এইদিন ওয়েবডেস্ক,নাইজেরিয়া,০৩ জুলাই : ইসলামের নবী মহম্মদকে অবমাননা করার অভিযোগে উত্তর-পশ্চিম নাইজেরিয়ার সোকোটোতে উসমান বুদা(Usman Buda) নামে এক কসাইকে পাথর ছুড়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে । সংবাদ মাধ্যম ডেইলি ট্রাস্টের মতে, গত রবিবার সকাল ৮ টার দিকে সোকোটো প্রধান কবরস্থানের কাছে অন্য ব্যবসায়ীর সাথে তর্কের সময় উসমান বুদা এই মন্তব্য করেছিলেন বলে অভিযোগ । সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে । ওই যুবককে পাথর ছুড়ে মারার সময় ধর্মান্ধ ইসলামপন্থীদের “আল্লাহ হু আকবার (আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ)” বলে চিৎকার করতে শোনা যায়
একজন প্রত্যক্ষদর্শী ডেইলি ট্রাস্টকে বলেছেন,আমাদের নেতারা তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করে,কিন্তু ব্যর্থ হয় । কারন তখন প্রচুর মানুষ সেখানে জড়ো হয়ে গিয়েছিল । শেষে উসমান বুদার সহকর্মী কসাইরাই তাকে পিটিয়ে হত্যা করে । পরে লাশ পুলিশ নিয়ে যায় ।’
জানা গেছে, বুদার কিছু ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়িক অংশীদাররা তাকে উদ্ধার করার চেষ্টা করেছিলেন । কিন্তু তারাও গুরুতর আহত হয়েছেন এবং বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে তাদের । মৃত ব্যক্তি তাম্বুওয়াল (Tambuwal) এলাকার বাসিন্দা বলে জানা গেছে । তবে তিনি সোকোটো(Sokoto) উত্তর স্থানীয় সরকার এলাকায় গিদান ইগওয়েতে(Gidan Igwe) থাকতেন। সেখানে তিনি সোকোটো মাছ ও সবজি বাজারে গরুর অন্ত্র বিক্রি করতেন ।
মলম ইউসুফ নামে তার এক প্রতিবেশী উসমান বুদার মৃত্যুকে বেদনাদায়ক বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন,’উসমান আমার নিকটতম প্রতিবেশী । তিনি অত্যন্ত ধার্মিক ছিলেন । প্রকৃতপক্ষে, তিনি ইজালা সম্প্রদায়ের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। আমরা প্রাইমারি বোর্ড কোয়ার্টারে একসাথে নামায পড়তাম এবং তাফসিরে অংশগ্রহণ করতাম । তিনি নবীর বিরুদ্ধে কোনো অপ্রিয় কথা বলতে পারেন না । তার হত্যার পিছনে অবশ্যই অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে, কারণ তিনি গরুর অন্ত্র বিক্রির ব্যবসায় খুব জনপ্রিয় ছিলেন এবং তার অনেক প্রতিপক্ষরা তাকে ঈর্ষান্বিত ছিল ।’
প্রসঙ্গত,নাইজেরিয়ায় ধর্মনিন্দার নামে নৃশংসভাবে পিটিয়ে মারস একটি নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছে । গত বছর(২০২২) ১২ মার্চ সোকোটো রাজ্যের একটি ক্যাথলিক চার্চে ইসলামপন্থীদের দ্বারা আক্রমণ করা হয়েছিল । পরের দিন (১৩ মার্চ) ২০ বছর বয়সী খ্রিস্টান কলেজ পড়ুয়া ডেবোরা ইয়াকুবুকে(Deborah Yakubu) তার সহপাঠীরা ধর্মনিন্দার নামে পাথর ছুড়ে কাহিল করে । পরে তাকে জীবন্ত পুড়িয়ে দেয় । এখানেও কট্টরপন্থী ইসলামী পড়ুয়ারা নৃশংস কাজ করার সময় “আল্লাহু আকবর” বলে চিৎকার করতে থাকে এবং হত্যাকাণ্ডের ভিডিও করে তা সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল করে দেয় ।।