী ও রূপসী প্রকল্পের সুবিধা পাচ্ছেন বলে অঅভিষেক সভায় উপস্থিত সবাইকে স্নরণ করিয়ে দেন
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্যেও এদিন বিজেপিকে দায়ী করেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।একই সঙ্গে বিজেপিকে ’ভাইরাস’ বলে কটাক্ষ করে তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কমান্ড বলেন,বিজেপি ’ভাইরাস’ হলে ভ্যাকসিনের নাম তৃণমূল কংগ্রেস। এই বিজেপিকে উৎখাত না করলে আগামী দিনে বাংলা সহ গোটা দেশের ভবিষ্যৎ জলাঞ্জলি দিতে হবে ।অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় আরও দাবি করেন, তৃণমূল হলো বিশুদ্ধ লোহা।মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেস জিতলে তবেই এই বিজেপি উচিত শিক্ষা পাবে। এরই সাথে এদিন কালনার জনসভা থেকে ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের তৃণমূলের কি ফল হবে তাও ঘোষণা করে দেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি দাবি করেন ২০২৬ এর বিধানসভা নির্বাচনে ২৪০ এর বেশি আসন পেয়ে এই রাজ্যে চতুর্থ তৃণমূলের সরকার গঠিত হবে।
রাজ্য সরকারের লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্পের কথা তুলে ধরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ’ লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্পের জন্য মমতা সরকার দু’বছরে ৩৭ হাজার কোটি টাকা খরচ করেছে। এর জন্য কেন্দ্রের কোন সাহায্য নেই।চার পাঁচ মাস আগে যে বিজেপি নেতারা লক্ষীর ভান্ডার প্রকল্প নিয়ে ব্যঙ্গ বিদ্রোহ করছিলেন তারাই এখন বলছেন,“ বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় এলে লক্ষীর ভান্ডার দেবে’। অভিষেক এও বলেন, বিজেপির এই প্রতিশ্রুতি বাংলার কোন মানুষ বিশ্বাস করেন না। কারণ, কেন্দ্রের এই বিজেপির সরকার বাংলার একশ দিনের কাজের টাকা, বাড়ির টাকা, রাস্তার টাকা, সর্বশিক্ষা মিশনের টাকা সহ ৬২ টা প্রকল্পের টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। তবে বাংলার মানুষের কি ক্ষমতা সেটা আগামী দু মাসের মধ্যে তাঁরা দিল্লিতে গিয়ে বুঝিয়ে দেবো। এরপরেই প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে অভিষেক বলেন, আমার জেদ, প্রধানমন্ত্রীর থেকে আমাও জেদ ১০ গুণ বেশি।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা তথা বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারীও এদিন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিশানায় ছিলেন। অভিষেক বলেন, প্রধানমন্ত্রী বলছেন, তিনি নাকি দুর্নীতির বিরুদ্ধে গ্যারেন্টার। অথচ শুভেন্দু অধিকারী কে টিভির পর্দায় টাকা নিতে দেখা গেলেও প্রধানমন্ত্রী কোন ব্যবস্থাই নেননি। এমনকি অসমের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত বিশ্ব শর্মার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও প্রধানমন্ত্রী নীরব। একইভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অজয় মিশ্রর বিরুদ্ধেও নীরব প্রধানমন্ত্রী। কোন ব্যবস্থাই নেননি। অভিষেক দাবি করেন, ’এখন ভারতে নতুন প্রথা হয়েছে- চোর চুরি করলে আর জেলে যায় না। চোরেরা বিজেপিতে যায়’। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল যদি সিবিআই,ইডির সম্মুখীন না হয়ে বিজেপির কাছে আত্মসমর্পণ করতো তাহলে ধোয়া তুলসী পাতা হয়ে যেত।।