নীহারিকা মুখার্জ্জী,শিয়ালদহ,০৩ জুলাই : সাহিত্য কখনো এক জায়গায় থেমে থাকে না। যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে একদল কবি-সাহিত্যিক বাংলা কাব্য-সাহিত্যকে পাঠকের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য নিত্য নতুন বিষয় নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন। তাদের হাত ধরে কাব্য জগতে আবির্ভাব ঘটছে নতুন নতুন ধারার। যার সাম্প্রতিক সংযোজন হলো ‘পঞ্চবান’। এই নতুন ধারাকে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য পঞ্চবান কাব্যচর্চা পর্ষদের উদ্যোগে রবিবার শিয়ালদহের ‘কৃষ্ণচন্দ্র ঘোষ মেমোরিয়াল ট্রাস্ট ভবন’-এ আয়োজিত হয় চতুর্থ বর্ষ ‘পঞ্চবান কবিতা উৎসব- ২০২৩’। এক আড়ম্বরপূর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত ও ওপার বাংলা থেকে আগত আড়াই শতাধিক কবি-সাহিত্যিকের উপস্থিতিতে প্রায় সাড়ে পাঁচশ ‘পঞ্চবান’ কবিতা সমৃদ্ধ চতুর্থ বর্ষের কাব্য সংকলন প্রকাশিত হয়।
অনুষ্ঠানে একাধিক কবি স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন। প্রবীণ কবিরা কাব্য-সাহিত্য সম্পর্কে তাদের সুচিন্তিত মতামত নবীন প্রতিভাদের সামনে তুলে ধরেন এবং নতুন ঘরানার কাব্য সৃষ্টির দিকে মনোনিবেশ করার জন্য পরামর্শ দেন। একইসঙ্গে তারা ‘পঞ্চবান’ কাব্য স্রষ্টা সুশান্ত বাবুর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিন ঘণ্টার এই অনুষ্ঠানটি এক সময় অন্য উচ্চতায় পৌঁছে যায়। সমগ্র অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন ‘পঞ্চবান’ কাব্য স্রষ্টা কবি-সাহিত্যিক সুশান্ত ঘোষ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ কবি-সাংবাদিক কমল দে সিকদার, বরুণ চক্রবর্তী, আরণ্যক বসু, সাহিত্যপ্রেমী নিগমানন্দ মণ্ডল, জয়দীপ চট্টোপাধ্যায়, নীলাচল চট্টরাজ, গোপাল চক্রবর্তী, ছড়াকার বকুল বৈরাগী, দিলীপ রায়, তাপস সাহা ও কবি-সাংবাদিক সূচনা গাঙ্গুলি সহ আরও অনেকেই।
উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকে যথাযোগ্য মর্যাদা সহকারে উপস্থিত প্রত্যেক কবিকে বরণ করে নেওয়া হয়। সমস্ত পঞ্চবান কবিদের ষষ্ঠীপদ চট্টোপাধ্যায়ের স্মরণে সংকলন, সার্টিফিকেট ও একটি করে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। সাত জন কবিকে ‘পঞ্চবান কাব্য রত্ন সম্মাননা-২০২৩’ প্রদান করা হয়। ৩৫ জন ‘পঞ্চবান’ কবির হাতে স্বর্গীয় নীলকান্ত মণ্ডল পঞ্চবান স্মৃতি স্মারক’ তুলে দেওয়া হয়।
এর আগে প্রদীপ প্রজ্জ্বলিত করে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা করেন অনুষ্ঠানে মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্ট কবি-সাহিত্যিকরা। উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিশিষ্ট কবি তথা সঙ্গীত শিল্পী নবলতা শীল।
অনুষ্ঠানে অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন নবীন কবি সূচনা গাঙ্গুলি । তিনি বললেন – ‘পঞ্চবান’ কবিতা কি সেটা জানা ছিলনা। আজ জানতে পারলাম। চেষ্টা করব ভবিষ্যতে এই ঘরানার কবিতা লিখতে। তিনি আরও বললেন,প্রবীণদের কাছ থেকে আজ মহামূল্যবান পরামর্শ পেলাম। এটা আমার চলার পথে পাথেয় হবে।
তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কবি-সাহিত্যিকরা উপস্থিত হয়েছেন তার জন্য সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সুশান্তবাবু বললেন, সদ্যোজাত ‘পঞ্চবান’ কবিতা যেভাবে নবীন ও প্রবীণ কবি প্রতিভাদের মধ্যে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে তাতে আমি গর্বিত। আমি নিশ্চিত ভবিষ্যতে আরও নতুন নতুন ঘরানা দিনের আলোর মুখ দেখবে এবং দিনের শেষে সমৃদ্ধ হবে বাংলা কাব্য জগত।।