দিব্যেন্দু রায়,কাটোয়া(পূর্ব বর্ধমান),০৩ জুলাই : রবিবার পূর্ব বর্ধমান জেলার কাটোয়া-২ ব্লকের গাজিপুর পঞ্চায়েতের খাসপুর গ্রামে দলের নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা টলিউড অভিনেতা জয় ব্যানার্জি । আজ সোমবার কাটোয়ার অগ্রদ্বীপে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে নির্বাচনী জনসভাতেও ফের একবার মুখ্যমন্ত্রীর প্রশংসা শোনা গেল তাঁর গলায় । তবে মুখ্যমন্ত্রীর ভাইপো অভিষেক ব্যানার্জিকে কার্যত তুলোধুনো করেন তিনি । জয় ব্যানার্জি বলেন,’আমি বিজেপির মঞ্চ থেকে বলছি যে মমতা ব্যানার্জিকে আমি খুব শ্রদ্ধা করতাম । কেন শ্রদ্ধা করতাম ? কারন উনি একা সিপিএমের মত মহীরূহকে সরিয়ে দিয়েছেন । কিন্তু ওনার জীবনের ঐতিহাসিক ভুল হল,অভিষেককে এগিয়ে দেওয়া ।’
এরপর তৃণমূলের সেকেন্ড ইন কম্যান্ড অভিষেক ব্যানার্জিকে নিশানা করে তিনি বলেন,’আজ স্নাতক হতে একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির মিলে দু’বছর ধরে অন্তত মোট ১৩ বছর সময় লাগে । অভিষেক তো দশম শ্রেণীই পাশ করেননি । ও কি বুঝবে রাজনীতির ? ও যখন থেকে রাজনীতিতে এসেছে,রাজনীতির হাল ধরেছে,তখন থেকে আমাদের খুব আনন্দ । আমরা খুব খুশি । কারন তৃণমূল সরকার ও দল খুব তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে যাবে । দলটা যদি মমতা ব্যানার্জি নিজের হাতে রাখতেন তাহলে অনেক দিন টিকতো ।’
এদিনের জয় ব্যানার্জির বক্তব্যে শিক্ষক নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গও উঠে আসে । তিনি বলেন,’আমি একজন কেন্দ্রীয় নেতা, অনেক টাকা কামাতে পারতাম । কিন্তু আমার মনে কোনো দিন এই ভাবনা আসেনি ।অবৈধ টাকা কামানো মানে পাপ । আর সেই পাপেই আজ পার্থ চ্যাটার্জির দলবল ভুগছে । সারা জীবনে আনন্দ উপভোগ করেছে,আজ জেলের কোনে বসে আছেন।’
নিয়োগ দূর্নীতি মামলায় তৃণমূল নেত্রী তথা অভিনেত্রী সায়নী ঘোষকে ইডির জেরা প্রসঙ্গে জয় বলেন, ‘আজ শুনলাম সায়নী ঘোষকে প্রচার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিয়েছে । তৃণমূলও বুঝতে পারছে সায়নী ঘোষ ঢুকবো ঢুকবো করছে । আগামী সপ্তাহ বা পরে সপ্তাহের মধ্যেই ঢুকে যাবে । লোকের টাকা নিয়ে নয়ছয় করবে,মস্তি করবে, আর তোমাকে ছেড়ে দেবে ?’ তবে তৃণমূল নেতা মদন মিত্রকে এদিন নজিরবিহীন ভাষায় আক্রমণ করেন জয় ব্যানার্জি । তিনি বলেন,’একটা লম্পট, মাতাল সে কিনা রাজ্যপালকে যা তা বলছে । যার কোনো নিজের ইমেজই নেই । সে হল মদন মিত্র ।’
গ্রামের ‘বেহাল অর্থনীতি’ নিয়ে জয় ব্যানার্জির মন্তব্য, ‘আমি ইংরাজি মাধ্যমে পড়াশোনা করেছি,কিন্তু গ্রামের সাথে আমার যে একটা আত্মিক টান আছে সেটা প্রমান করে দিয়েছি হীরক জয়ন্তীতে । গ্রাম শহরকে হারাচ্ছে,এই ছিল ছবির বিষয়বস্তু । গ্রাম সব কিছু উৎপাদন করে শহরকে দেয় তবেই শহরবাসী খেতে পায় । অথচ ২০১৪ সালে রাজনীতিতে আসার পর থেকে যতদিন আমি গ্রামে গ্রামে ঘুরছি, কখনো দেখিনি যে গ্রামের মানুষের মুখে হাসি আছে । হাসি থাকবে কেন? কারন কিছু মানুষের হাতে একেবারে টাকা নেই, অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের কিছু মানুষের হাতে এত টাকা যে গুণে শেষ হয় না ।’
এরপর তিনি উপস্থিত জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘এবার কিন্তু ভাববার সময় এসেছে । আর ৫ বছর নষ্ট করলে আপনাদের সন্তানদের জীবন নষ্ট হয়ে যাবে । তাই এমন একটা দলকে ভোট দিন যার স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আছে । আর সেই দল হল বিজেপি ।’
এদিনের সভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির পূর্ব বর্ধমান জেলার ইনচার্জ তথা কাটোয়া ৪৯ নম্বর জেডিপির বিজেপির প্রার্থী কৃষ্ণ ঘোষসহ দলের স্থানীয় নেতৃত্ব ।।