এইদিন ওয়েবডেস্ক,প্যারিস,০৫ জুলাই : ১৭ বছরের মুসলিম অভিবাসী কিশোরের পুলিশের গুলিতে মৃত্যুর পর থেকেই চুড়ান্ত অরাজকতা চলছে ফ্রান্সে । বিক্ষোভ ছেড়ে ব্যাপক লুটপাট শুরু করে দিয়েছে অভিবাসীরা । তারা প্যারিস, মার্সেই, লিয়ন, টুলুস, স্ট্রাসবার্গ এবং লিলি সহ বেশ কয়েকটি প্রধান শহরে কার্যত দাপিয়ে বেড়াচ্ছে । ফলে ফরাসিদের মধ্যে এমানুয়েল মাক্রোঁর বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে । তারই প্রতিফলন পাওয়া গেল ওয়াশিংটন ডিসি ভিত্তিক ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের একটা সমীক্ষায় । ওই সমীক্ষা অনুযায়ী,ফ্রান্সের ডানপন্থী মেরিন লে পেনের জন্য ফরাসি রাষ্ট্রপতি পদে জয়ী হওয়ার দরজা খুলে দিয়েছে । সংস্থাটি ১,০০০ জন ফরাসি ভোটারের উপর সমীক্ষা চালায় । তাতে মেরিন লে পেনের পক্ষে ৫৭ শতাংশ এবং এমানুয়েল মাক্রোঁর পক্ষে ৪৭ শতাংশ মানুষ আস্থা দেখিয়েছেন । ভোটে দেখা গেছে যে ৬৩ শতাংশ এখন জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে চায় । এদিকে ৪১ শতাংশ ফরাসি এই সমস্যার জন্য অভিবাসীদের দায়ী করেছেন এবং ৩০ শতাংশ এমানুয়েল মাক্রোঁকে দায়ী করেছেন যেখানে মাত্র ১৬ শতাংশ ফরাসি পুলিশের দিকে আঙুল তুলেছেন ৷ দেশে সবচেয়ে ভয়াবহ সহিংসতার সময় ১ জুলাই থেকে ৩ জুলাই এই সমীক্ষা চালানো হয় ।ডেমোক্রেসি ইনস্টিটিউটের পরিচালক প্যাট্রিক বাশাম বলেছেন,এই সমীক্ষাটি ফ্রান্সের ভোটারদের মানসিকতা প্রতিফলিত হয়েছে।
এক্সপ্রেস ডট সিও ডট ইউকে-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী,এই ফলাফল ফ্রান্সের পরবর্তী নির্বাচনে মিসেস লে পেনের পার্টির জন্য জয়ের দরজা খুলে দিয়েছে । উল্লেখ্য,ফ্রান্সের ডানপন্থী দল ফ্রন্ট ন্যাশনালের প্রতিষ্ঠাতা মেরিন লে পেনের বাবা ফরাসি ফ্যাসিবাদী জিন-মারি লে পেন । যদিও, মিসেস লে পেন তার বাবার প্রাক্তন বর্ণবাদী এবং ইহুদি বিরোধী নীতিগুলিকে বহিষ্কার করেছেন । বিগত নির্বাচনে তিনি আইনি এবং অবৈধ অভিবাসন উভয় মোকাবেলায় আরও কঠোর নীতি গ্রহণের প্রয়োজনের বিষয়ে প্রচার করেছিলেন ।
ফ্রান্সের ডানপন্থীরা কীভাবে বর্তমান সঙ্কটকে সদব্যবহার করছে তার আরেকটি লক্ষণ হল ফরাসি অতি-ডান রাজনীতিবিদ মেরিন লে পেনের প্রাক্তন উপদেষ্টা জিন মেসিহা ১৭ বছরের কিশোরকে গুলিকারী পুলিশ অফিসারের জন্য এক মিলিয়ন ইউরো (৮,৪০,০০০ ডলার) সাহায্য ঘোষণা করেছেন । গত বছরের নির্বাচনে মিসেস লে পেন ৪৫ শতাংশ ভোট পেয়ে তার দলের জন্য সর্বকালের সেরা ফলাফল রেকর্ড করেছিলেন । পাঁচ বছর আগে ২০১৭ সালে ম্যাক্রোঁর বিরুদ্ধে ৩৩.৯ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন তিনি । ২০০২ সালে ফ্রান্সের নির্বাচনে জ্যাক ক্রিকের বিরুদ্ধে ১৭.৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিলেন মেরিন লে পেনের বাবা । ফলে প্রতিটি নির্বাচনেই মেরিন লে পেনের দলের ভোটের উর্ধমুখী হার প্রমান করে যে আগামী নির্বাচনে অভিবাসীদের উপর ক্ষিপ্ত ভোটাররা ক্ষমতার বদল ঘটাবে । উল্লেখ্য,পরবর্তী ফরাসি রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হবে ২০২৭ সালে ।।